চীন-সহ পাঁচ দেশে বেড়েছে করোনা প্রকোপ,সতর্ক ভারত

banner

#PRAVATI SANGBAD DIGITAL DESK:

চীন, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, কোরিয়া, ব্রাজিলে করোনা ব্যাপক হারে ছড়াচ্ছে। তাই এবার আগে থেকেই সতর্ক ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, করোনায় আক্রান্ত প্রতিটি রোগীর দেহ থেকে নেয়া নমুনা বিশেষভাবে পরীক্ষা করে দেখা হবে, কোন ধরনের ভাইরাস ভারতে সক্রিয়। ভাইরাসের রূপবদল হয়েছে কি না। নতুন প্রজাতির ভাইরাসের দেখা পেলেই সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বুধবার নয়াদিল্লিতে করোনা মোকাবেলায় একটি উচ্চ পর্যায়ের পর্যালোচনা বৈঠকে বসেছিলেন দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবীয়।

বৈঠকের পর তিনি টুইটে বলেন, 'করোনা এখনো যায়নি। ' সব রকম পরিস্থিতি মোকাবেলায় ভারত প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, প্রবল গণবিক্ষোভের মুখে পড়ে কিছুদিন আগেই শূন্য কভিডনীতি শিথিল করেছিল চীনের প্রশাসন। তার পরই দেশটিতে হু হু করে বাড়তে থাকে সংক্রমণ, বাড়তে থাকে মৃত্যুর সংখ্যাও। শুধু চীনই নয়, করোনা সংক্রমণ বেড়েছে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিলের মতো দেশগুলোতেও।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব সব রাজ্য সরকারকে চিঠি লিখেছেন। সেখানেই সতর্কতামূলক কী ব্যবস্থা নিতে হবে তা বলেছেন। ভারতে এখন করোনা নিয়ন্ত্রণে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব হলো, ভারতে এখন করোনা রোগীর সংখ্যা তিন হাজার ৪০৮ জন। কিন্তু বিশ্বে এখন ৩৫ লাখ মানুষ প্রতি সপ্তাহে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন।

এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ বলেছেন, চীন-সহ বিভিন্ন দেশে করোনার প্রকোপ হঠাৎ বেড়ে গেছে। এই অবস্থায় আমাদের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রতিটি করোনা রোগীর শরীর থেকে নেয়া নমুনা পরীক্ষা করে দেখতে হবে, কোন প্রজাতির করোনা ভাইরাসে রোগী আক্রান্ত হয়েছেন।

স্বাস্থ্যসচিবের মতে, এই ব্যবস্থা নিতে পারলে নতুন প্রজাতির ভাইরাসের দেখা পেলেই সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হবে। তিনি জানিয়েছেন, ভারত আগের মতো করোনাকে রুখতে পাঁচমুখি কর্মসূচি নিয়ে চলবে। করোনা পরীক্ষা করা হবে, করোনার ভাইরাস পাওয়া গেলে দেখা হবে, আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে কারা এসেছেন, তাদেরও পরীক্ষা হবে। করোনা রোগীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। ভ্যাকসিন চালু থাকবে এবং সবাইকে কোভিড-বিধি মানতে হবে। এখন সপ্তাহে এক হাজার দুইশজন করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। কিন্তু বিশ্বজুড়ে যেহেতু প্রচুর মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন, তাই ভারতকে সতর্ক থাকতে হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

এই বিষয়ে মঙ্গলবার প্রাথমিক সতর্কতা জারি করেছিল দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বুধবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্যের নেতৃত্বে বৈঠক হয়। সেখানে নতুন করে মাস্ক পরা-সহ সাধারণ কোভিড বিধিনিষেধ মানার এবং এইসঙ্গে টিকাদানে জোর দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি লাতিন আমেরিকা ও এশিয়ার কোরিয়া, চিন, জাপানের মতো দেশ থেকে যারা আসছেন তাদের উপর বিশেষ ভাবে নজর রাখতে বলা হচ্ছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের বৈঠকের পর কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী এক বিবৃতি বলেন, কোভিড এখনও যায়নি। সমস্ত ক্ষেত্রে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সারা দেশে কড়া নজারদারি চালানো হচ্ছে। দেশবাসীকে অনুরোধ করছি, মাস্ক পড়ুন এবং কোভিডের ভ্যাকসিন নিন।

বৈঠকে একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের জন্য কোন কোন সাবধানতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়। আসন্ন বড়দিন এবং ইংরেজি নববর্ষ চিন্তায় রেখেছে ভারতের সরকারকে।

দেশের বিভিন্ন শহরে ওই দুই দিন উদ্দাম জনস্রোত কভিডবিধি মানবে না, এটি একপ্রকার ধরে নিয়েই এগোতে চাইছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। এখনই বছর শেষের পার্টি কিংবা বিচিত্রানুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা জারি না হলেও সাবধানে পা ফেলতে চাইছে সরকার। অন্যদিকে দেশের জনগোষ্ঠীর বড় একটি অংশ করোনার বুস্টার ডোজ নেয়নি। তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সরকার।

এদিকে বুধবার বৈঠকে উপস্থিত সবাইকেই মাস্ক পরে থাকতে দেখা গেছে। দেশটিতে কভিডবিধি কার্যকর থাকলেও মাস্ক পরা আর বাধ্যতামূলক নয়। আবারও মাস্ককে বাধ্যতামূলক করা হবে কি না, তা নিয়ে জল্পনা ছড়িয়ে পড়েছে। বুধবার কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে চিঠি দিয়ে ভারত জড়ো যাত্রায় কভিড নীতি অনুসরণের পরামর্শ দিয়েছিলেন ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তা না করা গেলে পদযাত্রা বন্ধ রাখা উচিত বলে চিঠিতে জানান তিনি।


Journalist Name : Sampriti Gole

Related News