বর্তমানে
জ্বালানি তেলের দাম সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে অনেক রাজ্যেই, তার মধ্যেই রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। গত মাসে কেন্দ্রীয়
সরকার পেট্রো পণ্যের ওপর কর ছাড় দিয়েছে,
কিন্তু তাতেও সুরাহা হয়নি মধ্যবিত্তের। পকেটে টান পড়ছে লাগাতার। অনেকে তো পড়শি রাজ্য
চলে যাচ্ছেন তেল আনতে কেউ বা যাচ্ছেন ভুটান।
শুধু যানবাহনেই নয়, টান পড়েছে আমজনতার রান্না ঘরেও। রান্নার গ্যাস হাজার ছুই ছুই। এদিকে জ্বালানি তেলের দামের জন্য বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিষে হাত দিলেই ছেঁকা খাচ্ছে মানুষ, মুল্য বৃদ্ধি ঘটেছে শাক সবজি বাজারেও। তবে পেট্রল ডিজেল শুধু যে আমজনতার পকেটে
টান দিয়েছে তা কিন্তু নয়,
পরিবেশ দূষণ কিন্তু সব সময় করেছে।
পরিবেশ দূষণ বন্ধে তৎপর হয়েছে কেন্দ্র সরকার, আসতে আসতে রেলের বৈদ্যুতিকরণ করছে ভারতীয় রেল যাতে ডিজেল ইঞ্জিন থেকে নির্গত বিষাক্ত গ্যাস পরিবেশের ক্ষতি করতে না পারে। ইতিমধ্যেই
সেই কাজ অনেকখানি এগিয়েও গেছে। সরকারের লক্ষ্য আগামী কিছু বছরের মধ্যেই দেশের প্রায় সিংহভাগ রেলপথ দূষণ মুক্ত এবং আধুনিক করা। তবে বিদ্যুৎ চালিত রেল ইঞ্জিনের পাশাপাশি বায়ো ডিজেল চালিত ইঞ্জিন নিয়েও পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। শুধু যে রেল পথেই
শেষ নয়, রেলের পাশাপাশি কেন্দ্রের পাখির চোখ এখন যে কোনো ধরনের
যানবাহনে পেট্রল বা ডিজেলের ব্যাবহার
কম করা। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন গাড়ি নির্মাতা সংস্থা ব্যাটারি চালিত বা সিএনজি চালিত
গাড়ি প্রস্তুত করতে শুরু করেও দিয়েছে, এমনকি বাজারে নেমেও পড়েছে তাদের দূষণ বিহীন গাড়ি।
কেন্দ্রের সাথে সাথে এই কাজে পিছিয়ে নেই পশ্চিমবঙ্গও। সিএনজি শুধু যে পরিবেশ বান্ধব তাই নয়, সিএনজি লক্ষ্য রাখবে আমজনতার পকেটেও। বর্তমানে যেখানে পেট্রল ডিজেলের দাম আকাশ ছোঁয়া, সেখানে সিএনজির দাম তুলনামুলক ভাবে অনেকটাই কম। বঙ্গে সিএনজি চালিত বাস চালু হয়েছে বেশ কিছু দিন আগেই বেশ ভালোই ফল করেছে তারা। যদিও রাজ্যে সিএনজি আনার ভাবনা অনেক পুরনো। ২০০৫ সালে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সিএনজি সংস্থা গেল এর সাথে আলোচনা করেছিলেন কিন্তু তেমন কিছু লাভ হয়নি। তবে বর্তমান শাসক দল এই ব্যাপারে উদ্যোগী ছিল বরাবরই তার ফলেই রাজ্যের হাতে আসে সিএনজি। দক্ষিণ কোলকাতাই ইতিমধ্যেই ২টি সিএনজি ষ্টেশন চালু করেছে রাজ্য সরকার। এছাড়া দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জেলাই প্রাকৃতিক গ্যাসের ষ্টেশন চালু হয়েছে বেশ কিছু দিন আগেই। তবে মানুষের আগ্রহ এবং সিএনজি বিক্রি বাড়াতে বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিএনজি সংস্থাগুলি। আগামী বছর মার্চের মধ্যেই আরও ৬০ টি সিএনজি ফিলিং পাম্প তৈরির পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে তারা। উত্তরপ্রদেশ থেকে হলদিয়া পর্যন্ত প্রাকৃতিক গ্যাসের পাইপ লাইন বসানোর কাজও শুরু করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা গেল এবং তা বর্তমানে দুর্গাপুর পর্যন্ত এসে পৌঁছেছে। হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম, ইন্ডিয়ান অয়েলের মতো বড় বড় কম্পানি বিভিন্ন জেলাই তরল গ্যাস পোঁছে দেবার বরাত পেয়েছে আগেই। গেলের তৈরি পাইপ লাইন পুরোপুরি তৈরি হয়ে গেলেই তার মাধ্যেই তরল গ্যাসের যোগান দেবে সংস্থা। কলকাতাই আরও ৪টি সিএনজি পাম্প চালু করেছে বিজিসিএল। আগামী বছর উত্তরবঙ্গেও পৌঁছে যাবে সিএনজি পাম্প। আপাতত নদিয়া, হুগলি, পূর্ব ও পশ্চিন বর্ধমান হাওড়াতেও তৈরি হবে পাম্প। সংস্থা সুত্রে বলা হয়েছে এখনই ১০ হাজার কেজি মতো গ্যাস তারা দিতে তৈরি পাইপ লাইন ছাড়াই। এছাড়া কসবা, বেলগাছিয়া, ব্যান্ডেল, আলিপুরেও তৈরি হবে সিএনজি ফিলিং ষ্টেশন।