নতুন প্রজন্মকে এটাই বলবো, মানুষের মনের ভিতর ঢুকে তাদের মনটা বুঝতে শেখো-তুষার চ্যাটার্জী

banner

#Exclusive Candid Interview:

মানুষ এখন উন্নয়নেই মত্ত। কি কিছু কি ভুল হলো কথাটা? একদমই নয়। রাস্তা-ঘাটে, গ্রাম বাংলায়, শহর-জেলায়, জনগণ বেজায় খুশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আনা বেশকিছু উন্নয়নমূলক প্রকল্পে। আর এই উনন্নয়ের ফল তো বিধানসভা থেকে শুরু করে আসন্ন পুরভোটে সকলেই সেটা দেখতে পাচ্ছে।
আজ সকাল সকাল প্রভাতী সংবাদের প্রতিনিধি আমি সায়ন্তিকা বিশ্বাস এবং ক্যামেরায় মলয় মাইতি পৌঁছে গেলাম কামারহাটি পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান শ্রী তুষার চ্যাটার্জীর কাছে -

◆◆ "নমস্কার দাদা, আপনার রাজনৈতিক জীবন শুরু কিভাবে হলো?
◆◆ "আমি আগে কংগ্রেস করতাম ছাত্রপরিষদ থেকে। তারপর ১৯৯৮ সালে সিপিএমের সন্ত্রাসকে আটকানোর জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন আন্দোলন শুরু করলেন তখন আমরা বুঝতে পারলাম যে এই সিপিএমের সন্ত্রাস আটকাতে হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শক্ত হয়ে হাল ধরতে হবে। 
◆◆ "আপনার রাজনৈতিক গুরু কে?"
◆◆ " রাজনৈতিক গুরু বলতে গেলে আমি  আমার জীবনে তিনজন মানুষকে নিজের অনুপ্রেরণা হিসেবে বলতে চাই। সর্বপ্রথম ইন্দিরা গান্ধী, তারপর রাজীব গান্ধী, তারপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই তিনজন ব্যক্তিত্ব আমার জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আমার অনুপ্রেরনা হয়েই থাকবে।
◆◆ "আপনি ভাইস চেয়ারম্যান পদে এতদিন থাকাকালীন কি কি উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন?"
◆◆ "ভাইস চেয়ারম্যান পদে থাকাকালীন আমি অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছি। আমাদের সাংসদ শ্রী সৌগত রায় মহাশয়, এবং আমাদের তৎকালীন বিধায়ক আমাদের মন্ত্রী তথা কাছের মানুষ প্রানের মানুষ শ্রী মদন মিত্র মহাশয় আমাদের পাশে সর্বদা ছিলেন, আছেন, এবং থাকবেন, তাই আমাদের উন্নয়ন করতে কোনোরকম কোনো অসুবিধা হয় না। এমনকি, তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ওয়ার্ডে- ওয়ার্ডে, পাড়ায়-পাড়ায়, এলাকায়-এলাকায়, কি ভীষণ রকম উন্নয়ন হয়েছে, তা মানুষ বারবার দেখিয়ে দিচ্ছে এবং বুঝিয়েও দিচ্ছে। কন্যাশ্রী, যুবশ্রী, সবুজ সাথী, স্বাস্থ্য সাথী, লক্ষ্মী ভান্ডারের মতো, হাজার হাজার প্রকল্পের দ্বারা বাংলার মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। তাহলে কেমন উন্নয়ন হচ্ছে সেটা দেখতে পাচ্ছেন তো সবাই।"
◆◆ "আচ্ছা দাদা, আপনি তো ১নং ওয়ার্ডের প্রার্থী হয়েছেন এবং সেখান থেকেও লড়ছেন, নির্বাচনে জিতলে আপনারা কি কি আর উন্নয়ন বা উন্নয়নমূলক কাজ করবেন বলে ভাবছেন?

