জাদুকর নাকি অক্লান্ত সৈনিক! বেদুইনের দেশে বিশ্বকাপ উঠবে কার হাতে?

banner

#PRAVATI SANGBAD DIGITAL DESK:

লিওনেল মেসি বনাম কিলিয়ান এমবাপে। ফুটবল বিশ্বকাপের ফাইনালে দুই মহাতারকার লড়াই। দুই ফুটবল প্রতিভার লড়াই। কার হাতে উঠবে বিশ্বকাপ। কে জিতবেন গোল্ডেন বুট। কে টুর্নামেন্টের সেরা হবেন! ফাইনালের আগে সেই আলোচনায় উত্তাল ফুটবলবিশ্ব।

আট বছর পর ফের স্বপ্ন ছোঁয়ার হাতছানি লিও মেসি'র সামনে । আধুনিক ফুটবলের ঈশ্বরের ট্রফি ক্যাবিনেটে সব আছে, বিশ্বকাপ ছাড়া । এদিন সেই আক্ষেপ মেটাতে মরিয়া থাকবেন মেসি । অন্যদিকে, মাত্র 19 বছর বয়সেই বিশ্বজয়ের স্বাদ পেয়েছেন । ফ্রান্সের কিলিয়ান এমবাপের কাছে এদিন সেই সংখ্যাটা আরেকটা বাড়ানোর দিকে নজর থাকবে। 
দু'দলেই একাধিক তারকা খেলোয়াড়ের ভিড় । ডি মারিয়া, আলভারেজ কিংবা জিরু, গ্রিজম্যান । নিজেদের দিনে যে কেউ ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন । কিন্তু কাতারের লুসেইল স্টেডিয়ামে মহারণ শুরুর আগে ফোকাসে সেই দুই তারকাই । মেসি এবং এমবাপে । চলতি বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত পাঁচটি করে গোল করে ফেলেছেন দু'জনেই । যদিও গোলমুখী আক্রমণ এবং অ্যাসিস্ট, দু'ক্ষেত্রেই টেক্কা দিয়েছেন মেসি । অন্যদিকে, পরিসংখ্যান বলছে, মাঝমাঠে বল ধরে খেলা এবং ডিফেন্স লাইন-মিডফিল্ডের মাঝে নড়াচড়ায় এগিয়ে রয়েছেন এমবাপে ।

এবার বিশ্বকাপে দুই ফুটবলারই ৫টি করে গোল করেছেন। দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন লিওনেল মেসি। এবার মেসির শরীরী ভাষা বুঝিয়ে দিয়েছে, তিনিই কেন সেরা। প্রথম একাদশে নিয়মিত সুযোগ পাননি ডি মারিয়া ও ডিবালা। ফর্মে ছিলেন না লাউতারো মার্টিনেজের মতো ফুটবলার। তিন সেরা ফুটবলার রিজার্ভ বেঞ্চে। কিন্তু মেসি একাই খেলা তৈরি করেছেন। নিজে গোল করেছেন, করিয়েওছেন। মেসির হাত ধরে তৈরি হয়েছে আর্জেন্টিনার নতুন তারকা আলভারেজ, এঞ্জো ফার্নান্ডেজরা।
অন্যদিকে এমবাপের কাছেও লড়াইটা সোজা ছিল না। গ্রিজম্য়ান ও তাঁর উপরেই অধিকাংশ ম্যাচে গোলের দায়িত্ব ছিল। ফরাসি সমর্থকরা চেয়েছেন, এমবাপে গোল করুন। ফাইনালে মেসির ফুটবল স্কিলের সঙ্গেই মূলত লড়াই তাঁর। ফুটবল বিশ্বের তাবড় তাবড় বিশেষজ্ঞরা এমবাপের উপরেই বাজি ধরছেন। মেসির শেষ ম্যাচে যদি এমবাপে গোল করে ফ্রান্সকে চ্যাম্পিয়ন করতে পারেন, সেটাই হবে ফরাসি ফুটবলারের সবথেকে বড় প্রাপ্তি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিজের খেলাটাই বদলে ফেলেছেন মেসি । প্রথম কোয়ার্টারে মাঠে কার্যত 'মর্নিং ওয়াক' করছেন । মেপে নিচ্ছেন প্রতিপক্ষকে । তারপর হঠাত্‍ করেই আক্রমণ শানাচ্ছেন । তাঁকে জোনাল মার্কিং করেও লাভ হচ্ছে না, কারণ বল পায়েই রাখছেন না আর্জেন্তিনার সর্বোচ্চ গোলদাতা । 2014 বিশ্বকাপে মেসি'কে ডুবিয়েছিলেন গঞ্জালো হিগুয়াইন । অন্যদিকে, চলতি বিশ্বকাপে লউতারো মার্টিনেজে হিগুয়াইনের ছায়া দেখা গেলেও দলকে ভরসা যোগাচ্ছেন জুলিয়ান আলভারেজ । তাঁর কনভার্শন রেট স্বস্তি দিচ্ছে মেসি'কেও ।
অন্যদিকে, ফরাসিদের বড় ভরসা এমবাপের ছিলে-ছেঁড়া দৌড় । যা কার্যত প্রতিপক্ষ ডিফেন্সকে নাড়িয়ে দেয় । চলতি বিশ্বকাপে শুধু নিজে ফিনিশ করছেন না, সতীর্থদের ঠিকানা লেখা পাসও বাড়াচ্ছেন । যা ফরাসি তারকার ধার আরও বাড়িয়ে তুলেছে ।
মেসি-এমবাপে ছাড়াও অ্যাটাকিং থার্ডে দু'দলের ভরসা আলভারেজ-জিরু । দু'জনেই ইতিমধ্যে 4টি করে গোল করেছেন । এদিন লিও-কিলিয়ানকে টপকে গোল্ডেন বুটের দাবিদার হতে পারেন তারাও । মাঝমাঠে ফ্রান্সের ভরসা গ্রিজম্যান । পোগবা-কন্তের জায়গা একাই পূরণ করে দিয়েছেন ফরাসি তারকা । অন্যদিকে, শোনা যাচ্ছে এদিন শুরু থেকেই মাঠে নামবেন দি মারিয়া । ফিট অবস্থায় পাওয়ার ফাইনালে জন্যই তাঁকে সেমি'তে নামাননি স্কালোনি । তিনি থাকলে শুধু মিডফিল্ড-ই নয়, ফিনিশের ক্ষেত্রেও ভরসা পাবে দল । বড় ম্যাচ প্লেয়ার বলা হয় মারিয়াকে । কোপা ফাইনাল কিংবা ফাইনালিসিমায় তাঁর পারফর্ম্যান্সেই বাজিমাত করেছিল অ্যালবেসেলেস্তা । ফলে তিনি মাঠে থাকলে চাপে থাকবে প্রতিপক্ষ ।

Journalist Name : Sampriti Gole

Related News