নীতি আয়োগের সমীক্ষাই ভরাডুবি কোলকাতার

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

ভারতের জাতীয় আয়োগ সংস্থা বা নীতি আয়োগ প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রতিষ্ঠিত এক বৃহৎ অর্থনৈতিক সংস্থা। মূলত ভারতের আর্থিক যোজনার প্রতি লক্ষ্য রাখা এবং রাজ্য গুলির আর্থিক উন্নতির চর্চা করা এই সংস্থার প্রধান কাজ। ২০১৫ সালের ১লা জানুয়ারি এই সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি নিজেই এই সংস্থার দেখভাল করেন।

 শহরাঞ্চলের উন্নতি মাপতে মাঠে নেমেছিল কেন্দ্র সরকারি এই সংস্থা নীতি আয়োগের সংস্থা সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল আর্বান ইন্ডিয়া ইনডেক্স। মোট ১৫ টি মাপকাঠিতে তারা শহরাঞ্চলের উন্নতি যাচাই করেছে। মোট ৫৬ টি শহরে তারা এই সমীক্ষা চালায় যার মধ্যে কোলকাতা একটি। নীতি আয়োগের রিপোর্ট সামনে আসার পরেই চক্ষুচরক গাছ কোলকাতাবাসীর। সমীক্ষাই কোলকাতার ফল মোটেই সুখকর নয়, সমীক্ষাই ডাহা ফেল কোলকাতা।


ভদ্রস্থ কাজের সুযোগ বা আর্থিক বৃদ্ধির মাপকাঠিতে কোলকাতার স্থান অনেক পেছনে। ৫৬ টি শহরের মধ্যে সব থেকে পেছনে কোলকাতা। ১০০ এর মধ্যে তিলোত্তমার কপালে জুটেছে মাত্র ৩। কোলকাতার সঙ্গী হয়েছে ধানবাদ, পাটনা, ইটানগর, আগরা, তবে সেরার শিরোপা ছিনিয়ে নিয়েছে শিমলা। সভ্য কাজ হোক বা আর্থিক বৃদ্ধি তাতে কিন্তু বেঙ্গালুরু এগিয়ে।তবে বাকি শহরগুলি কিন্তু ৫০ এর গণ্ডি টপকাতে পারেনি। দারিদ্র, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিল্প পরিকাঠামো, উৎপাদন, ক্ষুধা সহ আরও ১৫ টি , মাপকাঠির বিচারেও সর্বনিম্নে ঠাই পেয়েছে কোলকাতা। ইতিমধ্যেই কর্মসংস্থানে জোর দিয়েছে রাজ্য সরকার, শিল্প ফিরিয়ে আনার জন্য মরীয়া চেষ্টা চালাচ্ছে রাজ্য সরকার, কিন্তু নীতি আয়োগের এই সমীক্ষা দেখে কাজের সুযোগ ও আর্থিক বৃদ্ধিতে কোলকাতার এখনও অনেকখানি পথ অতিক্রম করা বাকি। নীতি আয়োগের রিপোর্টে বলা হয়েছে ১০০ নম্বর পাওয়ার অর্থ সেই শহর তার স্থির করা লক্ষ্যে পৌঁছাতে পেড়েছে, আর ০ পাওয়ার অর্থ তারা উচ্চাকাঙ্ক্ষী, লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে আগ্রহী। কোলকাতাই কাজের সুযোগ অসংখ্য থাকলেও তা ভদ্র জীবনযাপনের মাপকাঠিতে অনেক পেছিয়ে। 


শুধু কোলকাতাই নয়, দেশের বেশিরভাগ বড় শহরগুলির অবস্থাই বেশ খারাপ, যার তথ্য উঠে এসেছে নীতি আয়োগের সমীক্ষাই। তাদের মধ্যে বেশির ভাগ শহরেই কর্মসংস্থানের আশা হতাশা জনক। শুধুমাত্র ব্যাঙ্গালুরু ছাড়া বাকি শহর গুলি তাদের লক্ষ্যে পৌঁছতে ব্যাহত। হতাশ করেছে বাণিজ্যনগরিও। মুম্বাই এর খাতাই জুটেছে ১০০ এর মধ্যে মাত্র ১৭, সাথে সঙ্গী হয়েছে বিহারের রাজধানী পাটনাও তার ঝুলিতেও ১৭। খারাপ অবস্থা খোদ দেশের রাজধানীরও, দিল্লির খাতাই ১০০ তে ৪৩। অন্যদিকে দেশের আরও এক মহানগরী চেন্নাই এর কপালে জুটেছে মাত্র ৩৬ নম্বর। তবে বাকিদের তুলনাই দিল্লি, চেন্নাই এর সাথে মান বাঁচিয়েছে হাইদ্রাবাদও। বেঙ্গালুরুর পিছু নিয়েছে ছত্তিসগড় এর রাজধানী রাইপুর, মেধা তালিকাই তার স্থান দ্বিতীয়। ৫৯ পয়েন্ট পেয়ে তৃতীয় স্থান দখল করেছে দেরাদুন এবং চতুর্থ পানাজি, তবে এদের কারোর ফলকেই ভালো বলা চলে না, কারণ তারা তাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা থেকে অনেক পিছিয়ে। 

আন্তর্জাতিক জাতিপুঞ্জের পক্ষ থেকে ২০১৫ সালে ১৭ SDG পরিকল্পনা নেওয়া হয়, যার মূল উদ্দ্যেশ্য ছিল বিশ্ব দারিদ্র দূরীকরণ। সেই অনুযায়ী ভারতীয় সংস্থা নীতি আয়োগ শহরাঞ্চলের অর্থনৈতিক অবস্থা ও চাকরি প্রদানের ভিত্তিতে এই সমীক্ষা চালাই। করোনা মহামারী পরবর্তী সময়ে এই সমীক্ষা দেখে বোঝাই যাচ্ছে অর্থনীতিতে কার্যত ধুঁকছে ভারত। ৫৬ টি শহরের মধ্যে ১৩ টি শহরের ফল ৫০ এর ওপরে হলেও বাকিদের ফল না বলাই শ্রেয়।

Journalist Name : Sagarika Chakraborty

Related News