প্রয়াত এক টাকার চিকিৎসক তুষার রায়

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্নবিত্ত কোনো শ্রেণী ভাগ না করেই দিনের পর দিন অগনিত মানুষের চিকিৎসা করেছেন, সারিয়ে তুলেছেন বহু দুরারোগ্য ব্যাধি মাত্র ১ টাকায়। আজীবন মানুষের সেবার জন্য কাজ করে গেছেন। তমলুক এর বাসিন্দা এই মানুষটির নাম তুষার রায়। গতকাল তিনি ইহলোক ত্যাগ করেছেন। তার প্রয়াণে এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। তমলুক শহরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ড এর টাউন শঙ্করআরার বাসিন্দা তুষার রায়। পাশকুড়া এর বনমালী কলেজ এ দীর্ঘদিন ফিজিক্স বিভাগ এর প্রফেসর এর দায়িত্ব সামলেছেন। তবে পাড়া প্রতিবেশী সহ সমগ্র তমলুক এর মানুষজন তাকে চেনে মানুষরূপী ভগবান হিসেবে, যিনি প্রায় চার দশকের ও বেশি সময় ধরে এক টাকার বিনিময়ে চিকিৎসা করে চলেছেন শত শত মানুষের। তম্রলিপ্ত শহরের বাসিন্দা তুষার রায় এর স্ত্রী গত হয়েছেন দু বছর আগে। একমাত্র ছেলে ও তার পরিবার কে নিয়ে কাজের সূত্রে বাইরে থাকেন। নিঃসঙ্গ জীবন কাটিয়েছেন তুষার বাবু। একাই থাকতেন। শত দরিদ্র মানুষের আকুতি উপেক্ষা করে যেতে পারেননি। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা করতেন তিনি। বাকি টাকা দিয়ে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও চালাতেন তুষার বাবু। এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় দরিদ্র ও মেধাবী ছাত্র ছাত্রীদের বিনামূল্যে পড়াশোনা শেখানো হয়।

তুষার বাবুর মৃত্যুর সময় বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। গত মঙ্গলবার ই তিনি কিছু অসুস্থ বোধ করেন। নিজের অসুস্থতার কথা বুঝতে পেরে নিজেই চিকিৎসা ও করেছিলেন। ওষুধ খেয়েছিলেন। কিছুটা সুস্থ ও বোধ করছিলেন। তবে ফের বুধবার অসুস্থ বোধ করেন। পাড়া প্রতিবেশীরাই তাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করেন। দু ঘন্টা চিকিৎসা চলেছিল তার। তবে শেষরক্ষা হয়নি। বেলা বারোটা নাগাদ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি।তার মৃত্যুতে সমগ্র তমলুক শহরে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। অবসরের পর চিকিৎসা ,সাধারণ নিম্ন বিত্ত ,দরিদ্র মানুষের সহায়তা করাকেই নিজের ধ্যানজ্ঞান করে নিয়েছিলেন তিনি।তাকে শেষবার প্রণাম জানাতে এসে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তার অগনিত ভক্ত। শিক্ষক বাসুদেব দাস বলেন," জীবনভর কর্মযজ্ঞের মাধ্যমে উনি নিজেকে যে উচ্চতায় নিয়ে গেছেন তা আমাদের ধরা ছোঁয়ার বাইরে।" চিকিৎসক বিশ্বনাথ মিশ্র জানান," এমন মানুষ আজকের সমাজে বিরল"।

Journalist Name : Srimita Sasmal

Tags:

Related News