Flash news
    No Flash News Today..!!
Sunday, May 12, 2024

তালেবান ও আফগানিস্তান ইস্যু বিষয়ক দিল্লিতে ভারতের বৈঠক।আমন্ত্রণ খারিজ করলো চীন ও পাকিস্তান

banner

#Delhi:

২০২১ সাল অনুযায়ী তালিবানদের আনুমানিক যোদ্ধা আছে ২,০০,০০০।আর বর্তমানে তাঁরা পুনরায় আফগানিস্তানে।১৯৯৬ থেকে ২০০১ অবধি আফগানিস্তান ৩/৪ অঞ্চল তালিবানি জঙ্গিদের হাতে ছিলো। মূলত ১৯৯৪ সালে আফগান গৃহযুদ্ধের অন্যতম প্রধান দল হিসেবে তালিবানের আবির্ভাব হয়।

২০০১ সালের ডিসেম্বর নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে আফগানিস্থানে আক্রমণের পর তালিবানরা ক্ষমতাচ্যুত না হওয়া পর্যন্ত দেশের অধিকাংশটাই নিয়ন্ত্রণে রেখেছিল।ইতালিয়ান সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছিল পাকিস্তান সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত।


মুসলিম সম্প্রদায় নিয়ে উগ্রতা এবং ধর্মান্ধতা ছাড়াও আরো অনেক নিন্দিত কর্মকাণ্ডে নাম লাল হরফে আছে এদের। গণহত্যার নারীদের প্রতি অত্যাচার নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা হিন্দুদের প্রতি বৈষম্য সাহায্য করবে এবং খ্রিষ্টানদের বিরুদ্ধে সহিংসতা আধুনিক শিক্ষার সীমাবদ্ধ করা সংস্কৃতি নষ্ট করা বিনোদন এবং বিনোদনমূলক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা আরও নানান সুস্থ সামাজিক জীবনকে অস্বাভাবিক প্রমাণ করতে দিনের পর দিন মানুষের ওপর অকথ্য অত্যাচার করা লিস্টের অন্তর্ভুক্ত।

২০০১ সালে তালিবানরা বিধ্বস্ত হওয়ার পর ২০০৬ থেকে শুরু করে ২০১৪ সাল পর্যন্ত নিজেদের নানানরকমভাবে সংগঠিত করতে থাকে।কিন্তু গত ২০২০ সালে ২৯ শে ফেব্রুয়ারি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তালেবানদের একটি শর্তসাপেক্ষ শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করে।চুক্তি অনুযায়ী 14 মাসের জন্য আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করা হবে এবং তার পরিবর্তে "আল-কায়েদাসহ এর কোনো সদস্য, অন্যান্য ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ে এমন কার্যক্রম করার অনুমতি দিন প্রদান করবে না"।


এরই ফাঁকে ২০২১ সালে আগস্টে তালিবান সরকার পুনরায় আফগানিস্তান দখল করে এবং আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি ২০২১ সালের ১৫ই আগস্ট তাজিকিস্তানে পালিয়ে যান এবং তালিবানরা বিজয় ও যুদ্ধ শেষের ঘোষণা করে।ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের 'কস্ট অব ওয়ার প্রজেক্ট' অনুসারে ২০২১ সালের এপ্রিল পর্যন্ত যুদ্ধে আফগানিস্তানে ১,৭১,০০০ জন থেকে ১,৭৪,০০০ জন মানুষের মৃত্যু হয়; যার মধ্যে ৪৭,২৪৫ জন আফগান বেসামরিক নাগরিক, ৬৬,০০০ জন থেকে ৬৯,০০০ জন আফগান সামরিক ব্যক্তি ও পুলিশ এবং কমপক্ষে ৫১,০০০ জন বিরোধী যোদ্ধা রয়েছে।২০০১ সালে আক্রমণের পর ৫.৭ মিলিয়নেরও বেশি প্রাক্তন শরণার্থী আফগানিস্তানে ফিরে এসেছিল। ২০২১ সালের নতুন করে তালেবান আক্রমণের পর থেকে ২.৬ মিলিয়ন আফগান শরণার্থীতে পরিণত হয় বা দেশ থেকে পালিয়ে যায়,যাদের বেশিরভাগ পাকিস্তান ও ইরানে গমন করেন, এবং আরও ৪ মিলিয়ন আফগান ব্যক্তি দেশের মধ্যে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়।

