সরস্বতী পুজোর দিনেই কেন কচিকাঁচাদের হাতেখড়ি দেওয়া হয়

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথি। ২০২৩ সালের ২৫ জানুয়ারি ও ২৬ জানুয়ারি তিথি নক্ষত্র মেনে শুক্লা পঞ্চমীতে পালিত হবে সরস্বতী পুজো। দুর্গাপুজো ও দীপাবলির পর সরস্বতী পুজোতে সবচেয়ে মেতে ওঠে বাঙালি। স্কুল, কলেজ-সহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক শিক্ষিকাদের সঙ্গে মিলেমিশে পুজো করে থাকে ছাত্র ছাত্রীরা। সরস্বতী পুজোর সঙ্গে বিশেষ প্রথা বাঙালি সমাজে জড়িয়ে আছে। তা হল হাতেখড়ি। অর্থাত শিশুর প্রথম অক্ষর পরিচয় করানো হয়। মা, বাবা বা পুরোহিত মশাই শিশুর হাত ধরে শ্লেটের উপর ক, খ লেখা শেখান তাকে। এভাবে বাগদেবীর আরাধনা করে, তাঁকে সাক্ষী রেখে শিক্ষার জগতে প্রথম প্রবেশ ঘটে শিশুর। বিদ্যার সুচনা হওয়ার আগে দেবী সরস্বতীর কাছে আশীর্বাদ প্রার্থনা করে হাতেখড়ি দেওয়া হয়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে সরস্বতী পুজোর দিনেই কেন এই হাতে খড়ির আয়োজন করা হয়?

বৈদিক দেবী সরস্বতী জ্ঞানদায়িনী ও সর্বশুক্লা। তিনি বাগ্দেবী, নিষ্কলা, নিত্যশুদ্ধা। তিনি প্রশস্ত বুদ্ধিদায়িনী ও মোক্ষদাত্রী। তবে তিনি বৈদিক দেবী হলেও, যুগ যুগ ধরে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা জ্ঞান, বিদ্যা ও ললিতকলার দেবী হিসেবে তাকে পূজা করে আসছেন পুরাণমতে। তাই সরস্বতী পূজা কবে থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সমাজে প্রচলিত হল, তার সঠিক কোনো ইতিহাস পাওয়া যায় না। একইভাবে সরস্বতী পুজোর দিনে হাতেখড়ি দেওয়ার ইতিহাসও অনেকাংশেই অস্পষ্ট। সরস্বতী পুজোর দিনে তাঁর পূজা-অর্চণা এবং পুষ্পাঞ্জলি প্রদানের পাশাপাশি কোমলমতি শিশুদের হাতেখড়ি দেওয়ার বিষয়টিও সমানভাবে গুরুত্ব পায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে। পুরোহিত মহাশয় শ্লেট ও খড়িকে পবিত্র করেন ও নতুন জামা কাপড় পরে মায়ের সামনে বসিয়ে প্রথম লেখা শেখানো হয়। সন্তানদের বিদ্যার সুচনা হওয়ার আগেই দেবী সরস্বতীর কাছে আশীর্বাদ প্রার্থনা করে হাতেখড়ি দেওয়া হয়। পুরোহিত মহাশয় শ্লেট ও খড়িকে পবিত্র করেন, এরপর নতুন জামা কাপড় পরিহিত জাতক/জাতিকাকে মায়ের সামনে বসিয়ে প্রথম লেখা শেখানো হয়। শুক্লা পঞ্চমী খুব শুভ দিন, শুভ দিনের একটা গুরুত্ব আছে সাফল্যের জন্য।
বস্তুত সরস্বতী পুজোর দিনে হাতেখড়ির অনুষ্ঠানটি একটি লৌকিক আচার। যেহেতু এদিন এই ধরাধামে জ্ঞান, বুদ্ধি, বিদ্যা, সঙ্গীত ও কলার বর নিয়ে বেদ প্রসবিনী দেবী সরস্বতী অধিষ্ঠান করেন, তাই এদিন তাঁর আশির্বাদ নিয়ে শুরু হয় শিক্ষাজীবনের শুভ সূচনা। সন্তানের হাতেখড়ি দিয়ে পিতামাতা দেবীর কাছে প্রার্থনা করেন তাদের সন্তানের শিক্ষাজীবন হোক মসৃন ও সফল। যুগ যুগ ধরে এই মান্যতাকে প্রাধান্য দিয়েই চলে আসছে কচিকাচাদের হাতেখড়ি দেওয়ার অনুষ্ঠান।

Journalist Name : Aparna Dutta

Tags: