চুল পড়লে কি করবেন

banner

#Pravati Sangbad digital Desk:

চুল পড়া একটি অত্যন্ত অপ্রীতিকর সমস্যা যেখানে মাথা থেকে (অথবা সম্পূর্ণ দেহ থেকেই) ক্রমশ চুল পড়ে যেতে থাকে। দৈনিক 100 টি পর্যন্ত চুল পড়া খুবই স্বাভাবিক ঘটনা, এই চুলগুলির পরিবর্তে নতুন চুল গজায়। কিন্তু যখন চুল পড়ার হার নতুন চুল বৃদ্ধির তুলনায় বেড়ে যায় তখন সমস্যা দেখা দেয়। পুরুষদের মধ্যে এই সমস্যা প্রায়ই দেখতে পাওয়া যায়। অতিরিক্ত পরিমাণে চুল পড়ার ফলে মাথায় টাক পড়ে যায়। 

আপনার চুল আর ত্বকের স্বাস্থ্যের উপর জিনের গভীর প্রভাব আছে। পুরুষদের ক্ষেত্রে চুল পড়ার হারটা অনেক ক্ষেত্রেই বংশানুক্রমিক হয়। বিরল ক্ষেত্রে মহিলারাও এই সমস্যার শিকার হন। সেক্ষেত্রে খুব বেশি কিছু করার থাকে না, উইগ বা হেয়ার উইভিংয়ের সাহায্য নিয়ে অবশ্য দেখতে পারেন। অ্যালোপেশিয়া এরিয়াটার মতো অটোইমিউন ডিসঅর্ডার থাকলে ডাক্তারের পরামর্শমতো চিকিৎসা করালে তবেই কাজ হবে। থাইরয়েডের সমস্যা থাকলেও চুল পড়ে যায়। তবে সমস্যা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার পর যদি যত্নআত্তি ঠিকমতো করেন, তা হলে চুলের পুরোনো স্বাস্থ্য ফিরে আসতে পারে। সোরিয়াসিস বা ক্রনিক পেট খারাপের সমস্যা থাকলেও কিন্তু চুল পড়তে আরম্ভ করে। সেই সঙ্গে বিশেষ নজর দিতে হবে খাওয়াদাওয়ার ব্যাপারেও, অপুষ্টিতে ভুগলে কোনও ঘরোয়া সমাধানই কাজ করবে না।

রাতে ঘুমানোর সময়ে চুলে নানারকমভাবেই চাপ পড়ে। ঘষা লাগে। চুলে সামান্য হলেও জট পড়ে যায়। বড় চুল হলে সেই সমস্যা হয় আরও বেশি। এরকম নানা সমস্যাতেই আমরা ভুগতে থাকি। তাই সকালে উঠে যদি চুল সেভাবেই রেখে দেন, তাহলে কিন্তু ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে।

চুলের গোড়ায় ধুলো, ময়লা জমে জট পড়ে । পরে চুল আঁচড়াতে গেলে একসঙ্গে অনেক চুল উঠে আসতে পারে। তাই একটু সতর্ক থাকাই ভালো।

ঘুম থেকে উঠে প্রথমে চুল আঁচড়ে নিতে হবে। চুল আঁচড়ানোর সময় খুব চাপ দেবেন না। চুলের মধ্য়ে জোরে জোরে চিরুনি চালাবেন না। এতে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। চুল ভেঙে যেতে পারে বা গোড়া থেকে উঠে আসতে পারে। তাই ধীরে ধীরে প্রথমে আঙুল দিয়ে চুলের জট ছাড়িয়ে নিন।

যদি বড় চুল হয় তবে আঙুল চালিয়ে ধৈর্য্য ধরে চুলের জট ছাড়িয়ে নিতে হবে। তারপর আস্তে আস্তে চিরুনি চালাতে হবে। প্রথমেই জোরে জোরে ব্রাশ চালিয়ে জট ছাড়ানো ঠিক নয়।

নারকেলে উপস্থিত ফ্যাটের কারণে আপনার চুল স্বাস্থ্যের আভায় ঝলমল করবে। নিয়মিত তেল দিয়ে মাসাজ করুন, তবে হালকা হাতে মালিশ করবেন। খুব জোরে ঘষলে বেশি চুল পড়ার আশঙ্কা থাকে। কোরা বা বাটা নারকেল গরমজলে ভিজিয়ে দুধ বের করে নিন, তার পর তা মাথায় লাগিয়ে আধ ঘণ্টা রাখুন। চুলের স্বাস্থ্য বাড়াতে যে প্রোটিন আর পটাশিয়াম একান্ত প্রয়োজন, তারই জোগান দেবে নারকেলের দুধ। সপ্তাহে একদিন করলেই হবে।

চুলের হারিয়ে যাওয়া আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনতে এবং ভিটামিন বি ও প্রোটিনের জোগান বাড়াতে দই, লেবু, মধুর প্যাক আদর্শ। সপ্তাহে একবার শ্যাম্পু করার আগে লাগিয়ে রাখুন, শুকিয়ে গেলে চুল ধুয়ে নেবেন।

অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস চুল পড়ার অন্যতম কারণ। ডিম, দুধ, সামুদ্রিক মাছ ও ভিটামিন-ই যুক্ত খাবার চুলের জন্য খুবই উপকারি। চুল পড়া রোধে মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এবং দুশ্চিন্তামুক্ত থাকা জরুরি। শরীর সুষম খাবার না পেলে ফিডব্যাক কখনোই ভালো দেবে না; বরং তৈরি হতে পারে হরমোনাল ইমব্যালেন্স। তাই চুল সুস্থ রাখতে চাইলে সুস্থ থাকতে হবে ভেতর থেকে।

Journalist Name : Aparna Dutta

Related News