'টনিক’-এর পর 'প্রজাপতিতে' ধরা দিল দর্শকের মন ভালো করার ম্যাজিক

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

সিনেমার রিভিউ- প্রজাপতি
অভিনয় -দেব,মিঠুন চক্রবর্তী,শ্বেতা ভট্টাচার্য,মমতা শংকর,খরাজ মুখোপাধ্যায়,কনীনিকা ,পিঙ্কি ব্যানার্জী প্রমুখ 
পরিচালক- অভিজিৎ সেন।
গতবছর অর্থাৎ ২০২২ সালের বড়দিনের আগে ২৩শে ডিসেম্বর রিলিজ করেছে মিঠুন চক্রবর্তী এবং দেব অভিনীত পারিবারিক বাংলা সিনেমা ‘প্রজাপতি’। টনিক’-এর মতো মন ভালো করার ম্যাজিক আরও একবার ধরা দিল দেব ও মিঠুন চক্রবর্তী অভিনীত প্রজাপতি সিনেমাটিতে। দেব’ এবং ‘মিঠুন চক্রবর্তী’র ছাড়াও এখানে অভিনয় করেছেন ‘মমতা শঙ্কর’, ‘অম্বরিশ ভট্টাচার্য’,  কনীনিকা ,‘খরাজ মুখোপাধ্যায়’, ‘শ্বেতা ভট্টাচার্য’, ‘পিঙ্কি ব্যানার্জী’র মতো বহু  দক্ষ অভিনেতা অভিনেত্রী।।  ছবির পরিচালক অভিজিৎ সেন।
মধ্যবিত্ত সংসারে বাবা ও ছেলের রোজকার জীবনের খুনসুঁটি, ভালোবাসা, মান-অভিমান পুরনো বন্ধুত্ব ফিরে পাওয়া, সমাজের প্রচলিত ট্যাবু ভাঙা সমস্ত উপকরণ দিয়ে ভরা এই ছবির চিত্রনাট্যটি। এবার আসি গল্পতে,গল্পতে দেখানো হয়েছে কলকাতার বেশ জনপ্রিয় একজন ওয়েডিং প্ল্যানার হল জয়(দেব)। ছেলেবেলায় তিনি তার মাকে হারিয়েছেন। তাঁর জীবনে বাবা গৌর তার পৃথিবী অর্থাৎ বাবাকে ঘিরেই জয়ের জীবন। যেভাবেই হোক বাবাকে সুখ ও শান্তিতে রাখা জয়ের জীবনের অন্যতম লক্ষ্য। গৌর চায় ছেলের বিয়ে দিতে। ছেলে সুখে শান্তিতে সংসার করুক। কিন্তু ওয়েডিং প্ল্যানার জয় অন্যের চার হাত মিলিয়ে দিয়ে সংসার বাঁধায়, এদিকে নিজের বিয়ের পিঁড়িতে বসার কোনও ইচ্ছে নেই তার। জয়ের ধারণা বিয়ে করলেই বাবা এবং তার মধ্যে দূরত্ব চলে আসবে। তাই সে কিছুতেই বিয়ে করতে রাজি নয়। মিঠুন চক্রবর্তী অর্থাৎ বাবা পাত্রীর সন্ধান শুরু করলেও দেবের অর্থাৎ জয়ের বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই বিয়ে নিয়ে। তাই অফিসের কর্মী মালাকে (শ্বেতা ভট্টাচার্য) নিজের প্রেমিকা বলে পরিচয় দেয় সে। এরই মাঝে আসে গল্পে আরেকটা টুইস্ট। এক সময় গৌরের আচমকা দেখা হয়ে যায় তার পুরনো বন্ধু কুসুমের (মমতা শংকর)সাথে। নিঃসঙ্গ  জীবনে আবাও নতুন টান অনুভব করেন দুজন। ফিরে পাওয়া বন্ধুত্বের এক নিদারুণ গল্পকে দারুণভাবে পরিবেশন করেছেন পরিচালক অভিজিৎ সেন। প্রথমে কুসুম সাড়া না দিলেও, গৌরের একাকীত্বের ডাকে আর নীরব থাকতে পারে না সে,  একটা সময়  সম্মতি দিয়ে ফেলেন সে। অন্যদিকে আবার জয়ও মালার সঙ্গে মেশার পর, ভালোবাসা কতটা মিষ্টি হতে পারে সেটা উপলব্ধি করেন। গল্পে এক সময় যখন সে বিয়ে করতে রাজি হয়, তখন গৌর আবার তাকে জানায় সেও কুসুমকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে জয়ের পায়ের তলার মাটি সরে যাওয়ার মত অবস্থা হয়। লোকলজ্জার ভয়ে সে আরও কঠিন হয়ে যায়। আত্মীয়পরিজন থেকে শুরু করে সমাজ এই ‘সাড়ে চুয়াত্তর” বছরের দুই প্রবীণের মিলনে  বাধা হয়ে দাঁড়ায়। যাই হোক অবশেষে ‘প্রজাপতি’ বসবে কার গায়ে? বাবা নাকি ছেলের ! সেই নিয়েই গল্প  বাক নেয়। চিত্রনাট্যের পরতে পরতে মুখরোচক মজার সংলাপ, ড্রামা-মেলোড্রামায় ভরপুর। পরিচালক বুঝিয়ে দিলেন তিনি দর্শকদের  যেমন হাসাতেও পারেন, তেমনই আবার ইমোশনাল করে ফেলতেও পারেন।

এবার আসি অভিনয়ে,  বলা  বাহুল্য  মিঠুন চক্রবর্তীর  পুরো ছবি জুড়েই দাপিয়ে অভিনয় করে গেছে , তার অভিনয় আগাগোড়ায় অসাধারণ। দেব  জয়ের  চরিত্রে  বেশ ভালো কাজ করেছেন। মিঠুনের সাথে তার সমীকরণ অন্য মাত্রায় নিয়ে গেছে গোটা ছবিটাকে।  মমতা শংকরের কথা আলাদা করে  না বললেই নয়  তার অভিনয় দক্ষতা সম্পর্কে  আমাদের সকলেরই জানা  এই ছবিতে  কুসুমের চরিত্রে তাকে ছাড়া অন্য কাউকে ভাবাই যায় না। মিঠুন এবং মমতা শঙ্করের রসায়ন  দর্শকের দৃষ্টি আকর্ষণ  করেছে।প্রথম ছবি হিসেবে শ্বেতা ভট্টাচার্যের অভিনয় খারাপ নয় ।  অন্যদিকে আবার  কনীনিকা , কৌশানি মুখার্জি, খরাজ মুখার্জি, বিশ্বনাথ বসুও চমৎকার  অভিনয় করেছেন । অন্যদিকে সিনেমায় সংগীত পরিচালনায় ছিলেন ‘রথীজিৎ’, ‘সুরজিৎ’ এবং ‘অনুপম রায়’। সিনেমার প্রতিটি গানই  দর্শকের হৃদয় স্পর্শ  করার মত ছিল ।

Journalist Name : Susmita Das

Tags:

Related News