দুর্ঘটনাস্থলে মোদী – মমতা – রেলমন্ত্রী অশ্বীনী বৈষ্ণব

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

আজ ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বীনী বৈষ্ণবকে পাশে নিয়েই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “করমণ্ডলের অধিকাংশ যাত্রীই পশ্চিমবঙ্গের ছিলেন। এটা একবিংশ শতাব্দীর সবথেকে বড় দুর্ঘটনা। ভাল করে তদন্ত করতে হবে। কিছু একটা তো হয়েছে।” এই ধরনের ঘটনা রেলওয়ের সেফটি কমিশনের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তারাই তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দেয়। 

বালেশ্বর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরের বাহানগা বাজার স্টেশনের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে শালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, একটি মালগাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লাগে ট্রেনটির। দুর্ঘটনার অভিঘাত এতটাই বেশি ছিল যে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন মালগাড়ির উপরে উঠে যায়। ঠিক সেই মুহূর্তে পাশের লাইন দিয়ে আসছিল ডাউন বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। ডাউন লাইনে পড়ে থাকা করমণ্ডল এক্সপ্রেসের লাইনচ্যুত কামরাগুলির উপর এসে পড়ে বেঙ্গালুরু-হাওড়া ডাউন ট্রেনটি। সঙ্গে সঙ্গে হাওড়াগামী সেই ট্রেনটির দু’টি কামরাও লাইনচ্যুত হয়।

মমতার ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় দুর্ঘটনাস্থলে ছিলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। তাঁর সামনেই মমতা বলেন,’মনে হয় রেলের সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। আরও যত্নশীল হওয়া প্রয়োজন।’

দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । শনিবার বিকেল পৌনে ৪টে নাগাদ তাঁর কপ্টার পৌঁছয় ওড়িশার বালেশ্বরে৷ সেখানে দুর্ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন তিনি৷ উদ্ধারকারীদের সঙ্গেও বিশদে কথা বলেন৷ তারপরেই কপ্টারে করে রওনা দেন কটক হাসপাতালের উদ্দেশে৷ বিকেল ৫টা নাগাদ কটক হাসপাতালে পৌঁছন৷ সেখানে চিকিৎসাধীন আহতদের খোঁজখবর নেন। শুক্রবার সন্ধের দুর্ঘটনার পর পরই ট্যুইট করে শোকপ্রকাশ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷


বালেশ্বরে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় বিপাকে পড়া যাত্রীদের সাহায্যার্থে শুক্রবারই কন্ট্রোল রুম খুলেছিল নবান্ন। শনিবার দুপুরে রাজ্য প্রশাসনের তরফে বুলেটিন প্রকাশ করে জানানো হল, দুপুর ১২টা পর্যন্ত বালেশ্বরে মোট ৭০টি অ্যাম্বুল্যান্স পাঠানো হয়েছে। রাজ্য থেকে দুর্ঘটনাস্থলে গিয়েছেন ৩৪ জন চিকিৎসক। আহত যাত্রীদের রাজ্যে ফিরিয়ে আনতে পাঠানো হয়েছে ১০টি বাস। চিকিৎসার সামগ্রী নিয়ে গিয়েছে ২০টি মিনি ট্রাকও।

বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর দু’টি দলকেও ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছে রাজ্য। ট্রেন দুর্ঘটনায় হতাহত যাত্রীদের উদ্ধারকাজে তদারকি করার জন্য রাজ্যের চার জন আইএএস আধিকারিক, চার জন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট এবং এক জন এসিডিপিও বালেশ্বরে গিয়েছেন। 

রেলের তরফ থেকে আগেই জানানো হয়েছে ঘটনায় উচ্চপর্যায়ের তদন্ত হবে। ইতিমধ্যে নিহতদের পরিবার এবং আহতদের জন্য ক্ষতিপূরণও ঘোষণা করা হয়েছে রেলের তরফে। ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারের জন্য ১০ লাখ টাকা, গুরুতর আহতদের জন্য ২ লাখ টাকা এবং অল্প চোটআঘাত প্রাপ্তদের জন্য ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।

বাংলাদেশ হাইকমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে কয়েকটি পরিবার শুক্রবার রাত থেকেই যোগাযোগ করেছেন। এদের মধ্যে দুজনের পরিবার জানাচ্ছে তাঁদের বাড়ির লোক করমণ্ডল এক্সপ্রেসে ছিলেন। চিকিৎসার জন্য চেন্নাই যাচ্ছিলেন। 

আরও দুজনের পরিবার জানাচ্ছে তাদের আত্মীয়রা ওড়িশার কোনও হাসপাতালে ভর্তি। বাংলাদেশ হাইকিশন জানাচ্ছে তারা ভারত সরকারের কাছে তালিকা চেয়েছে। সেই তালিকা না পাওয়া পর্যন্ত কিছু আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলতে পারছেন না তাঁরা।

Journalist Name : প্রিয়শ্রী

Related News