◆◆ "আমাদের খুবই ইচ্ছে এখানে যে একটি গঙ্গারঘাট আছে খুব সুন্দর সাজানো গোছানো, ঠিক তেমনি এখানে যদি গরিব দুস্থ মানুষদের  জন্য একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তোলা যায় তাহলে খুব ভালো হয়। এখানকার কাছেই একটি হসপিটাল আছে, সাগরদত্ত হসপিটাল। কিন্তু যেসব মানুষেরা খুবই গরিব। অনেকেই এমন আছেন যাদের দু'বেলা দু'মুঠো অন্নের জন্য চোখের জল ফেলতে হয়, এমনকি থাকার জন্য মাথার ওপরে ছাদটুকুও তাদের নেই। তাদের জন্য আমি এই প্রাথমিক হসপিটাল তৈরি করতে চাই এবং ইচ্ছে আছে তাদের জন্য সরকারি আবাসন তৈরি করে দেওয়ার যাতে তারা মাথার ওপর ছাদ পান। এই কাজগুলো যদি করতে পারি তাহলেই বুঝবো আমার রাজনৈতিক জীবন সার্থক হয়েছে। এছাড়াও আমি চাই এখানকার বাড়িঘরগুলি চিহ্নিত করার জন্য বিশেষ নম্বর চিহ্ন ব্যবহারিত করতে। কারণ এখন দেখা যাচ্ছে কারুর বাড়ি খুঁজতে গেলে খুব বড় বিপদে পড়তে হয়, সহজে খুঁজে পাওয়া যায় না। তাই আমার এই পদক্ষেপ।"
◆◆ "নির্বাচনে জেতার বিষয় আপনারা কতটা আশাবাদী?"
◆◆ "খুবই আশাবাদী আমরা। মানুষ আমাদের সময় দিয়েছিল, আমরা সেই সময় কাজ করেছি, উন্নয়ন করেছি, মানুষের উপকার করেছি, সব আপদে-বিপদে তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছি, শপথ নিয়েছিলাম সারাজীবন মানুষের পাশে থেকে তাদের জন্য কাজ করে যাবো, লড়াই করে যাবো, তাই করেছি। এখন মানুষ আমাদের কাজ দেখেছে, বুঝেছে, তারা অন্যায়ের কাছে মাথা নত করে না, তারা উন্নয়ন চাই, উন্নয়ন নিয়েই বাঁচতে চায়।"
◆◆ "কোভিডের সময় রেড-ভোলেনটিয়ার্সরা  অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে এবং সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন। এবং তাদের অভিযোগ এই সময় শাসকদলের কেউ পাশে এসে দাঁড়ায় নি - এই সম্পর্কে কি বলতে চাইবেন?"
◆◆ "এটা খুবই হাস্যকর বিষয় হয়ে দাঁড়ালো। কারণ দেখুন আমি রেড-ভোলেনটিয়ার্সদের বা কোনো রাজনৈতিক দলকে অসম্মান করতে চাইছে না। কিন্তু এটা বলতেই হয় যে এই মহামারিতে আমরা কিন্তু পিছুপা হই নি। প্রত্যেকটা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়ে প্রতিটি বাড়ি বাড়ি ঘুরে মানুষদের চাল, ডাল, সবজি, ওষুধ, আমরা দিয়েছি। এমনকি কোভিড আক্রান্ত মানুষদের প্রতিনিয়ত ওষুধ পরিষেবা, অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌছিয়ে দিয়েছি, কারুর কোনো সমস্যা হলেই দৌড়ে গিয়েছি সেখানে। এই সাথেই বলে রাখি এরই মাঝে আমাদের বহু কর্মী, এবং আমি স্বয়ং নিজে, আমার পরিবারের সদস্যরা বেশ অনেকেই কোভিড আক্রান্ত হয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু তাও বাকি কর্মীদের দ্বারা এই কাজ চালু ছিলও।"
◆◆ "প্রতিপক্ষ হিসেবে কাকে দেখছেন?"
◆◆ "আমি আসলে আমাদের এখানে প্রতিপক্ষ হিসেবে কাউকেই খুঁজে পাই নি। কেউই নেই এখানে আমার প্রতিপক্ষ হিসেবে, কারণ দেখুন প্রতিপক্ষ হতে গেলে কিছুটা সমানে সমানে চলতে হয়, এই পাতি বাংলায় যাকে বলে রেষারেষি থাকতে  হয় একটু। এখানে তো কেউই নেই প্রতিপক্ষ আমার।"
◆◆ "বিরোধীদের অভিযোগ সম্পর্কে কি বলতে চাইবেন?"
◆◆ " ওদের তো অভিযোগ করাটাই স্বভাব। আমি এটাই বলবো বেকার অভিযোগের পিছনে সময় নষ্ট না করে কাজ করুন। চেষ্টা করুন যাতে মানুষের ভালোবাসা আর আশীর্বাদ যদি একটু পেতে পারেন।"
◆◆  "তৃণমূলের সকল পদ অবলুপ্তি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এই বিষয় আপনার কি মতামত?"
◆◆ "দেখুন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হচ্ছেন, এই মাটির মেয়ে। এই মাটিতেই তার জন্ম,এবং তিনি যেমন মাটিকে সম্মান করেন, ভালোবাসেন, ঠিক তেমনই এই মাটিও তাকে সম্মান দিচ্ছে, ভালোবাসা দিচ্ছে। তিনি সেই প্রথমদিন থেকেই যা যা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, খুব ভেবে চিন্তে নিয়েছেন। আমরা তার দলীয় কর্মী, তার সন্তান আমরা, তিনি আমাদের কথা ভেবে যে করবেন তা অবশ্যই ঠিক হবে।"
◆◆ "নতুন প্রজন্মের যারা রাজনীতিতে আস্তে চায় বা আস্তে চলেছে তাদের উদ্দেশ্যে কি বলতে চাইবেন?"
◆◆ "নতুন প্রজন্মকে এটাই বলবো, মানুষের মনের ভিতর ঢুকে তাদের মনটা বুঝতে শেখো, তাদের কাছে গিয়ে পাশে বসে তাদের সমস্যার কথা শোনো, তাহলেই দেখবে রাজনৈতিক সমস্যা বলে আর কিছুই থাকবে না। আমাদের জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব সময় বলেন, মানুষের জন্য কাজ করো, তাদের জন্য নিজেকে উজাড় করে দাও। আমরা মানুষেরা তো মানুষের জন্যই। আমরা যদি একে অপরের দিকে সাহায্যের  হাত বাড়িয়ে না দি তাহলে যে মনুষ্য জন্মটাই বৃথা। তাই আমাদের সর্বপ্রথম দায়িত্ব হলো মানুষের সেবা করা, তাদের পাশে থাকা, তাদের উপকার করা।"

Journalist Name : Sayantika Biswas

Tags:

Related News