ভারতের ভেতরে নতুনগ্রাম তৈরি করেছে চীন। দীর্ঘদিন ধরে অরুণাচল প্রদেশের সীমান্তে চীনের এমন কর্মকাণ্ডের খবর পাওয়া গেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রিপোর্টে। ভারত দাবি করছে, এটি তাদের সীমানার ভেতরে অবস্থিত। তবে মার্কিন রিপোর্টে বলা হচ্ছে, এই ভূখণ্ডের দাবিদার চীনও।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে ভারত দাবি করেছিল, ভারতের আওতাধীন অরুণাচল প্রদেশের উত্তর সুবনসিরি জেলায় চীনের সেনাবাহিনীর সদস্যরা একটি গ্রাম তৈরি করে ফেলেছে। কিন্তু রহস্যজনকভাবে বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসেনি।হয়তো বিষয়টি স্পর্শকাতর বলেই এ মুহুর্তে কেন্দ্র সরকার মুখে কুলুপ এঁটেছে।যদিও বিশস্ত সূত্রের খবর ভারতীয় গোয়েন্দা বিভাগ পুরো বিষয়টি নজরদারী করছে।কিন্তু বিভিন্ন বেসরকারী স্যাটেলাইটে অরুণাচলে নতুন গ্রাম তৈরী হওয়ার চিত্র ধরা পরার পরই চিনের আগ্রাসন ফুটে উঠেছে।সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের বার্ষিক রিপোর্টেও চিনের আগ্রাসেনর কথা উল্লেখ আছে।তারপর ভারত কিছুটা নড়েচড়ে বসেছে বলে সূত্র মারফৎ জানা গেছে।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের রিপোর্টে আশঙ্কা করা হয়, বিষয়টি নিয়ে ভারত-চীনের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হতে পারে। তারা এও দাবী করেছে,২০০৫সালের উল্লিখিত ৭নং ধারা লঙ্ঘন করেছে। রিপোর্টে চীনের সামরিক প্রস্তুতি ও ভূমি আগ্রাসন নিয়ে বিস্তৃত ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই মার্কিন কংগ্রেসে জমা পড়তে যাওয়া সেই রিপোর্টে আরো বলা হয়, চীনের স্বায়ত্বশাসিত তিব্বতের অংশ এবং অরুণাচলের পূর্বাঞ্চলের বিতর্কিত জমিতে গ্রামটি বানানো হয়েছে। ২০২০ সালে তৈরি করা গ্রামটিতে অন্তত ১০০টি বাড়ি রয়েছে।
ওই অঞ্চলে বহুদিন ধরেই চীনের একটি চেকপোস্ট ছিল। এখন সেটি রীতিমতো অসামরিক গ্রাম। বিষয়টিকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরা। তারা দাবি করছেন, ওই এলাকার অবস্থান অরুণাচল প্রদেশ সীমান্তে অন্তত সাড়ে ৪ কিলোমিটার ভেতরে, ভারতীয় ভূখণ্ডে।
২০১৯ সালের ২৬ আগস্ট উপগ্রহ থেকে ওই এলাকার একটি ছবি তোলা হয়েছিল। তাতে দেখা যায়, সেখানে কোনো বসতি ছিলো না। ২০২০ সালের ১ নভেম্বর তোলা আরেকটি ছবিতে দেখা যায়, সেখানে সারি সারি বাড়ি। কয়েক বিলিয়ন ডলার খরচ করে চীন এসব অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বলে দাবি ভারতের।
চলতি বছরের শুরুতে ভারত এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ করেছিল। তবে আন্তর্জাতিকভাবে এর কোনো সুরাহা হয়নি। বেইজিং ভারতের দাবি মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছে। এখন মার্কিন রিপোর্টে বিষয়টি উঠে আসার পর দিল্লি আবার এ নিয়ে সোচ্চার হয়ে উঠেছে।ভারতের সাথে চিনের সম্পর্ক আরো যে অবনতির দিকে এগোচ্ছে তা বলাই বাহুল্য। এমনিতেই ভারত-চিন সম্পর্ক মধুর নয়। ভারতের উপর চিনের এই যে আগ্রাসন নীতি তা ভালো চোখে দেখছে না মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও। এখন দেখার কৃত্রিম উপগ্রহে উঠে আসা চিত্র কতটা সত্য এবং কতটা ভারতের উপর প্রভাব ফেলতে চলেছে। সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের নায়ক, নর্দান কম্যান্ডের প্রাক্তন প্রধান,ভারতীয় সেনা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট দীপক হুডার বলেন ভারতের মাটিতে চীনের আগ্রাসন যদি সত্য বলে প্রমাণিত হয় তাহলে ভারতকে এখনই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে,নাহলে চীন এদের নাগরিকত্বের দাবী জানাতে পারে।
এখন দেখার ভারত এ বিষয়ে কি পদক্ষেপ নিতে চলেছে? তবে একটা বিষয় উঠে আসছে ভারতের মাটিতে চীনের দাদাগিরির তথ্য।