আজ ঐতিহাসিক মে দিবস

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

আজ মহান মে দিবস। মাঠে-ঘাটে, কলকারখানায় খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ে রক্তঝরা সংগ্রামের গৌরবময় ইতিহাস সৃষ্টির দিন।
দীর্ঘ বঞ্চনা আর শোষণ থেকে মুক্তি পেতে ১৮৮৬ সালের এদিন বুকের রক্ত ঝরিয়েছিলেন শ্রমিকরা। আট ঘণ্টা কাজের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের সব শিল্পাঞ্চলে এদিন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন শ্রমিকরা। সে ডাকে শিকাগো শহরের তিন লক্ষাধিক শ্রমিক কাজ বন্ধ রাখেন। শ্রমিক সমাবেশকে ঘিরে শিকাগো শহরের "হে মার্কেট" রূপ নেয় লাখো শ্রমিকের বিক্ষোভ সমুদ্রে। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালালে অন্তত ১০ শ্রমিক শহীদ হন। "হে মার্কেটের" ওই শ্রমিক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে সারাবিশ্বে। গড়ে ওঠে শ্রমিক-জনতার বৃহত্তর ঐক্য। অবশেষে তীব্র আন্দোলনের মুখে শ্রমিকদের দৈনিক আট ঘণ্টা কাজের দাবি মেনে নিতে বাধ্য হয় যুক্তরাষ্ট্র সরকার। পরে ১৮৮৯ সালের ১৪ জুলাই প্যারিসে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক শ্রমিক সম্মেলনে শিকাগোর রক্তঝরা অর্জনকে স্বীকৃতি দিয়ে ওই ঘটনার স্মারক হিসেবে ১ মে 'আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস' হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ১৮৯০ সাল থেকে প্রতি বছর দিবসটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ 'মে দিবস' হিসাবে পালন করতে শুরু করে।
ভারতে প্রথম শ্রম দিবস পালন হয়েছিল ১৯২৩ সালে। চেন্নাইতে হিন্দুস্তান লেবার কিসান পার্টি এই দিনটি প্রথম পালন করে। কমিউনিস্ট নেতা মালয়পুরম সিঙ্গারাভেলু চেত্তিয়ার শ্রমিকদের প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য ১ মে জাতীয় ছুটি হিসেবে ঘোষণা করার পক্ষে প্রথম সওয়াল করেন। আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠন বা International Labour Organization একটি সংস্থা যা স্বাধীনতা, সমতা, নিরাপত্তা এবং মর্যাদা বজায় রেখে সুন্দর এবং উত্পাদনশীল কর্মসংস্থানের সুযোগকে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করে। এর প্রধান লক্ষ্যগুলি হল কর্মক্ষেত্রের অধিকারের বিষয়টিকে প্রচার করা, মার্জিত কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করা, সামাজিক সুরক্ষা উন্নত করা এবং কর্মক্ষেত্র সম্পর্কিত নানা সমস্যা মোকাবিলায় আলোচনা জোরদার করা। আর আজ সকালেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট  করে শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বাংলা, দেশ এবং বিদেশের সমস্ত শ্রমিকদের 'সাথী' বলে উল্লেখ করেছেন যা সকলের নজর টেনেছে। উল্লেখ্য, ৮০-র বেশি দেশে এই দিনটি পালিত হয়। বিশ্বের রাজনৈতিক ইতিহাসে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন হিসাবে এই দিনটি চিহ্নিত হয়ে আছে।

Journalist Name : SRIJITA MALLICK