#PRAVATI SANGBAD DIGITAL DESK:
ছবি- শ্রীমতী
অভিনয় – স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, সোহম চক্রবর্তী, খেয়া চট্টোপাধ্যায়, তৃণা সাহা, বরখা , দেবযানী বসু, দেবযানী চট্টোপাধ্যায়
পরিচালনায় – অর্জুন দত্ত
স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় ও শোভন চক্রবর্তী অভিনীত 'শ্রীমতী' মুক্তি পেয়েছে ২০২২ সালের 8 জুলাই ।এই প্রথম একসঙ্গে কাজ করছেন স্বস্তিকা ও সোহম। পরিচালনার পাশাপাশি ছবির গল্প ও চিত্রনাট্য লিখেছেন অর্জুন নিজেই। স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় 'শ্রীমতী' চরিত্রে এবং সোহম চক্রবর্তী, তার স্বামী- অনিন্দ্যর চরিত্রে অভিনয় করছেন ছবিতে।
একটি মিষ্টি পারিবারিক গল্প 'শ্রীমতী'। এক উচ্চ মধ্যবিত্তের সরল মজাদার প্রেমের গল্প ।কিছুটা অগোছালো গৃহবধূ 'শ্রী', তার স্বামীর প্রেমে মগ্ন। সে ভালোবাসে ল্যাদ খেতে এবং গুছিয়ে সংসার করতে। শ্রী-এর পরিবার অর্থাৎ তার স্বামী অনিন্দ্য, ছেলে কুট্টুস, শাশুড়ি মা প্রতিমা, ননদ বৃষ্টি এবং তাদের পরিচারিকা কাজল তার প্রতিদিনের সাপোর্ট। কলেজ থেকে প্রেম ছিল শ্রী- অনিন্দ্যর। স্বামী বয়সে ছোট হলেও দু'জনের দারুণ বন্ডিং, খুনসুটি চলতেই থাকে সারাক্ষণ। রান্না করতে ভালবাসে শ্রী।জনৈক রেবাদির দেওয়া রেসিপি নিয়ে বাড়িতে নিত্যনতুন খাবারের পদ বানিয়ে স্বামী অনিন্দ্য, ননদ বৃষ্টি, শাশুড়িদের মজিয়ে রাখে শ্রীমতী। ইন্ডিয়ান, চাইনিজ, কন্টিনেন্টাল, মেক্সিকান, জাপানিজ, ইতালিয়ান বা ফিউশন সমস্ত ধরনের কুইজিনের রান্নাই তাঁর কাছে জলভাত। তার ডান হাত কাজের মেয়ে কাজলও পরিবারের একজন। আর শ্রীমতির ছায়াসঙ্গী। পারফেক্ট রাঁধুনী হতে গিয়ে নিজের দিকে নজর দিতে পারে না শ্রী । সেই জন্যই হয়ত লাস্যময়ী মল্লিকার সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে না সে। হঠাৎই স্বামীর অফিসের বস এবং তাঁর অত্যাধুনিক তরুণী স্ত্রী মল্লিকার উপস্থিতি সুখের সংসারের তাল কাটে। শ্রীর জীবন একেবারেই বদলে যায় যখন সে নিজেকে অন্যের সঙ্গে তুলনা করতে শুরু করে। শাশুড়ি এবং ননদের পরামর্শে বাহ্যিক রূপের দিকে নজর দেয় সে। ননদ বৃষ্টি চায় বউদিকেও মল্লিকার মতো সাজে পোশাকে, শরীরী চেহারায় ‘আধুনিক’ করে তুলতে। অনিচ্ছা সত্বেও শ্রীমতী জিমের ক্লাসে ভরতি হয়, শিখতে শুরু করে নাচ। গাবলু গুবলু চেহারার শ্রীমতীকে ‘৩৬-২৪-৩৬ ফিগারে’ আনতেই হবে, এটা ননদ বৃষ্টির জেদ । যে রান্নাঘরকে সে এতদিন ভালোবাসতো , কিন্তু আর সেখানে যাওয়া হয় না তার। হাজারো ব্যস্ততার মাঝেও যে রেবাদির সঙ্গে ফোনে রোজ কথা হতো, তার শরীর খারাপ হয়েছে শুনেও একবার ফোন করা হয়ে ওঠে না শ্রীর। শ্রী নিজেকে নিয়ে এতটাই ব্যস্ত হয়ে পড়ে যে নিজের স্বামী অনিন্দ্যর অভিমান ভাঙানোর সময়টুকু তার কাছে নেই । নিজের মধ্যেই একটু একটু করে হারিয়ে যেতে শুরু করে শ্রী।এর পরেই আসে গল্পে টুইস্ট মৃত্যু হয় শ্রীর -এর কাছের মানুষর রেবাদির ।রেবাদির মৃত্যুতে আরও ভেঙে পড়ে শ্রী। তবে চলে গিয়েও হারিয়ে যাওয়া শ্রীকে আবারও ভালোবাসার কাছে ফিরে আসার পথ দেখিয়েছেন তিনি।
আসলে প্রত্যেকে নিজের মতো করে সুন্দর ও স্বাভাবিক। আরোপিত সৌন্দর্য কোনও কাজের নয়।এই সারসত্যটি নিয়েই অর্জুন ছবিকে সাজিয়েছেন কিছুটা কমেডির মোড়ক দিয়ে। রোজকার জীবনের মধ্যে থেকেই খুঁজে নিয়েছেন ছোট ছোট আনন্দ, বিষাদ ও মন ভাঙার ঘটনাকে।শ্রীমতী’ কোনও স্বপ্ন ভাঙার গল্প নয়, পুরো সংসারের এক সাময়িক সার্বিক বিপর্যয় ও তা থেকে উত্তরণের কাহিনিও বটে।
ছবিতে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের অভিনয় নিখুঁত। সোহম চক্রবর্তীও তার সঙ্গে সমান তালে তাল মিলিয়ে অভিনয় করেছেন।চিত্রনাট্যের ছোটখাটো খামতি ঢাকা পড়েছে তাদের স্বচ্ছন্দ অভিনয়ে।ননদ বৃষ্টির ভূমিকায় তৃণা সাহা, শাশুড়ির ভূমিকায় দেবযানী বসু ভালো । জিম ট্রেনারের ভূমিকায় উদয় প্রতাপ সিং এর অভিনয় বেশ ভালো । শ্রীমতীর ছায়াসঙ্গী কাজলের চরিত্রে খেয়া চট্টোপাধ্যায় কিন্তু অসাধারণ ।ছবির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন দেবযানী চট্টোপাধ্যায় তার অভিনয়ও বেশ ভালো ছিল।অর্জুনের আগের দু’টো ছবির তুলনায় ‘শ্রীমতী’ অনেক বেশি লঘু, হালকা মেজাজের। তাই ছবির তৈরিতেও শুরু থেকেই স্ল্যাপস্টিক কমেডির ধারা বজায় রাখা হয়েছে।
Journalist Name : Susmita Das