সাইবার
হানা আমজনতার জন্য রোজকার ব্যাপার, কখনও ব্যাঙ্ক থেকে চলে যাচ্ছে লক্ষ্যাধিক টাকা কখনও বা টুইটার বা
ফেসবুক অ্যাকাউন্টে হানা দিচ্ছে হ্যাকাররা। কখনও খবরের হেড লাইনে স্থান পেয়েছে কোন মন্ত্রী বা সাংসদের সোশ্যাল
মিডিয়া অ্যাকাউন্ট হ্যাক। কিন্ত আজ যা ঘটলো
তা নিতান্তই ছোট ঘটনা নয়। রবিবার রাত ২টো ১১ মিনিট নাগাদ
হ্যাক হয়েছিল স্বয়ং প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর টুইটার অ্যাকাউন্ট। ভারতের মতো সার্বভৌমত্তের দেশে যেখানে প্রধান মন্ত্রী সবার ওপরে বিরাজ করেন জনগনের ভালোমন্দ দেখার দায়িত্ব তারই কাঁধে, সেখানে তার নিজের অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়া খুব স্বাভাবিক ভাবেই জনগনের কাছে চিন্তার ব্যাপার। কয়েক মিনিটের জন্য প্রধান মন্ত্রীর অ্যাকাউন্ট চলে যায় অন্য কারোর নিয়ন্ত্রণে। শুধু হ্যাক নয়, রীতিমত টুইট করা হল অ্যাকাউন্ট থেকে।
লেখা হল “দেশে
বৈধতা পাচ্ছে বিট কয়েন। প্রায় ৫০০ বিট কয়েন কিনবে ভারত সরকার, শুধু তাই নয় সেই বিট
কয়েন ভাগ করে দেওয়া হবে দেশবাসীকে”। রবিবার সকালে
ভারতবাসী জাগতেই রীতিমত হৈচৈ পরে যায়, কিন্তু কিছুক্ষন পরেই ঘটনার সত্যতা সামনে আসে। জানা যায় প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর টুইটার অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা হয়েছিল।
কিছুক্ষণের
মধ্যেই টুইট মুছে ফেলে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়, তারা স্বীকার করে নেই সমস্যার কথা। সমস্যা সমাধান হয়ে গেছে বলে জানাই প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়। টুইটার কতৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে পিএমও। কেন্দ্রের তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রালয় এই বিষয়টি খতিয়ে
দেখছে বলে জানা যায়। তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের
অধিনস্ত ইন্ডিয়ান কম্পিউটার এমারজেন্সি রেসপন্স টিমকে তদন্তের ভার দেওয়া হয়েছে। তবে এই প্রথম নয়,
এর আগে ২০২০ সালে প্রধানমন্ত্রীর টুইটার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছিল, আর তখনও ক্রিপ্টো
কারেন্সি নিয়ে বেশ কিছু ভুয়ো তথ্য প্রকাশ করা হয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে। সেখানে দেশবাসীর উদ্যেশ্যে প্রধানমন্ত্রী রিলিফ ফান্ডে অনুদানের আর্জি
জানানো হয়েছিল এবং বলা হয়েছিল ক্রিপ্টো কারেন্সি ভারতে চালু হতে চলেছে। টুইট এর কিছুক্ষন পরেই
পিএমও তরফ থেকে জানানো হয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছে। খোদ প্রধানমন্ত্রীর অ্যাকাউন্ট বারবার হ্যাক হয়াই প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। আঙ্গুল উঠেছে দেশের সাইবার নিরাপত্তার দিকেও। কিছুদিন আগেই পেগেসাস নজর কেড়েছিল সবার, যার হাত থেকে রেহাই পাইনি অনেকেই। আর এবার প্রধানমন্ত্রী
নরেন্দ্র মোদী। টুইটার কতৃপক্ষের তরফ থেকে থেকে জানানো হয়, তারা প্রধানমন্ত্রীর অ্যাকাউন্টের দিকে নজর রেখেছে, কোন রকম সন্দেহ জনক গতিবিধি দেখা গেলেই তাদের কর্মীরা পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। তদন্তে জানা গেছে টুইটারের অভ্যন্তরীণ সিস্টেম ব্যাবহার না করেই এই
হ্যাক করা হয়েছিল, সুতরাং এটা বলাই যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অ্যাকাউন্টকেই নিশানা করেছিল হ্যাকাররা।