এমতাবস্তায় আফগানিস্তানের এই করুণ দশা দেখে আঞ্চলিক নিরাপত্তার বিষয়ে আলোচনা করতে ফাস্ট বিদেশীর সঙ্গে বৈঠকের আয়োজন করেছিল ভারত। ঠিক তার পরের দিনই এই শুতে পুনর বৈঠকের আয়োজন করেছে পাকিস্তান। কিন্তু এই বৈঠকে যোগ দেয়নি পাকিস্তান ও চীন। চীন জানায় এই সময় তাদের পক্ষে আসা সম্ভব নয় এবং পাকিস্তান জানায় যারা আফগানিস্তানের অবস্থা খারাপ করেছে তারাই এখন এই ধরনের বৈঠক করছে তাই সেইখানে যোগ দেওয়ার প্রশ্ন নেই।


অন্যদিকে রাশিয়া,ইরান, উজবেকিস্তান ,তাজিকিস্তান, কাজাখস্তান, কিরঘিজস্তান তুর্কেমেনিস্তান এবং ভারত সহ আটটি দেশ এই বৈঠকে যোগদান করেছিল। এর আগে রাশিয়ার উদ্যোগে আফগানিস্তানের ইস্যু নিয়ে দুইটি বৈঠক হয়েছে। সেই পথ ধরেই এই উদ্যোগটি নিল।

সাতটি দেশের এনএসপি বা নিরাপত্তা উপদেষ্টা মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে দেখা করেন এবং কথা বলেন। প্রথম থেকেই ভারত বৈঠকের কারন কষ্ট করে দেয়। ভারতে তরফ থেকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল জানান, ''আফগানিস্তানে কিছু ঘটলে তার প্রভাব পুরো অঞ্চলে পড়ে। তাই এই অঞ্চলের দেশগুলির আফগানিস্তান নিয়ে ঘনিষ্ট সহযোগিতা দরকার। এটাই হলো আফগানিস্তান নিয়ে আলোচনা করার জন্য সব চেয়ে ভাল সময়।''


দিল্লি ঘোষণাপত্র

আট দেশ এই বিষয়ে একমত হয়েছে যে, আফগানিস্তানে সার্বভৌমত্ব, স্থায়িত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সম্মান জানানো হবে। তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোনো হস্তক্ষেপ করা হবে না। আফগানদের দুর্দশা নিয়েও চিন্তা প্রকাশ করেছে আট দেশ। সেই সঙ্গে কাবুল, কান্দাহার, কুন্দুজে বিস্ফোরণ ও জঙ্গি হামলার নিন্দা করা হয়েছে। এই অঞ্চলে মাদক পাচার, সন্ত্রাসবাদ, বিচ্ছিন্নতাবাদ রুখতে সকলে সমন্বয় করে চলবে বলেও ঘোষণাপত্রে জানানো হয়েছে।

তাজিকিস্তান জানায়,''আমরা আফগানিস্তানের মানুষের স্বার্থে তাদের সাহায্য করতে এই ধরনের বৈঠকে সবসময় যোগ দেব।''তুরকেমিস্তান জানান যে তাদের চিন্তা মাদক প্রচার নিয়ে।এছাড়াও মানবিক দিক থেকেও আফগানের জনগন নিয়ে পরিস্থিতি শিথিল নয়।


উদ্যোক্তা হিসেবে ভারত তালেবানকে এই বৈঠকের আমন্ত্রণ করেনি।তবে তালিবান ছাড়াও অন্য কোনো আফগান নেতাকে আমন্ত্রণ জানানো যেতো বলে অনেকেই মনে করছেন।

অবশেষে বৈঠকে যৌথ উদ্যোগে মতামত নেওয়ার পর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়,"সন্ত্রাসবাদকে কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যাবে না। কোনও ভাবেই সন্ত্রাসবাদকে অর্থ বা অন্য কোনও ধরনের সাহায্য করা যাবে না। জঙ্গি পরিকাঠামো ধ্বংস করতে হবে, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। আফগানিস্তানকে কোনও ভাবেই আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের নিরাপদ ক্ষেত্র হতে দেওয়া যাবে না।''


Journalist Name : Srijita Maitra

Related News