আমরা এখন বড়ই অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন করি। যার ফল ভোগ করতে হয় আমাদের শরীরকে।অনিয়ন্ত্রিত জীবন, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, কর্মব্যস্ততার কারণে শরীরের দিকে খেয়াল না রাখা, অতিরিক্ত মদ্যপান— এগুলিই যদি আধুনিক জীবনের সঙ্গী হয়ে থাকে, তা হলে তার ফল অবশ্যই ফ্যাটি লিভার বা লিভার সিরোসিসের মতো অসুখ। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নিজেদের কিছু বদ অভ্যাস ও ভুলের কারণেই শরীরে বাসা বাঁধে লিভারের অসুখ।
যাঁরা নিয়মিত মদ্যপান করেন, তাঁদের ক্ষেত্রে ফ্যাটি লিভারের সম্ভাবনা অনেক বেশি। অনেকে এমনও আছেন, যাঁরা ইচ্ছা থাকলেও মদ্যপান ছাড়তে পারছেন না। ফ্যাটি লিভারের নির্দিষ্ট কোনও ওষুধ নেই। জীবনশৈলীতে বদল এনেই এই রোগের সঙ্গে মোকাবিলা করতে হয়। রোগের উপসর্গগুলি জানা থাকলে আগেভাগেই সতর্ক হওয়া যায়।
ফ্যাটি লিভার ডিজিজের বেশিরভাগ মানুষ টেস্ট করান না। সেক্ষেত্রে উপসর্গ জেনে নেওয়া দরকার। এই অবস্থায় পেটের উপরের ডানদিকে ব্যথা হয়। পেট ভারী হয়ে থাকে। হজমে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই এর মধ্যে কোনও লক্ষণ নিয়মিত থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অবশ্যই নিতে হবে।
প্রাথমিক অবস্থায় ফ্যাটি লিভারের কোন উপসর্গ দেখা যায় না। কিন্তু এই রোগের যত্ন না নিলে এখান থেকে লিভার সিরোসিসের ঝুঁকি বাড়ে। তাই কোন লক্ষণ দেখে বুঝবেন যে আপনি ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত, চলুন জেনে নেওয়া যাক।
কোনও খাবার না খেয়েও পেটে যদি গ্যাস হয়, পেট ফুলে যায়, তাহলে সতর্ক হয়ে যান। অনেক সময় পাকস্থলীর নীচের অংশে জল জমে পেট ফুলতে থাকে। এটা ফ্যাটি লিভারের লক্ষণ।
পেটের ডান দিকে কিংবা তলপেটে অসহ্য ব্যথা হতে শুরু করলে দ্রুত চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। পেটের ডান দিকে ব্যথা অনেক সময় জন্ডিসের লক্ষণও হয়। তবে, এই সব লক্ষণই ধীরে ধীরে ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।
কীভাবে ফ্যাটি লিভার থেকে লিভারের ড্যামেজ আটকানো যাবে ? এর প্রথম শর্তই হল ওজন কমানো ও লাইফস্টাইল মডিফিকেশন করা। এর প্রথম কয়েকটি ধাপ হল -
ওজন নিয়ন্ত্রণে ফ্যাট ও অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খাওয়া কমিয়ে আনতে হবে।
কম কম খেতে হবে , বারবার খেতে হবে ।
খাবার থেকে মিষ্টি জাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে।
তেল ঘি , মাখন, মার্জারিন, মেয়োনিজ, ইত্যাদি দুগ্ধজাত ফ্যাট গ্রহণ করা যাবে না।
ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
অনেক ওষুধ পাওয়া যায়, যা একসঙ্গে ব্লাড সুগার ও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে।
খারাপ কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমিয়ে এনতে হবে।
Alcoholic fatty liver disease : অতিরিক্ত মদ্যপানের ফলে যে অতিরিক্ত ক্যালরি । শরীরে জমা হয়, তার থেকে লিভার স্থূল হয়ে যায়।লিভারের কোষগুলি অতিরিক্ত ফ্যাটের ভাণ্ডার হয়ে ওঠে।
কার্বোহাইড্রেটের পরিমানও কমিয়ে আনতে হবে। ভাত-রুটি ও ময়দা জাতীয় খাবারের বদলে তরি তরকারি, ডাল, ডিম, মাছ খাওয়া যেতে পারে।