এবার বার্থ এবং ডেথ সার্টিফিকেট সংক্রান্ত নিজস্ব পোর্টাল চালু করতে চলেছে রাজ্য সরকার। এই পোর্টাল চালু হলে রাজ্যের বহু মানুষ উপকৃত হবেন বলে মনে করা হচ্ছে। এই পোর্টাল চালু করার জন্য উদ্যোগী রাজ্য সরকার। আগামী ৫মে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এতদিন কেন্দ্রের "সিভিল রেজিস্ট্রি সিস্টেম-এর মাধ্যমেই জন্ম-মৃত্যু শংসাপত্র হত। রাজ্য তার নিজের কাছেও যাবতীয় তথ্য রাখার জন্য আলাদা করে পোর্টাল তৈরি করল। এই লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে সরকারি কর্মীদের। রাজ্যজুড়ে জন্ম-মৃত্যু শংসাপত্রের আবেদন এবার করা যাবে অনলাইনেই, সূত্রের খবর এমনটাই। সেই মতো প্রস্তুতি শুরু করেছে রাজ্য সরকারও। এই পোর্টালে থাকবে যাবতীয় তথ্য।এই পোর্টালের মাধ্যমে হাসপাতালগুলি শিশু জন্মানোর সঙ্গে সঙ্গে পোর্টাল গিয়ে আপলোড করে দিতে পারবে। যাচাই করার জন্য পঞ্চায়েত এবং মিউনিসিপ্যালিটি গুলো থেকে অনলাইনে ভেরিফিকেশন হবে। জন্ম-মৃত্যু শংসাপত্র অনলাইনে পেয়ে যাবেন পরিবারের সদস্যরা। অর্থাৎ আর মিউনিসিপালিটি বা পঞ্চায়েতে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না। দু মাস আগে হাওড়া ও মালদা জেলাতে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে এই প্রকল্প শুরু করা হয়েছিল। পুরকর্মীদের মধ্যে সংক্রমণ ঠেকাতে এই পদ্ধতি নিয়েছে হাওড়া পুরসভা। এবার থেকে জন্ম মৃত্যু শংসাপত্র পাওয়ার কাজ আরও সহজ হল।অনেক ক্ষেত্রেই ডেথ সার্টিফিকেটে নাম, ঠিকানা ভুল হওয়ার ফলে নাজেহাল হতে হচ্ছে মৃতের পরিজনদের। বারেবারে হাওড়া পুরসভার সংশ্লিষ্ঠ দফতরে ছুটতে হচ্ছে পরিবারের মানুষদের। এছাড়াও বর্তমান কোভিড পরিস্থিতিতে ভিড় এড়াতে এবারে জন্ম ও মৃত্যুর রেজিস্ট্রেশন অনলাইন পদ্ধতি৷ এই সংক্রান্ত বিষয়ে রাজ্য ও জেলা স্বাস্থ্য কর্তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এই মর্মে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের তরফে সমস্ত জেলার স্বাস্থ্য কর্তাদের দেওয়া হয়েছে চিঠি। জারি হয়েছে নির্দেশিকাও। এতদিন পর্যন্ত রাজ্যে বার্থ এবং ডেথ সার্টিফিকেট সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য জমা হত স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পোর্টালে। কিন্তু, এবার থেকে রাজ্যে স্বাস্থ্য ভবনের পোর্টাল থেকে কেন্দ্রীয় পোর্টালে যাবে যাবতীয় তথ্য। এছাড়াও হাসপাতাল থেকেই সদ্যজাতকে দেওয়া হবে বার্থ সার্টিফিকেটও, সূত্রের খবর এমনটাই।
পরে যদি ওই শিশুর পরিবার চায় নাম বা অন্যান্য তথ্য বদল করতে সেক্ষেত্রে স্বশরীরে কোনও দফতরে উপস্থিত হতে হবে না। অনলাইনেই করা যাবে আবেদন। এরপর অনুমোদন পাওয়ার পর অনলাইনেই পাওয়া যাবে সংশোধিত সার্টিফিকেটও। মোটের উপর পুরো বিষয়টি সম্পন্ন হবে অনলাইনেই। এদিকে, এই পোর্টালে লগ ইন করে হাসপাতাল ডেথ সার্টিফিকেট দেবে। সেই সময় এই আপলোড করা ডেথ সার্টিফিকেটের ভিত্তিতে ওই ব্যক্তির নাম খাদ্য, স্বাস্থ্যসাথীর মতো কর্মসূচি থেকে বাদ দেওয়া হবে। এই বার্থ এবং ডেথ সার্টিফিকেট সংক্রান্ত পোর্টাল ইতিমধ্যেই বেশ কিছু জেলায় চালু হয়েছে। হাওড়া এবং মালদা জেলার নির্দিষ্ট কিছু ব্লক, পুরসভাতে এই পোর্টাল কাজ করছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে বলা হয়েছে, সাধারণ মানুষের জন্য এই পোর্টাল অত্যন্ত কার্যকরী হতে চলেছে। উল্লেখ্য, কয়েক সপ্তাহ আগে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছিলেন, "জন্ম এবং মৃত্যু শংসাপত্র যাতে আগামীদিনে অনলাইনে পাওয়া যায় সেই পরিকল্পনার কথা ভাবছে পুরসভা।” পাশাপাশি অনলাইনে আবেদনের পর যাতে নির্দিষ্ট ঠিকানায় সার্টিফিকেট পৌঁছে দেওয়া যায়, সেই বিষয়েও চিন্তাভাবনা করা হবে। প্রসঙ্গত, ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানের মাঝেই একটি ফোন পেয়েছিলেন ফিরহাদ। যেখানে অভিযোগ উঠেছিল অনেকটা সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও তিনি সংশাপত্র পাননি। যদিও কোভিডের কারণেই এই সমস্যা হচ্ছে বলে জানান মেয়র। এই পুরো বিষয়টি অনলাইন হলে বহু মানুষ উপকৃত হবেন বলেও সাফ দাবি করেছিলেন ফিরহাদ।