ক্যারিয়ার উইথ উদ্ভিদবিজ্ঞান

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

উদ্ভিদ মানেই গাছপালা, সারা পৃথিবীতে এ রকম একটা ধারণা আছে। ঠিক তা নয়। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান—এই তিনটির জন্যই আমাদের উদ্ভিদের ওপর নির্ভর করতে হয়। মানুষ সৃষ্টির আগে এই পৃথিবীতে উদ্ভিদের সৃষ্টি হয়েছে। সেখান থেকে মানুষের বসবাসের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ার পরই মানুষ সৃষ্টি হয়েছে। যে উদ্ভিদ আমাদের সব দেয়, জীবন রক্ষা করে, যে পরিবেশে আমরা বেঁচে আছি তার ভারসাম্য রক্ষার জন্য আমরা উদ্ভিদের ওপরেই নির্ভরশীল। দেশের জনসংখ্যা স্বাধীনতার পর দ্বিগুণের বেশি হয়েছে। এরপরও সবধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করে আমাদের বড় ধরনের দুর্ভিক্ষ, খাদ্যাভাবের মধ্যে পড়তে হয়নি। কারণ এজন্য কাজ করছেন কয়েক হাজার কৃষিবিদ, উদ্ভাবক ও কৃষক।

মানুষের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান ও চিকিৎসা এইসব মৌলিক প্রয়োজন মেটাতে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে জীববিজ্ঞানের যে শাখাটি, তা হলও উদ্ভিদবিজ্ঞান। বিজ্ঞানের শাখা হিসেবে উদ্ভিদ গবেষণায় এই বিভাগের গুরুত্ব অন্যতম। একটি কৃষি প্রধান দেশ হিসেবে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া বাংলাদেশের জন্য যেমন একটি বড় চ্যালেঞ্জ, তেমনি বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের মত রূঢ় বাস্তবতায় এটা দিনদিন আরও কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এমনই এক পরিস্থিতিতে উদ্ভিদবিজ্ঞানের মত মৌলিক বিষয়ে গবেষণা ও উচ্চতর অধ্যয়ন বাংলাদেশের জন্য অতএব প্রয়োজনীয়।

শস্য উৎপাদন, অ্যাগ্রোস্টলজি, ইকোনমিক বোটানি, হর্টিকালচার, লাইকেনোলজি, মাইকোলজি, অর্কিটোলজি, ফ্যানোলজি, প্লান্ট বায়োটেকনোলজি, জিনোম এডিটিং, বন, ফুড কোম্পানি, সিড ব্যাংকের মতো আরও অনেক ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে, আরও হবে। 

কী পড়বো, কোথায় পড়বো?

মাইক্রোবায়োলজি, বায়োকেমিস্ট্রি, প্ল্যান্ট ব্রিডিং, বায়োটেকনোলজি এন্ড প্ল্যান্ট জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, সাইটোজেনেটিক্স, ইকোলজি এন্ড এনভায়রনমেন্ট, লিমনোলজি অর ওয়াটার বায়োলজি, ফাইকোলজি, ট্যাক্সোনমি, প্ল্যান্ট প্যাথলজি, প্ল্যান্ট ফিজিওলজি এমনই কতগুলো বিষয়ের সমষ্টি হচ্ছে বোটানি তথা উদ্ভিদবিজ্ঞান।

উদ্ভিদবিজ্ঞানের সুবিধা হলও উচ্চতর ক্ষেত্রে এর যেকোনটি বিষয় নিয়েই কাজ করার সুযোগ থাকে। আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর এই উন্নয়নশীল দেশে প্রাকৃতিক সম্পদের সঠিক ও যুগোপযোগী ব্যবহার দেশের অর্থনীতি ও পরিবেশের জন্য খুবই জরুরি।

তাছাড়া দেশের প্রায় সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিষয়ে স্নাতক সম্মান, মাস্টার্স, এম ফিল ও পিএইচডি করার সুযোগ আছে। এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সবগুলো কলেজে এই বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করার সুযোগ আছে। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিজ্ঞান ও জীববিজ্ঞান ইউনিটের অধীনে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। ইন্টারমিডিয়েটে জীববিজ্ঞান বিষয় পাঠ্যতালিকায় থাকা বাধ্যতামূলক। এম,এস; এম ফিল, পিএইচডিতে এসব বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণা করানো হয়। এবং দেশসেরা গবেষকদের সাথে রিসার্চ পেপার প্রকাশের সুযোগও থাকে এখানে।

এছাড়াও বিদেশে এই বিষয়ে পড়ে গবেষণার বড় সুযোগ আছে। উদ্ভিদবিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে স্কলারশিপ নিয়ে ইউরোপ, আমেরিকার বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে পিএইচডি সহ উচ্চতর গবেষণার সুযোগ। নিম্নোক্ত বিষয়গুলোতে রয়েছে উচ্চতর পড়াশোনা ও গবেষণার সুযোগ-

১। মাইক্রোবায়োলজি

২। বায়োকেমিস্ট্রি

৩। প্যান্ট ব্রিডিং

৪। বায়োটেকনোলজি এন্ড প্ল্যান্ট জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং

৫। সাইটোজেনেটিক্স

৬। ইকোলজি এন্ড এনভায়রনমেন্ট

৭। লিমনোলজি অর ওয়াটার বায়োলজি

৮। ফাইকোলজি

আপনি যদি বোটানি নিয়ে অনার্স পড়েন তাহলে আপনি চাইলে বিভিন্ন বৃক্ষ চিকিৎসা বা হ্যাচারি,মৎস উৎপাদন,খামার কোম্পানির ল্যাবরেটরিতে জব পেতে পারেন। বোটানি নিয়ে পড়ে জব মার্কেট বর্তমানে বেশি প্রতিযোগিতাপূর্ন। তবে ক্যামিস্ট্রির ক্যারিয়ার বোটানি থেকে তুলনামূলক ভালো। বোটানি নিয়ে অনার্স মাস্টার্স করে সরকারি বা প্রাইভেট ব্যাংকেও অনেকেই জব করা যায়। প্রানীবিদ্যা নিয়ে অনার্স ও মাস্টার্স করার পর আপনি বিভিন্ন গাছপালা বা প্রানী গবেষনা,মৎস উৎপাদন,খামাড় কোম্পানির সাইটে চোখ রাখুন। তারা বিভিন্ন সময় তাদের কোম্পানিতে বোটানি থেকে অনার্স করা ক্যান্ডিডেট নিয়োগ দেয়। তখন সেখানে বোটানির স্টুডেন্ট হিসেবে আপনি অবশ্যই অগ্রাধিকার পাবেন। তবে এই নিয়োগ খুব কম ক্ষেত্রে হয়।

Journalist Name : Aparna Dutta

Related News