ভারতীয় সময় গতকাল রাত্রে প্যারিস সেইন্ট-জার্মেইন তাদের সব থেকে শক্তিশালি আক্রমণ নিয়ে নেমেছিল ম্যানচেস্টার সিটির বিরুদ্ধে। তাদের ত্রিফলা আক্রমণে ছিলেন লিও মেসি, এমবাপে, নেইমার কিন্তু তাতে খুব একটা লাভ হয়নি পিএসজির। তার বিপরীতে ম্যান সিটি, কিছুটা দুর্বল দল নিয়েই মাঠে নেমেছিল, কাল দলে ছিলেন না জ্যাক গ্রিলিশ, কেভিন দে ব্রুইনি। তাদের দলে গুরুত্বপূর্ণ এই দুই খেলোয়াড়কে ছাড়াই তারা মাঠে নেমেছিল পিএসজির বিরুদ্ধে। তারপরেও ম্যান সিটি ২-১ গোলে জয় লাভ করে।
পেপ গার্দিওলা যে সেরা কোচ তা আবারো প্রমাণ হলো কালকের ম্যাচ দেখে। তাদের ডিফেন্স রুবেন দিয়াস, স্টনেস, যাও ক্যান্সেলো এবং কাইল ওয়াকার খুব বুদ্ধিদীপ্ত ভাবে পিএসজির মেসি, নেইমার গোল করা থেকে বিরত রেখেছিল। পেপ তার ডিফেন্স কে এমন ভাবে সাজিয়েছিল নেইমার বা মেসি একটু অসাবধান বসতো, ডিফেন্সকে ভেদ করে পেনাল্টি বক্সের মধ্যে প্রবেশ করলেই তা অফসাইডে রূপান্তর হচ্ছিল।
প্রথমার্ধে পিএসজির খেলা একটু ভয়ের ঢেউ আনতে পারে নি ম্যানসিটির ওপর। বরং ম্যানসিটির খেলা পিএসজির ওপর একের পর এক ভয়ের সঞ্চার করছিল। প্রথম থেকেই আক্রমনাত্মক খেলছিল ম্যানসিটি, কাল তাদের আক্রমণের ছিলেন বার্নার্দো সিলভা, রহিম স্টারলিং ও রিয়াদ মাহরেজ। বার্নার্দো সিলভা প্রথম থেকেই ফলস নাইন হিসেবে খেলছিলেন, তাই তাকে আটকাতে যথেষ্ট কষ্টসাধ্য বলে মনে হচ্ছিল পিএসজির ডিফেন্স এর।
গতকাল পিএসজির ডিফেন্সে যদি কিম্পেম্বে এবং হাকিমী না থাকলে হয়তো প্রথমার্ধে ২-০ গোলে এগিয়ে যেত ম্যানসিটি। অত্যন্ত ধারালো দুটি ধারালো গোল মুখী শর্ট পিএসজির এই দুই ডিফেন্ডার অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার সাথে বল দুটিকে ক্লিয়ার করে। তারপর ২৭ মিনিটে গুন্দোগান এর একটি শর্ট পিএসজির গোলপোস্টে
গিয়ে লাগে। প্রথমার্ধ থেকেই গুন্দোগান, রিয়াদ মাহারেজ, রহিম স্টারলিং কে খুব দুরন্ত লাগছিল।
গতকাল রাত্রে পিএসজির মাঝমাঠ পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে ম্যানসিটি থ্রুবল গুলিকে আটকাতে।
গতকালের পর পরিষ্কার হয়ে গেল পোচেত্তিনোর পিএসজির কোচ হিসেবে তার সময়সীমা শেষ হয়ে এসেছে। গতকাল রাত্রে তার দলের খেলা একেবারেই সাদামাটা ছিল।
দ্বিতীয়ার্ধে ৫০ তম মিনিটে পিএসজির এমবাপে প্রথম গোল করে। এমবাপ্পের গোলটি আসে মেসির একটি অসাধারণ পাসের মাধ্যমে। ম্যানসিটির ডিফেন্স এর ওই একটি ভুলের কারণেই গোল পায় পিএসজি। মেসির পাসটি ম্যানসিটির ডিফেন্সকে বোঝারও সুযোগ দেয় নি, তার ফলে এমবাপে একদম ফাঁকা জায়গায় বলটি পেয়ে যায়, এবং খুব বুদ্ধিমত্তার সাথে বলটি কে ম্যান সিটির গোলপোস্টে প্রবেশ করায়। যদিও সেই গোলের উল্লাস তাদের বেশিক্ষণ থাকেনি, ৫৩ মিনিটে পেপ একটি দুর্দান্ত পরিবর্তন আনেন, জিঞ্চেঙ্কর বদলে মাঠে আনেন গাব্রিয়েল জেসুসকে। তিনি তারপর বাদবাকী ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দেন। তার পর ৬৩ মিনিটে একটি বুদ্ধিদীপ্ত গোল দেন রহিম স্টারলিং, তার গোলটি সমতায় নিয়ে আসে ম্যানসিটি কে। তারপর পিএসজির নেইমার অনেক বার চেষ্টা করেন তার দলকে আবার এগিয়ে দেওয়ার কিন্তু তিনি সেখানে ব্যর্থ হন। তারপর থেকে ম্যানসিটি একের পর এক দুর্দান্ত শটে পিএসজির গোলকিপার কেলোর নাভাসকে জর্জরিত করছিল। তিনি অনেক চেষ্টা করলেও শেষে ৭৬ মিনিটে গ্যাব্রিয়েল জেসুস এর কাছে পরাজিত হন। সেখান থেকেই ২-১ গোলে জয় লাভ করে মধুর প্রতিশোধ নেয় ম্যানসিটি। গত কাল ম্যান অব দ্যা ম্যাচ হন বার্নার্দো সিলভা।
গতকালের পর যা বোঝা গেল জিনেদিন জিদান পিএসজির কোচ হিসেবে অনেকটাই এগিয়ে এসেছেন। এবার জিদানের কোচ হিসেবে পিএসজিতে যোগ দেওয়া মাত্র সময়ের অপেক্ষা।।