উত্থান পতনের মুখে মফস্বলের সিনেমা হল/ প্রেক্ষাগৃহ গুলি, ক্রমশ সিনেমা হলের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হচ্ছে

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

বিনোদনের একটি অন্যতম মাধ্যম হলো সিনেমা। আর সিনেমা দেখার আসল রোমাঞ্চ জাগে যখন  সিনেমা হলে গিয়ে বড় পর্দায় সিনেমা দেখা হয়। ছোটবেলায় বাবা মায়ের হাত ধরে পরে স্কুল কলেজে পড়ার সময় বন্ধুদের সাথে সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখা এটা ছিল একটা অন্যতম ব্যাপার। বড় পর্দা ভীষণ আকর্ষক লাগতো তবে ধীরে ধীরে সিনেমা হলের ঐতিহ্যটা নিম্নমুখী হয়ে পড়ছে আর সেই সূত্রেই মালদাতে যখন চারিদিকে মল আর ফাস্টফুড চেইনগুলোর বাজার রমরমা সেখানে এই সিনেমা হলের অবস্থা শোচনীয়। এইসব সিনেমা হল গুলির প্রভাব ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে মালদা জেলার মতো মফঃস্বল অঞ্চলে। অন্যদিকে কোন মাল্টিপ্লেক্সও না থাকায় সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখার প্রবণতা‌ কমছে। বর্তমানে বেড়েছে ইন্টারনেটে নেটের মাধ্যমে সিনেমা দেখার প্রবণতা, তার ফলে এইসব ছোট ছোট সিঙ্গেল স্ক্রিন  সিনেমা হল গুলিতে সিনেমা দেখেন এমন দর্শকদের সংখ্যা ক্রমশ নিম্নমুখী হয়ে পড়ছে। আগে দেখা যেত বিভিন্ন সময়, বিভিন্ন উৎসবের সময় সিনেমা মুক্তি পেত যা মানুষেরা দলবেঁধে বন্ধুদের সাথে এবং পরিবারের সাথে দেখতে যেতেন। শুরুর দিকে মালদা শহরে মোট চারটি সিনেমা হল ছিল। যার মধ্যে একটি  প্রায় দশ বছর এবং আরেকটি প্রায় বছর পাঁচেক আগে বন্ধ হয়ে গিয়েছে।বর্তমানে মালদা জেলায় মাত্র দুটি সিনেমা হল চলমান অবস্থায় রয়েছে তার মধ্যে একটি রূপকথা সিনেমা হল এবং অপরটি নবীন সিনেমা হল। তবে ইদানিং কালে সিনেমা হলের প্রভাব অনেকটাই কমে গিয়েছে । তার কারণ রয়েছে অনেক গুলোই তবে তার মূল কারণ মনে হয় যুগের সাথে তাল মিলিয়ে সিনেমা হলে প্রযুক্তি ও পরিকাঠামোর পরিবর্তন না ঘটানো। এছাড়াও  অন্যান্য শহরের মাল্টিপ্লেক্সের সাথে এই সিনেমা হল গুলির পার্থক্য আকাশ-পাতালের  যেখানে মাল্টিপ্লেক্স গুলোতে শীততাপ নিয়ন্ত্রণ করা হয় ব্যবহার করা হয় খুব ভালো সাউন্ড সিস্টেম, স্ক্রিন গুলো হয় উন্নত মানের বসার সিট গুলিতে থাকে পুশ ব্যাক ।সেখানে এই নবীন এবং রূপকথার মত সিনেমা হল গুলির স্ক্রিন থেকে  শুরু করে সাউন্ড সিস্টেম সবই খুব নিম্নমানের এবং যেখানে বসার সিট গুলির অবস্থা শোচনীয় এবং চোখে পড়ে চারিদিকের অপরিচ্ছন্নতা ।


বর্তমানে রূপকথা সিনেমা হলের কিছুটা অংশে শীততাপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা থাকলেও তা হলো ১০০ শতাংশের ২০ শতাংশ বাকি ৮০ শতাংশ রয়েছে সেই আগের অবস্থাতে ।তাছাড়া এইসব সিনেমা হল গুলির টিকিটের মূল্য বড় বড় মাল্টিপ্লেক্সের থেকে বেশ অনেকটাই কম হলেও এই সিনেমা হল গুলিতে পরিবারের সঙ্গে অনেকেই যেতে পছন্দ করেন না । কিন্তু অল্প বয়সী কিছু সিনেমা প্রেমী ছেলেমেয়ের অবশ্য  সিনেমা মুক্তি পাওয়ার দুই এক দিন ভিড় করে সিনেমা দেখে।  এই মাল্টিপ্লেক্সের যুগে মালদায় সিনেমা দেখার কালচার ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। মানুষ এখন সিনেমা হল ছেড়ে বিভিন্ন ওটিটি  প্লাটফর্ম যেমন নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন প্রাইম, হইচই, হটস্টার এবং বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে নিজেদের বিনোদন খুঁজে নিয়েছে।এই অনলাইন ওটিটি প্ল্যাটফর্ম গুলি কম খরচে অনেক সিনেমা এবং ওয়েব সিরিজ দেখার সুযোগ করে দিচ্ছে ফলে মানুষ এইসব ওটিটি প্লাটফর্ম গুলির ওপর আসক্ত হয়ে পড়ছে। এই আসক্তি শুরু হয় করোনা কালের প্রথম থেকেই। করোনা কালে বন্ধ হয়ে  গিয়েছিল সিনেমা হল আর সেই সময় আমরা আরো বেশি আসক্ত হয়ে যাই এইসব ওটিটি প্লাটফর্ম গুলির ওপর আর আর তারপর যখন আমরা করোনা থেকে একটু রেহাই পাই তখন এইসব সিঙ্গেল স্ক্রিন সিনেমা হল এবং মাল্টিপ্লেক্স গুলির অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়ে তার কারণ হচ্ছে এতদিনে আমাদের অভ্যাসটা ওটিটি প্লাটফর্মের ওপর নির্ভর হয়ে পড়েছে। আর করোনা পরিস্থিতি এখনো কাটিয়ে উঠতে পারিনি তাই অনেকেই সেফলি বাড়িতে বসে এই ওটিজি প্লাটফর্ম গুলোতে সিনেমা এবং ওয়েব সিরিজ দেখতে পছন্দ করছেন কিন্তু সিনেমা দেখার আসল মজাটা সিনেমা হলেই হয়। ফলত চিরাচরিত্র এই সিঙ্গেল স্ক্রিন সিনেমা হল গুলির একটি বড় অংশ ক্ষতির মুখে পড়ছে এবং কিছু কিছু সিনেমা হল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এই অনলাইন প্লাটফর্ম এবং মাল্টিপ্লেক্স গুলির সামনে না টিকতে পেরে ।

#Source: online/Digital/Social Media News   # Representative Image

Journalist Name : Madhu Sudhan Halder

Related News