মেরুসাগরে সবচেয়ে বেশি বরফ গলল ফেব্রুয়ারি মাসে, কী বিপদ আসছে?

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

দক্ষিম মেরুসাগর কি বরফশূন্য হয়ে যাচ্ছে? তেমনটাই পূর্বাভাস দিয়েছেন পরিবেশ বিজ্ঞানীরা। দেখা গেছে, এ বছর ফেব্রুয়ারিতে সবচেয়ে বেশি বরফ গলেছে দক্ষিণ মেরুসাগরে। এমন চলতে থাকলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে মেরুসাগর বরফশূন্য হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা তাঁদের। উপগ্রহচিত্র পর্যালোচনা করে দেখা যাচ্ছে, গত ১২ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ মেরুসাগরের উপর ভেসে থাকা বরফের চাদর ১.৭৯ মিটার স্কোয়ার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ছিল। এত দিন পর্যন্ত ২০২২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সব চেয়ে কম বরফ ছিল মেরুসাগরে। ওই দিন ভাসমান বরফের পরিমাণ ছিল ১.৯২ মিটার স্কোয়ার কিলোমিটার। মেরুপ্রদেশ বরফ গলার পরিমাণ কতটা, তা যাচাই করতে ১৯৭৯ সাল থেকে উপগ্রহচিত্রের মাধ্যমে নজরদারি চালাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। গত শনিবার 'দি গার্ডিয়ান' পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়, দক্ষিণ মেরুসাগরে এত কম পরিমাণ বরফ আগে কখনও ছিল না। বরফ গলার কারণ হিসাবে বিশ্ব উষ্ণায়নকেই দুষছেন বিজ্ঞানীদের একটা বড় অংশ। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ছে। বিজ্ঞানীরা বলেন, ২০৫০ সালের মধ্যে এ উষ্ণতা বৃদ্ধির হার যদি দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখতে না পারি, তাহলে বিশ্বে এমন ওলট–পালট শুরু হবে, যা আর সহজে নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে না। উষ্ণতা বৃদ্ধির হার বলতে বোঝানো হয়, ইউরোপে শিল্পবিপ্লবের সময় বৈশ্বিক গড় উষ্ণতা, যা ছিল তার তুলনায় এখন কতটা বেশি। ২০৫০ সালের মধ্যে যেন দেড় ডিগ্রির মধ্যে ধরে রাখা যায়, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। সব দেশের বা সবার সম্মিলিত উদ্যোগ ছাড়া এটা সম্ভব নয়। কয়লা, তেলসহ জীবাশ্ম জ্বালানি পুড়িয়ে আমরা শিল্পপণ্য উৎপাদন করছি, বিদ্যুৎ উৎপাদন করছি, আর অন্যদিকে ক্রমাগত বন উজাড় হচ্ছে। বাতাসে কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বাড়ছে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ছে। বাতাসের কার্বন ডাই-অক্সাইড তাপ ধরে রাখে বলেই বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বাড়ে। তাই কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনা এখন জরুরি। সৌরবিদ্যুৎ, পানিবিদ্যুৎ, বায়ুবিদ্যুৎ প্রভৃতি নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করে আমরা এটা করতে পারি। সমস্যা হলো, কোনো কোনো ক্ষেত্রে অগ্রগতি থাকলেও কড়াকড়িভাবে কার্বন নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। এখনই বৈশ্বিক গড় উষ্ণতা বৃদ্ধির হার দেড় ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেছে বলে অনেক বিজ্ঞানী হিসাব করে দেখেছেন। তাই সচেতন উদ্যোগ ছাড়া মহাবিপদ। যদি বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির হার নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যর্থ হই, তাহলে ২০৫০ সালের পর ধীরে ধীরে পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব বিপন্ন হতে পারে বলে বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা।

Journalist Name : Sampriti Gole

Tags:

Related News