#Pravati Sangbad Digital Desk:
ছবি – দ্য কাশ্মীর ফাইলস
অভিনয় – অনুপম খের, মিঠুন চক্রবর্তী, দর্শন কুমার, পল্লবী যোশী, চিন্ময় মাণ্ডলেকর, প্রকাশ বেলাওয়াড়ি, পুণীত ইসার
পরিচালনায় – বিবেক অগ্নিহোত্রী
ভিন্ন বিষয়ের উপর তৈরি 'দ্য কাশ্মীর ফাইলস' দেখার জন্য উচ্ছ্বসিত ছিলেন দর্শকেরা। ছবি মুক্তি পাওয়ার আগে ট্রেলার দেখে এমনটাই প্রতিক্রিয়া ছিল নেট দুনিয়ায়। আজ ছবি দেখে নেট মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দিলেন দর্শকেরা। ১১ মার্চ, ২০২২ সালে মুক্তি পেয়েছে বিবেক অগ্নিহোত্রী পরিচালিত The Kashmir Files। অভিনয় করেছেন মিঠুন চক্রবর্তী, অনুপম খের, দর্শন কুমার, পল্লবী যোশী, চিন্ময় মান্ডলেকর প্রমুখ। চিত্রনাট্য লিখেছেন বিবেক অগ্নিহোত্রী ও সৌরভ এম পান্ডে। ১৯৯০-এর দশকে যেভাবে কাশ্মীরি হিন্দুদের উপত্যকা ছাড়া করা হয়েছিল, যে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, এই ছবি তারই গল্প বলে। বাস্তবের নিষ্ঠুরতার অভিঘাত কাঁপিয়ে দেয় অন্তরাত্মায়। সবই ঠিক এমনই ছিল সেদিন, এই তথ্যটি স্বস্তি দেয় না দর্শকদের। বিট্টা কারাটা ওরফে ফারুক আহমেদদার আতঙ্ক থেকে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের লড়াই সবটাই প্রতিফলিত The Kashmir Files-এর প্রতিটি দৃশ্যে। ছবির ভিত সরকারি সংগ্রহশালায় বন্দি করে রাখা ‘কাশ্মীর ফাইলস’ নামের বিস্ফোরক নথি।
এই নথির উপর ভিত্তি করেই নানা চরিত্র ও ঘটনা তুলে এনে সিনেমার পর্দায় দেখিয়েছেন পরিচালক। ১৯৯০ সালের পয়লা জানুয়ারি সমগ্র কাশ্মীরে (Kashmir) যে পাঁচ হাজার হিন্দু পণ্ডিত ব্রাহ্মণদের গণহত্যা সংঘটিত হয়েছিল – সেই ‘আজাদি’কামী জেহাদিদের সহিংস স্লোগান ছিল ‘রালিব’, ‘গালিব’ ও ‘চালিব’ যার সোজা সাপটা অর্থ – “জেহাদি হও, না হয় মরো, নইলে কাশ্মীর ছাড়ো।” সরকারি হিসেবে নিহতের সংখ্যা মাত্র দু’হাজার, কিন্তু প্রকৃত সংখ্যা ৫ থেকে ৬ হাজার। ছবিতে দেখানোও হল অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে জেহাদিদের হিংস্র স্লোগান “কাশ্মীর শুধু কাশ্মীরি মুসলমানদের, এখানে থাকতে হলে আজাদিকে সমর্থন করতে হবে, নাহলে কাশ্মীর হবে হিন্দু পুরুষহীন, শুধু হিন্দু মহিলারা থাকবেন। বাড়ি, ঘর জ্বালিয়ে, পুলিশ সেনাদের পোশাক পরে নাদিমার্গে ২৪ জন কাশ্মীরি পণ্ডিতকে জবাই করেছে তথাকথিত জেহাদিরা। বিবেক অত্যন্ত সাহসের সঙ্গেই ঘটনাগুলোর হিংস্রতা ও ভয়াবহ মুহূর্তগুলো ক্যামেরায় তুলে ধরেছেন। ছবির অন্যতম প্রযোজক পল্লবী যোশী বলেছেন, এটা একটা ছোট বাজেটের সিনেমা। ফান্ডিং থেকে রিসার্চ, অনেক ক্ষেত্রেই অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে তাঁদের, এমনকী দাবিও করেছেন, শুটিং-এর শেষ দিনে নাকি ফতোয়া এসেছিল তাঁর ও বিবেকের উপর। পত্রপাঠ প্যাকআপ করে বেরিয়ে আসতে হয়েছিল তাঁদের।
বিরতির ঠিক আগে গাছে গাছে পণ্ডিতদের মৃতদেহ ঝুলিয়ে রাখার মতো নৃশংস দৃশ্য দেখলে কষ্ট হয়, দুঃখ হয়, বিরক্ত লাগে, রাগ হয়।
জেহাদি বিটুর চরিত্রে চিন্ময় মান্ডলেকার, রাধিকার ভূমিকায় পল্লবী যোশী-সহ ছোট-বড় সব চরিত্রের শিল্পীদের কাজ এক কথায় অসাধারণ। এই ছবি স্পষ্ট বার্তা দেয়, বাণিজ্যিক ছকের বাইরে সিনেমার অন্য একটা সামাজিক ভূমিকা আছে, থাকে, থাকা উচিত। বিবেক নিজের বিবেকের বা মানবিকতার ডাকে সাড়া দিয়েই বানিয়েছেন এই সামাজিক দলিল, যেটি শুরুর আগে বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ “ছবির চরিত্র ও ঘটনা সব কাল্পনিক, বাস্তবের সঙ্গে মিল থাকলে সেটা কাকতালীয়” এমন কার্ডটি দেখানো হয়নি।
Journalist Name : Aparna Dutta