'সিটি অব জয়'-এর মন জয় করল 'জয়ল্যান্ড', চলচ্চিত্র উৎসবে দুই পড়শি দেশের ছবিকে কুর্নিশ জানালেন কলকাতার সিনেপ্রেমীরা

banner

#PRAVATI SANGBAD DIGITAL DESK:

মঙ্গলবার সকাল থেকেই নন্দনে ভিড় কম। তবে বিকেল গড়াতেই ভাঙল ভুল। নন্দনের মূল ভবনের সামনে সিনেপ্রেমীদের দীর্ঘ লাইন শিশির মঞ্চ অতিক্রম করেছে। ‘হাওয়া’ তো আর দেখানো হচ্ছে না। তা হলে? আসলে নন্দন ১-এ বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ দেখানো হবে পাকিস্তানের বিতর্কিত ছবি ‘জয়ল্যান্ড’। শুধু বাংলা সিনেমা নয়, ভাল ছবির পাশে দাঁড়াতে বাঙালির যে কোনও আপত্তি নেই, তা যেন আরও এক বার প্রমাণ করল ২৮তম কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসব। 

সকাল থেকেই বেশ বোঝা যাচ্ছিল যে ভারতের চিরশত্রু বলে আখ্যা দেওয়া হয় যে দেশকে, সেই দেশের ছবি জয়ল্যান্ড দেখতে ব্যাপক ভিড় হবে। সেদিন নন্দন চত্বরে আলোচনায় কেবল একটা মাত্রই নাম ছিল, জয়ল্যান্ড। এরপর লম্বা লাইন পড়ে যায় এই ছবি দেখার জন্য।

ভিড়ের চাপে একটা সময় নন্দনের মেটাল ডিটেক্টর কাঁপতে শুরু করে। বাধ্য হয়ে থামিয়ে দেওয়া হয় দর্শকদের প্রবেশ। কিন্তু থামিয়ে দেব বললেই কি দেওয়া যায়? সকলে যে এই ছবির টানেই ছুটে এসেছেন। তাই ফের পরিস্থিতি সামলে নিয়ে দর্শকদের প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়। দর্শক সংখ্যা ছাপিয়ে যায় এদিন আসন সংখ্যার তুলনায় অনেকেই মাটিতে বসে দেখলেন ছবি। যাঁরা সেই সুযোগও পেলেন না তাঁরা দাঁড়িয়েই দেখলেন। কিন্তু তারপর যে আর হলে লোক ধরার বিন্দুমাত্র জায়গা ছিল না। দরজা দেওয়া যাচ্ছে না হলের। তখন বাধ্য হয়ে দর্শকদের অনুরোধ করা হয় ফিরে যেতে। 

কলকাতা পুলিশকে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয় বেগতিক দেখে। লাইন তখনও শিশির মঞ্চ পার করে গিয়েছে। তবে যাঁরা এদিন ছবিটি দেখতে পাননি তাঁরা অনুরোধ করেন যেন ছবিটিকে আরও একদিন দেখানো হয়। 

চলতি বছরে কান চলচ্চিত্র উৎসবে বিশেষ জুরি সম্মান ছিনিয়ে নেয় সাঈম সাদিক পরিচালিত ‘জয়ল্যান্ড’। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারী স্বাধীনতার পাশাপাশি রূপান্তরকামীদের অধিকারের স্বপক্ষে কথা বলে এই ছবি। পাকিস্তানের হয়ে ছবিটি আগামী বছর অস্কারে সেরা আন্তর্জাতিক ছবি বিভাগে লড়বে। মজার বিষয়, অস্কারে মনোনীত হওয়ার পরেও পাকিস্তানে কিন্তু ছবিটির প্রদর্শনের উপর নেমে এসেছে নিষেধাজ্ঞা।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি কলকাতায় আয়োজিত চতুর্থ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসবে চঞ্চল চৌধুরী অভিনীত বাংলাদেশের ‘হাওয়া’ ছবিটি দেখার উৎসাহের কথা এখনও মনে আছে অনেকের। কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের দ্বিতীয় দিন নন্দনে ছবিটি প্রদর্শনের সময়েও একই পরিস্থিতি তৈরি হয়। 

মঙ্গলবার ‘জয়ল্যান্ড’ ঘিরে দর্শকদের উৎসাহ নন্দনে আসা অনেককেই ফিরিয়ে নিয়ে গেল ‘হাওয়া’-র নস্ট্যালজিয়ায়।

উৎসবে মাস্টার ক্লাসে মঙ্গলবার অংশ নেন বর্ষীয়ান পরিচালক সাজি এন কারুন। পরিচালক অতনু ঘোষের সঞ্চালনায় আলোচনার বিষয় ছিল ‘দৃশ্যকল্প এবং চলমান চিত্রমালা’। দুপুরে সৌকর্য ঘোষাল পরিচালিত ‘ওসিডি’ ছবির সাংবাদিক সম্মেলনে যোগ দেন জয়া আহসান। সন্ধ্যায় সিনে আড্ডার বিষয় ছিল ‘হাস্যকৌতুক কী শারীরিক ভঙ্গিমা না টাইমিং’। নন্দনে সুইৎজ়ারল্যান্ডের ছবি ‘নেবারস’ দেখার জন্যও দর্শকের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। 

এদিন রাজ চক্রবর্তী, কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উত্‍সবের চেয়ারম্যান সকলের সঙ্গে বসেই এই ছবি দেখেন। তাঁর কেমন লেগেছে ছবিটা জিজ্ঞেস করায় তিনি জানালেন, 'অসাধারণ ছবি।'

Journalist Name : Sampriti Gole

Related News