স্যার সুচিত্রা সেন , ইতিহাসটা কি??

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

বাংলা ইন্ডাস্ট্রি আর সুচিত্রা সেন, এই দুটো নাম ওতপ্রত ভাবে জড়িত। যেটার কোনোদিন অন্যথা হবে না। সুচিত্রা সেন নাম তাই যথেষ্ট তাঁকে বিশ্লেষণ করার জন্য। তিনি এমন একজন অভিনেত্রী যিনি শুধুমাত্র তাঁর অভিনয়ের মাধ্যমে প্রতিটা মানুষের মন এক নিমেষে জয় করে নিয়েছেন। এত বছর পরও তাঁর জায়গা একই আছে এবং অনন্য আছে। আর তাঁর জায়গা কেউ নিতেও পারবে না আগামী দিনে। এককথায় তিনি বাংলার বাঙালীর নস্টালজিয়া। কেরিয়ার শুরুর ১০ বছরের মাথায় এল জীবনের অন্যতম সেরা স্বীকৃতি। সপ্তপদী ছবির জন্য পেলেন প্রথম আন্তর্জাতিক পুরস্কার। তিন মস্কো ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল এ সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেলেন তিনি। সুচিত্রা সেনই প্রথম ভারতীয় অভিনেত্রী যিনি এই স্বীকৃতি পেয়েছিলেন।এমন এক ম্যাজিক ছিল তাঁর পার্সোনালিটিতে, তাঁর অভিনয়ে, যে ইন্ডাস্ট্রি একমাত্র তাঁকেই মহানায়িকার সম্মান দিয়েছিল। তাঁকে ছাড়া বাংলা ছবির ইতিহাস অসম্পূর্ণ। 
তাহলে চলুন, আজ আমরা জেনে নেবো তাঁর জীবনের কিছু অজানা ইতিহাস।
সুচিত্রা সেন কে নিয়ে বাঙালীর মনে কৌতূহলের কোনো শেষ নেই। আশা করি আপনার মনেও ঠিক একই রকম কৌতূহল আছে, তবে চলুন। ম্যাডাম নামে তো সবাই সুচিত্রা সেন-কে ডাকতেন, কিন্তু স্যার বলে ডাকার পিছনের সিক্রেট জানেন?
হয়তো অনেকেই জানেন সুচিত্রা সেন কে কেউ কেউ রমা বলে ডাকতেন, আর তার মধ্যে অন্যতম ছিলেন মহানায়ক উত্তম কুমার। সেটাই স্বাভাবিক। কারণ সিনেমার মতো তাদের বাইরের জগৎটাও ছিল অনেকটা বন্ধুত্বপূর্ণ। যদিও এখনও এই জুটি বাংলা সিনেমার ইতিহাসে একইরকম ভালোবাসার জুটি।কেরিয়ারের শুরু থেকেই নিজের চারপাশে এমন একটা আবরণ তৈরি করে রেখেছিলেন সুচিত্রা যে কারও সাহস ছিল না, সেই গন্ডি পেরিয়ে তাঁর ব্যক্তিগত জীবনে উঁকি দেন, কারণ সেই জায়গা তিনি কাউকেই দেননি। ইন্ডাস্ট্রিতে অনেকেই তাঁকে "ম্যাডাম" বলে সম্মোধন করতেন তবে শোনা যায় "অনাদি" ছবির পর থেকে সেই সিনেমার পরিচালক গুলজার তাঁকে মিলিটারি টোনে "স্যার" বলেই সন্মোধন করতেন। এর পিছনে একটা মজার গল্পও আছে। গুলজার একটি সাক্ষাত্‌কারে সেই সিক্রেট ফাঁস করেছিলেন। বলেন, আঁধি ছবির শ্যুটিংয়ে সময়ে সুচিত্রা সেন নাকি তাঁকে স্যার বলে ডাকতেন। অনেকবার বারন করাতে শোনেননি। সেই থেকে তিনিও মিসেস সেনকে ‘স্যার’ বলে ডাকা শুরু করেন।

১৯৫২ সালে শেষ কোথায় ছবি দিয়ে অভিনয়ের কেরিয়ার শুরু করেছিলেন সুচিত্রা সেন। কিন্তু সেই ছবি মুক্তি পায়নি। তার পরের বছরই মুক্তি পায় সাত নম্বর কয়েদি। তবে জনপ্রিয়তা আসে উত্তম কুমারের সঙ্গে সাড়ে চুয়াত্তর ছবিতে। সেখান থেকেই বাংলা সিনেমার ইতিহাসে তৈরি হয় সর্বকালের সেরা জুটি, উত্তম-সুচিত্রা। ২২বছর ধরে একসঙ্গে অসংখ্য ছবিতে অভিনয় করেছেন উত্তম-সুচিত্রা। তাঁদের দুইজনের মধ্যে সম্পর্কটা এতটাই গভীর ছিল যে, সুচিত্রা উত্তমকে ‘উতু’ আর উত্তম সুচিত্রাকে ‘রমা’ বলে ডাকতেন।একটি সিনে ম্যাগাজিনে এক বর্ষীয়ান সাংবাদিক লিখেছিলেন যে,''সুচিত্রা সেনের বাড়িতে এক সন্ধ্যায় উত্তম সুচিত্রাকে বলেছিলেন, 'রমা, তোমার সঙ্গে যদি আমার বিয়ে হতো!' প্রত্যুত্তরে সুচিত্রা বলেছিলেন, 'একদিনও সেই বিয়ে টিকত না। তোমার আর আমার ব্যক্তিত্ব অত্যন্ত স্বতন্ত্র। সেখানে সংঘাত লাগতই। তার ওপর, তুমি চাইবে তোমার সাফল্য, আমি চাইব আমার। এ রকম দুজন বিয়ে করলে সে বিয়ে খুব বাজেভাবে ভেঙে যেত।' এরপরেই হাসিতে ফেটে পড়েছিলেন দুজনে।" এটাই হলো উত্তম সুচিত্রা, যার বিকল্প কেউ ছিলনা ,কেউ নেইও আর খুব সম্ভবত এটা ফিরে আসা ও সম্ভব নয়। তবে তাঁরা আমাদের মনে, প্রাণে, বাংলা সিনেমার ইতিহাসে একই রকম ভাবে অমর হয়ে থাকে।

Journalist Name : Aankhi Banerjee

Related News