শোনা যাক মৈথিলীর জন্মভূমি পবিত্র মিথিলার কথা

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

পৃথিবীর প্রাচীন মহাকাব্য রামায়নের দেবতা রামপত্নি সীতা দেবীর জন্মস্থান মিথিলা হিন্দুদের পবিত্র তীর্থ হিসাবে বিবেচিত হয়। এই প্রাচীন মিথিলা রাজ্যটি ছিল ভারতের উত্তর বিহারের তিরহুত জেলা ও দক্ষিণ নেপালের কিছুটা অংশ নিয়ে গঠিত। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে অসাধারণ এই মিথিলা। এর উত্তরে হিমালয়, দক্ষিনে গঙ্গা, পূর্বে মহানন্দা, পশ্চিমে গন্দকী নদী অঞ্চলটিকে ঘিরে আছে। এই হিমালয়ের পাদদেশে থাকা তিন নদীবেষ্টিত রাজ্য মিথিলা প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর। এই রাজ্যের প্রধান ভাষা মৈথিলী। শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে নয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের পীঠস্থান এই মিথিলা। এখানকার কবি ছিলেন বিদ্যাপতি। বিদ্যাপতি ছিলেন ধর্মে শৈব। কিন্তু বাংলার মানুষের কাছে তিনি প্রিয় রাধাকৃষ্ণ বিষয়ক পদের জন্য। তাঁর পদে ভরা বাদর মোহ ভাদর শূন্য মন্দির মোর বাংলার অন্তরের গান। কিন্তু মিথিলা রাধাকৃষ্ণের দেশ নয়। মিথিলার অন্তরের সুর রাময়নের নায়িকা সীতার সুর। আদি কবি বাল্মীকির প্রথম শ্লোকের চির বিরহের সুরই ধ্বনিত হয় মিথীলার বাতাসে। এই মিথীলার রাজধানীর নাম ছিল জনকপুর। এই স্থানটি এখন নেপালে অবস্থিত। পুরান মতে, বিদেহ রাজ্য স্থাপন করেছিল রাজা নিমি। রামায়নে বলা আছে, মিথীলায় অজন্মা হলে জনকরাজ শিরধ্বজ অজন্মা কাটাতে গিয়ে সোনার হাল দিয়ে জমি কর্ষিত করতে গিয়ে সোনার সীতাকে পান। জনকরাজ আদরে লালিত করেন সীতাকে।

পরে জনকনন্দিনী সীতার বিবাহ হয় রামের সঙ্গে। আজও মিথিলার সীতাকুণ্ড ও সীতামারি হিন্দুদের পবিত্র তীর্থস্থান হিসাবে পূজিত হয়ে থাকে। কথিত আছে, সীতামারি সীতার জন্মস্থান। এই মিথিলাতেই জন্ম নিয়েছিলেন সাহিত্যিক প্রেমচাঁদ হিন্দি সাহিত্যের বিশিষ্ট লেখক, সি কে রাউত কম্পিউটার বিজ্ঞানী, সুগায়িকা মৈথিলী ঠাকুর প্রথম মহিলা ফাইটার পাইলট ভাবনা কাহ। মিথিলার এই সুযোগ্য সন্তানেরা জন্মভূমির নাম উজ্জ্বল করেছে। মিথিলার অন্যতম অবদান মধুবনী আর্ট; যা নারীদের দ্বারা সৃষ্টি হয়েছিল। এই আর্টের বিষয়বস্তু হিসেবে নির্বাচিত হয়ে থাকে বিবাহ হোলি, উপনয়ন রাম সীতা ইত্যাদি বিষয়। তাই মিথিলা প্রাকৃতিক সম্পদে, সাংস্কৃতিক সম্পদে ও ঐতিহাসিক, পৌরাণিক ঐতিহ্যে ভারতের ইতিহাসে বিশিষ্ট স্থান অধিকার করে নিয়েছে।


Journalist Name : Rakhi Halder

Tags:

Related News