শেষের আনন্দে লেগেই থাকে খাওয়া - দাওয়া। আত্মীয় , প্রিয়জন , বন্ধুবান্ধবকে নিয়ে চলতে থাকে উজ্জাপন। আর ভোজনরসিক বাঙালির উজ্জাপণ মানেই সাথে থাকবে বিভিন্ন রকমের খাবার। ২৫ শে ডিসেম্বর , ৩১ শে ডিসেম্বর লম্বা লাইন দেখা যায় রেস্তরাগুলিতে। আবার শীতের মরশুমে কেউ কেউ শুরু করে দেয় পিকনিক। এরফলে ডায়েটের মধ্যে থাকা মানুষদের খাওয়া - দাওয়ায় কিছু পরিবর্তন ঘটে।
প্রয়োজনের তুলনায় ওজন বেড়ে গেলে শুধু দেখতে খারাপ লাগে তা নয় , বিভিন্ন শারীরিক সমস্যাও দেখা দেয়। বাজারে ওজন কমানোর বিভিন্ন ওষুধ পাওয়া যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে , ওজন কমাতে হলে ঘরোয়া উপায়েই করা উচিত। বাজারে বিক্রি হওয়া ওজন কমানোর পণ্যগুলি শরীরের পক্ষে ভালো নয়।
ঘরোয়া উপায়ে ওজন কমানোর চেষ্টা করলে এতে খরচও কম হয় ও কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও হয় না। অনেকের মতে ওজন কমানোর জন্য দরকার সঠিক ডায়েট ও ওয়ার্কআউট রুটিন। এইবপদ্ধতি মেনে চলতে গেলে অনেক পছন্দের খাবার ছেড়ে দিতে হবে। কারণ সেগুলো ওজন বাড়িয়ে দিতে পারে। কিন্তু এর পরিবর্তে এমন কিছু খাবার বেছে নেওয়া ভালো যা খেতেও সুস্বাদু আবার ওজনও বাড়ায় না।
ওজন বাড়লে শারীরিক ক্ষতি হতে পারে। হার্টের অসুখ, টাইপ টু ডায়বেটিসের মতো রোগ দেখা দিতে পারে। তবে বিশেষ করে রাতের খাবারে পরিবর্তন আনা দরকার এবং যত দতাড়াতাড়ি সম্ভব রাতের খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। বাড়িতে থাকলে সহজেই বানিয়ে ফেলা যায় কিছু সুস্বাদু , ওজন কমানো রেসিপি।
১. সাবুদানার খিচুড়ি :
সাবু ওজন কমাতে সাহায্য করে। এই পদটি বানাতে লাগবে এক কাপ সাবুদানা, হাফ কাপ চিনাবাদাম, ২ টেবিল চামচ, ঘি১ চা চামচ, জিরে, ৩ থেকে ৪টে গোটা শুকনো লঙ্কা, ১টি কারি পাতা, এক চা চামচ গুঁড়ো লঙ্কা, ২ চা চামচ সাদা রক সল্ট, এক টেবিল চামচ ধনে পাতা, এক টেবিল চামচ লেবুর রস। একটি পাত্রে ঘি গরম করে তাতে জিরে ফোড়ন দিতে হবে। কারিপাতা ও শুকনো লঙ্কা দিতে হবে। লাল লঙ্কা পুড়ে গেলে তার মধ্যে ধুয়ে রাখা সাবুদানা দিতে হবে। হয়ে গেলে লেবুর রস ও ধনেপাতা ছড়িয়ে দিতে হবে।
২. জুকিনি পাস্তা :
এটি বানাতে লাগবে টেবিল চামচ অলিভ অয়েল, অর্ধেক হলুদ ও অর্ধেক সবুজ জুকিনি, ২টি কাঁচা লঙ্কা, রসুনের ৩ থেকে ৪টে কোয়া, পেঁয়াজকলি৬-৮ , চেরি, টম্যাটো, নুন ও লঙ্কা স্বাদ মত, ২-৩ তুলসি পাতা, ১০০ গ্রাম স্প্যাগেটি। একটি পাত্রে তেল গরম করে তাতে জুকিনি, কাঁচা লঙ্কা ও রসুন দিতে হবে। এবার পেঁয়াজকলি দিতে হবে। নুন লঙ্কা দিয়ে তারপর তুলসি পাতা দিতে হবে। নুন দেওয়া গরম জলে স্প্যাগেটি সেদ্ধ করতে হবে। নরম হয়ে গেলে জুকিনিতে দিতে হবে। এটি ওজন কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
৩. ওটসের ইডলি :
আড়াই কাপ ওটস, হাফ চা চামচ বেকিং সোডা, ৩ চিমটি লবণ, ১ চা চামচ কাঁচা লঙ্কা, ১ চা চামচ হিং, ২ চা চামচ সরষে দানা, আড়াই কাপ সুজি, ৬ টেবিল চামচ মটরশুঁটি। প্রথমে সব সবজি কেটে রাখতে হবে। ওটস ভেজে নিয়ে গুঁড়ো করতে হবে। সুজি ভেজে নিয়ে ওটসের গুঁড়োর সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হবে। কড়াইতে তেল গরম করে তাতে সরষে ফোড়ন দিতে হবে। এর মধ্যে সবজি ও কাঁচা লঙ্কা দিয়ে সতে করতে হবে। ওটসের মিশ্রণ দিতে হবে। নুন, হিং, দইও দিতে হবে। ইডলি ব্যাটার হলে ইডলি প্লেটে রেখে তৈরি করতে হবে।
৪. ডিমের চাট :
৩টি সেদ্ধ ডিম, ১ চা চামচ টম্যাটো চিলি সস, ৩ চা চামচ তেঁতুলের নির্যাস, ১ চা চামচ লেবুর রস, ১ চা চামচ ভাজা জিরে গুঁড়ো, নুন স্বাদমতো, ১টা কাঁচা লঙ্কা, ১টা পেঁয়াজকলি কুচানো। প্রথমে একটি বাটিতে টম্যাটো চিলি সস, তেঁতুলের রস, লেবুর রস, ভাজা জিরের গুঁড়া, সবুজ লঙ্কা এবং নুন মেশাতে হবে। সেদ্ধ ডিম দুটি টুকরো করে কেটে নিতে হবে। ডিমের উপর চাটনি ছড়িয়ে দিতে হবে। পেঁয়াজকলি এবং গরম মশলা ছড়িয়ে পরিবেশন করতে হবে।
৫. ওটস চিলা :
আধ কাপ রোলড ওটস, আধ কাপ মটর, হাফ ইঞ্চি আদা, ২ থেকে ৩টি রসুনের কোয়া, ১ থেকে ২টি কাঁচা লঙ্কা, আধ চা চামচ জোয়ান, এক চিমটে হিং, নুন স্বাদ অনুযায়ী, হাফ চা চামচ ঘি। ওটস ভিজিয়ে রাখতে হবে সারা রাত। মটর সেদ্ধ করতে হবে। আদা, রসুন, কাঁচা লঙ্কা, জোয়ান, হিং ও নুন একসঙ্গে বেটে তার মধ্যে সেদ্ধ মটর দিতে হবে। ভেজা ওটস বেটে নিতে হবে। সব কিছু একসঙ্গে বেটে নিয়ে ব্যাটার বানিয়ে প্যানে ঘি দিয়ে চিলা ভেজে তুলতে হবে।