গতকাল ২৯ শে ডিসেম্বর সোমবার থেকে শুরু হল সংসদের শীতকালীন অধিবেশন, চলবে ২৩শে ডিসেম্বর পর্যন্ত। অধিবেশন শুরুর প্রথম দিনেই গর্জে উঠতে পারে কংগ্রেস। প্রথা অনুযায়ী, যেকোনো অধিবেশন শুরুর প্রথম দিনে সংসদে প্রবেশের আগে দেশের প্রধান মন্ত্রী সাংবাদিকদের সামনে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন, এই দিনও তার অন্যথা হয়নি। প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন এই অধিবেশনের গুরুত্ব অনেক বেশি, বিরোধীদের সবরকম প্রশ্নের উত্তর দিতে প্রস্তুত সরকার। তার পাশাপাশি সংসদের সকল সদস্যকে কোভিদ বিধি মেনে চলার পরামর্শ দেন প্রধান মন্ত্রী। অধিবেশন শুরুর আগে সকালে প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাকি সিনিয়ার ক্যাবিনেট সদস্যদের সাথে বৈঠক করে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং, কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজনাথ সিং, সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ যশী এবং বাণিজ্য মন্ত্রী পীযুশ গোয়েল।
অধিবেশন শুরুর প্রথম দিনেই মোদী সরকার কৃষি বিল ফেরত নেওয়ার বিল পেশ করবে বলে জানা গিয়েছে, বিল পেশ করবেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার। তবে কৃষি আইন সামনে আসার সাথে সাথে বিরোধী এমএসপি আইন তৈরির দাবি তুলতে পারে বলে মনে করছেন সাংসদদের একাংশ। ২৩শে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় এক মাস ধরে চলা এই অধিবেশনে সরকার প্রায় ৩০ টির কাছাকাছি বিল পাশ করতে পারে বলে জানা গিয়েছে। কৃষি বিল ছাড়াও এই অধিবেশনে আর এক গুরুত্বপূর্ণ দিক হতে চলেছে ক্রিপ্টোকারেন্সির ওপর নিয়ন্ত্রন বিল। সরকার আগেই ক্রিপ্টোকারেন্সির ওপর বিভিন্ন রকম নিষেধাজ্ঞা এবং ক্রিপ্টোর ওপর কর বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এই বিলের মাধ্যমে সরকার প্রাইভেট ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ এবং আরবিআইকে ডিজিটাল মুদ্রা ব্যাবহারে অনুমতি দিতে পারে। এর সাথে রয়েছে সংশোধিত নারকটির ড্রাগ সংক্রান্ত বিল, সাথে আছে দিল্লি স্পেশাল পুলিশ এস্টাবলিশ অ্যামেডমেন্ট বিল এবং সেন্ট্রাল ভিজিলান্স কমিশন অ্যামেডমেন্ট বিল। এছাড়া থাকতে চলেছে বিদ্যুৎ, ব্যাঙ্কিং, পেনশন, স্বাস্থ্য এবং আরও আর্থিক সংক্রান্ত বিল। তবে শীতকালীন অধিবেশনের মূল কেন্দ্রবিন্দুই কিন্তু কৃষি আইন।
বিধানসভা নির্বাচনের আগেই পাঁচ রাজ্যে আসন পাওয়ার জন্য কৃষি আইন প্রত্যাহার করেছিল কেন্দ্র সরকার, এছাড়া পেট্রোপণ্য থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রির মুল্য বৃদ্ধির সাথে আরও একাধিক বিষয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হবে কংগ্রেস।
গত রবিবার অর্থাৎ শীতকালীন অধিবেশন শুরুর আগের দিন কেন্দ্র সর্বদল বৈঠক ডাকে, সেই বৈঠকে বাকি সমস্ত রাজনৈতিক দলের সাথে অংশ নেয় তৃণমূল কংগ্রেস, তবে এই দিন কেন্দ্রের ডাকা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না স্বয়ং দলের সুপ্রিম প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, যা নিয়ে বিরোধীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা যাচ্ছে। কংগ্রেস সাংসদ মল্লিকার্জুন খাগড়ে এদিন বৈঠকের পরে বলেন, “প্রধান মন্ত্রীর উপস্থিতি আমরা আশা করেছিলাম, আমরা তার কাছে কৃষি আইন সম্বন্ধিত প্রশ্ন করার কথা ভেবেছিলাম”। অধিবেশন শুরুর আগেই বিজেপি এবং কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে লোকসভা ও বিধানসভার সমস্ত সাংসদদের উপস্থিত থাকার কথা বলা হয়েছে।