নরমপন্থী ও চরমপন্থী এবার মিলে মিশে এক, ‘গান্ধী গডসে: এক যুদ্ধ’-এর ট্রেলারে ধরা পড়ল কোন টুইস্ট

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

একেই গত বছর থেকে বিবেক অগ্নিহোত্রী পরিচালিত 'দ্য কাশ্মীর ফাইলস' প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে তৈরী ছবি শোরগোল ফেলে দিয়েছে চারিদিকে। 'দ্য কাশ্মীর ফাইলস'-র পর এবার নরমপন্থী গান্ধী ও চরমপন্থী গডসের মতাদর্শ বড়পর্দায়।

গত কয়েকমাস ধরেই বলিউড জুড়ে হিন্দুত্ববাদের ছায়া। তবেএবার সেই ছায়া আরও বাড়িয়ে পরিচালক রাজকুমার সন্তোষী হাজির তার নতুন ছবি 'গান্ধী-গডসে এক যুদ্ধ' নিয়ে। প্রকাশ্যে ছবির ট্রেলার। ট্রেলারেই স্পষ্ট নরমপন্থী গান্ধী ও চরমপন্থী গডসের মতাদর্শের ভিন্নতা। কথাতেই বলে ইতিহাস ফেরে বারবার।মহাত্মা গান্ধী এই মানুষটা ইতিহাসের পাতা থেকে টাকার উপরে সর্বত্রই তার ছোঁয়া রয়ে গিয়েছে। কিন্তু কজন জানে নরমপন্থী মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে চরমপন্থী নাথুরাম গডসের মতাদর্শগতির লড়াইয়ের কথা? কিন্তু সেই লড়াই কিন্তু ইতিহাসের পাতার উল্লেখ্যযোগ্য বিষয় ছিল সর্বদাই। সেই নরমপন্থী মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে চরমপন্থী নাথুরাম গডসের মতাদর্শগত লড়াইয়ের কাহিনী বলবে 'গান্ধী-গডসে এক যুদ্ধ'।

সিনেমার ট্রেইলার প্রকাশিত হয়েছে মঙ্গলবার। গান্ধী চরিত্রটি করেছেন দীপন আন্তানি, আর গডসে হয়ে পর্দায় এসেছেন চিন্ময় মণ্ডেলেকর। সিনমার সংগীত পরিচালনা করেছেন এ আর রহমান। চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি সিনেমাটি মুক্তির কথা রয়েছে। গল্প এগোবে ১৯৪৭-৪৮ সালের মধ্যে মহাত্মা গান্ধী এবং নাথুরাম গডসের মধ্যে মতাদর্শ-গত পার্থক্য নিয়ে। এই ছবিতে একই পর্দায় দেখা যাবে, দীপক আন্তানি, চিন্ময় মন্ডলেকার, আরিফ জাকারিয়া এবং পবন চোপড়া সহ আরও অনেকে।

এই ছবিতে ফুটে উঠেছে দেশের এক টালমাটাল অবস্থার কথা। একদিকে তখন ১৯৪৭ সালের দেশভাগের ভয়াবহতা, অন্যদিকে নতুন নতুন ভাবনা জন্ম নিচ্ছে। ধর্মের কারণে বিভেদ তৈরি হচ্ছে মানুষে মানুষে। চিন্ময় এখানে গডসের ভূমিকায় অভিনয় করবেন। তিনি গান্ধীজির ভাবনার সঙ্গে একদমই সহমত পোষণ করেন না। উল্টে বিরোধিতা করেন। তাই তিনি তবে বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। এবং একই সঙ্গে তিনি বিশ্বাস করেন তখন দেশের যা অবস্থা সেটাকে একমাত্র রোখা যাবে হিংসা দিয়েই। হিংসার বদলে হিংসা নীতিতে বিশ্বাস করেন তিনি, তাই হাতে বন্দুক তুলে নেন।

এই ট্রেলারে ধরা পড়ে ইতিহাসের দুই জ্বলন্ত ব্যক্তিত্বের আলাপচারিতা। সেই মিটিংয়ে তাঁরা কী আলোচনা করেন সেটা উঠে আসে। একই সঙ্গে দেখা যায় নাথুরামের হামলার পর গান্ধীজির মৃত্যু হয় না। তার বদলে দেখা যায়, সেই হামলার পর গান্ধীজি বেঁচে থাকলে পরিস্থিতি কেমন হতো। দেখে যায় একদিকে যখন দেশের টালমাটাল অবস্থা তখনও তাঁরা দুজনে নিজেদের ভাবনাকে নিয়ে লড়ে যাচ্ছেন। সেটা নিয়েই আলোচনা করছেন।

এই ছবির ট্রেলারের একটি দৃশ্যে দেখা যায় কংগ্রেসের মুখ্য নেতা যাঁরা ছিলেন, অর্থাৎ জহরলাল নেহরু, ডক্টর আম্বেদকর, প্রমুখের সঙ্গে দেখা করছেন এবং কংগ্রেস পার্টিটাকে বন্ধ করে দিতে বলছেন। একটা জায়গায় নেহেরুকে বলতে শোনা যায়, 'একদিনেই গডসে তৈরি হওয়া যায়, কিন্তু গান্ধী হতে গেলে গোটা জীবন লেগে যায়।'

ভক্তরা এই ট্রেলার দেখে বাক্যহারা হয়ে গিয়েছেন। তাঁদের সকলেরই এই ছবির ট্রেলার ভীষণ ভালো লেগেছে। ইউটিউবে মুক্তি পেয়েছে এই ছবির ট্রেলার। এক ব্যক্তি এই ট্রেলারে কমেন্ট করে নিজের মতামত জানিয়ে লেখেন, 'গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল। দারুণ ভাবে অনুভূতিগুলোকে তুলে ধরা হয়েছে। রাজকুমার সন্তোষী স্যার দারুণ দক্ষতার সঙ্গে কাজটি করেছেন।' আরেক ব্যক্তি লেখেন, 'একদম, ইতিহাসই সিদ্ধান্ত নেবে।'

এই ছবির মাধ্যমেই বলিউডে পা রাখছেন রাজকুমার সন্তোষীর মেয়ে তানিশা সন্তোষী। ছবিটির প্রযোজনা করেছেন মনিলা সন্তোষী। এ আর রহমানের একটি গান আছে এই ছবিতে। ২০১৩ সালে পরিচালকের শেষ ছবি ‘ফাটা পোস্টার নিকলা হিরো’ মুক্তি পেয়েছিল। তারপর দশ বছরের বিরতি নিয়ে তিনি এই ঐতিহাসিক ছবির হাত ধরে ফিরে এলেন।

Journalist Name : Sampriti Gole

Related News