ভারতীয় ফুটবল প্লেয়ার এখন অটো ড্রাইভার !!

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে কাতারে ফুটবল বিশ্বকাপ।ভারত এই খেলার অংশ না হলেও ভারতে এই খেলার দর্শকের খামতি নেই।আবার ভারতীয় ভক্ত দের মধ্যে বিভাজন ও রয়েছে। এ টি কে মোহনবাগান বনাম ইস্ট বেঙ্গল এর মত এখন ব্রাজিল বনাম আর্জেন্টিনা।দুই দলের ভক্ত দের মধ্যে মাঝে মাঝে তর্ক বিতর্ক ও দেখা যায়।আবার তারা তাদের পছন্দের দলের জার্সি কেনে।এমনকি ব্রাজিল আর্জেন্টিনা এর পতাকায় ভরে গেছে শহরের অলি গলি।খেলা দেখার জন্য রাত জাগা,পাড়ার মোড়ে বড়ো স্ক্রিন এ সবাই মিলে খেলা দেখা আর গোল হলেই উচ্ছাসে ফেটে পড়া সবকিছুই চলছে প্রতিনিয়ত।তবে এইসব আনন্দ,জয় পরাজয় এর গ্লানি ও তিরঙ্গা এর জন্য নয়।ভারতের ফুটবলার রা কোথায়? কি তাদের অবস্থা? এসব জানার অবকাশ হয়তো বা ভারতীয়দের ই নেই।জানলে অবাক হবেন এমন ই একজন বাংলার ফুটবলার অটো চালিয়ে দিনযাপন করেন।কোনোভাবে দু বেলার খাবার জোগাড় করেন।ভারতকে বিশ্বকাপের মুখ ও দেখিয়েছিল সে।খেলা হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে।বিষয়টা খুব অদ্ভুত ঠেকছে না? ভারত তো কখনো বিশ্বকাপ খেলেইনি।

সালটা ছিল ২০১০।সেই বছর গৃহহীনদের জন্য বিশ্বকাপ ফুটবলের ( Homeless World Cup) এর আয়োজন করা হয়েছিল।খেলা হয় ব্রাজিলে।ভারতীয় দলে একমাত্র বাঙালি খেলোয়াড় ছিলেন অরিন্দম।তিনি ছিলেন গোলরক্ষক এর ভূমিকায়।কঠিন হাতে গোলপোস্ট এর দিকে ধেয়ে আসা বিভিন্ন দেশের খেলোয়াড় দের গোল আটকান তিনি।


খেলে ফিরে আসার পর তার বাড়ির সামনে ভিড় জমাতো বহু লোক।সুনীল ছেত্রি এর সাথে একই মঞ্চে সম্বর্ধনা ও পান তিনি।

তবে এসব এখন সব কিছুই স্মৃতি ।উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রাম এর বাসিন্দা অরিন্দম ঘোষাল ,ভারতের প্রাক্তন ফুটবলার এখন অটো চালিয়ে সংসার চালান।তাতে কোনরকমে দু মুঠো খাবারের ব্যাবস্থা হয়।বিশ্বকাপ খেলে আসার পর ও ফুটবল খেলা জোরকদমে চালাতেন তিনি।তিনি ইস্টবেঙ্গল জুনিয়র,এফ সি আই ,রাজস্থান এর হয়েও খেলেছেন।তবে তারপর ২০১২ সালে খেলতে গিয়ে ডান পায়ে গুরুতর চোট পান তিনি।হাঁটুর মালাইচাকি ভেঙ্গে তিন টুকরো হয়ে যায়।অপারেশন করা হয়।আট মাস হাঁটাচলা করাও বন্ধ ছিল।তারপর থেকে আর ভালোভাবে খেলতে পারেন না তিনি। মনোবল আগের থেকে অনেক কমে গেছে।তার এই কঠিন সময়ে পাশে এসে কেউ দাড়ান নি।এই কষ্টই করে কুরে খেয়েছে তাকে।অভিমানে ভারতের জার্সি , বুট লোক কে দিয়ে দিয়েছেন।এখন হতে শুধু পড়ে রয়েছে ভিসা আর ব্রাজিল থেকে পাওয়া সার্টিফিকেট। 

তবে ফুটবল ই তার জীবনের প্রথম ভালোবাসা।তাই খেলা কখনো ছাড়েন নি।অটো চালানোর মাঝে সময় বের করে খেলা প্রাক্টিস করেন।পেট চালাতে স্থানীয় কিছু জায়গায় ফুটবল ও খেলেন তিনি।তিনি জানান," বিদেশে খেলোয়াড় দের জন্য কত কিছু সুবিধা রয়েছে।আমাদের দেশের হাজার হাজার খেলোয়াড় এর সপ্ন ভেঙ্গে যায়।রোজ দু মুঠো খাবার ই জোগাড় হয়না আমাদের।"

একটা চাকরি থাকলে হয়তো খুব সুবিধে হতো।তবে দেশের জন্য খেলে এসে একটা চাকরি তো দুর,সাহায্যের জন্য ও একটা ও মানুষ পাননি অরিন্দম।তিনি বলেন মধ্যমগ্রামের বিধায়ক তথা রাজ্যের বর্তমান খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষের সহায়তায় একটি রুটে অটো চালানো শুরু করেন ।তারপর থেকে এভাবেই চলছে জীবন।।

Journalist Name : Srimita Sasmal

Related News