Flash news
    No Flash News Today..!!
Saturday, May 11, 2024

কলেজবিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি নয়, ছাত্র সংগঠন চাই

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হল জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি আদর্শ,রীতিনীতি,মূল্যবোধ এবং নিয়ম-কানুন শেখার আদর্শ স্থান।এক কথায়,আমাদের সমাজিকীকরণের মাধ্যম হল এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।বর্তমান সময়ে দেখা যাচ্ছে উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোতে বিশেষত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ছাত্র রাজনীতিকে কেন্দ্র করে এক অপসংস্কৃতির সৃষ্টি হয়েছে।যদিও ছাত্র রাজনীতি আজকের দিনে নয়,অতীতেও ছিল।কিন্তু বর্তমান সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতিকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ধরনের হিংসাত্মক কাজকর্ম সংঘটিত হচ্ছে।যেমন দলীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে হিংসা,মারামারি এই সব ধরনের কাজকর্ম লক্ষ করা যায়।এর পাশাপাশি দেখা গেছে রাজনৈতিক ক্ষমতার জোরে কিছু বাইরের নেতাদের সহায়তায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে অধ্যাপকদের ও সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের হুমকি দেওয়া, নানান অপমান করা, ছাত্র-ছাত্রীদের র‍্যাগিং করা,ক্যাম্পাসে নেশা করা সহ নানান অপসংস্কৃতি মূলক কাজকর্ম করতে।ছাত্র রাজনীতির ইতিবাচক ও নেতিবাচক উভয় দিকই বর্তমান কিন্তু সিংহভাগ দেখা যায় নেতিবাচক দিক।এমনকি রাজনৈতিক ক্ষমতার জোরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ছাত্র সংসদের ছাত্র-ছাত্রীরা এবং নেতারা সম্মানীয় প্রিন্সিপাল এবং উপাচার্য মহাশয়কেও অপমান করতে, গায়ে হাত তুলতে সংকোচবোধ করেনা।এটা যেমন ঠিক যে, শাসন ক্ষমতায় থাকা ছাত্র রাজনীতির সদস্যরা তথা ছাত্র সংসদ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ছাত্র-ছাত্রীদের বিভিন্ন ধরনের দাবিকে কেন্দ্র করে লড়াই করে এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত করে কিন্তু তার থেকেও বেশি হিংসা,মারামারি,অপসংস্কৃতি ইত্যাদি নিয়েই ব্যস্ত থাকে।বেশিরভাগ যুক্ত থাকে অপসংস্কৃতি মূলক কাজে।কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে দেখা গেছে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গুলোকে নিতে হয় ছাত্র সংসদের নেতাদের অনুমতি নিয়ে।অর্থাৎ নেতারা চাইলে সবকিছু হবে,না চাইলে কিছুই হবে না।


এক কথায়,মুখ্য ভূমিকা নেয় ছাত্র নেতারা আর অধ্যাপক সহ কর্তৃপক্ষরা এখানে গৌণ হয়ে যায়।ছাত্র রাজনীতির সদস্যরা ভুল করলেও তাদেরকে শাসন করার দুঃসাহস কেউ দেখাতে পারেনা।ক্লাস নাকরেও পরীক্ষায় বসতে পারে।এক কথায়,ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ক্ষমতার এক অহংকারবোধ সৃষ্টি হয়।যার ফলে তাদের মনের মধ্যে কোনো ভয়,শ্রদ্ধা,আদর্শ প্রভৃতি এই সব সেভাবে দেখা যায়না।তারা জানে কিছু হলেই নেতারা রয়েছে।এরফলে বহু ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনা তথা ভবিষ্যত নষ্ট হয়েছে।তাদের মনের মধ্যে জ্ঞানের আলোর পরিবর্তে রাজনীতির অন্ধকার ঢেকে যায়।ডিগ্রি কোর্সে পাশ আউট করার পরও তারা রাজনৈতিক ক্ষমতার জোরে ক্যাম্পাসে এসে দাদাগিরি করে,নেশা করে,অধ্যাপকদের হুমকি দেয়,হোস্টেলের মধ্যে থেকে র‍্যাগিং করে।তারা এই সাহস গুলো পায় সব বহিরাগত রাজনৈতিক নেতাদের সহযোগিতায়।তারা জানে যাইহোক না কেনো নেতারা আছে বিষয়টি দেখে নেবে।কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে মূলত ছাত্র রাজনীতিকে অপব্যবহার করা হয়।তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কেবল থাকুক ছাত্র-ছাত্রী সংগঠন।এই সংগঠনের দায়িত্বে থাকবে কেবলমাত্র কারেন্ট স্টুডেন্টসরা।এই ছাত্র সংগঠন তৈরি করবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষরা।এই ছাত্র সংগঠনের কাজ হবে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি কোনো অন্যায় হলে তার প্রতিবাদ করা এবং বিভিন্ন নৈতিক বিষয় নিয়ে ছাত্র আন্দোলন করা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত করা।যেখানে কোনো দলীয় রাজনীতি থাকবে না,থাকবে না কোনো দলীয় রাজনৈতিক পতাকা।শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হোস্টেল গুলোতেও এই নিয়মে ছাত্র/ছাত্রী সংগঠন বা ছাত্র/ছাত্রী কমিটি তৈরি করতে হবে।যারা হোস্টেলের মধ্যে ছাত্র-ছাত্রীদের ভালো-মন্দ বিষয় গুলোকে দেখবে।এই সংগঠনে কোনো ভাবেই পাশ আউট করা ছাত্র-ছাত্রী বা বহিরাগত রাজনৈতিক নেতারা যুক্ত থাকবে না।এই সংগঠনও তৈরি হবে কারেন্ট স্টুডেন্টসদের সিনিয়র আর জুনিয়রদের নিয়ে।বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ এই সংগঠন আইনিভাবে তৈরি করবে।কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষরা নিজস্ব কিছু সংবিধান তৈরি করে দেবে এই সংগঠন এর মধ্যে।এই ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা যদি কোনো দোষ করে তাহলে অন্যান্য সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের মতই শাস্তি পেতে হবে।কোনো অতিরিক্ত ক্ষমতা এই সংগঠনকে দেওয়া থাকবে না।আমার মনে হয়,শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোর মধ্যে শান্তিপূর্ণ ও আদর্শ পরিবেশ সৃষ্টি করতে হলে ছাত্র রাজনীতি নয় ছাত্র সংগঠন এর প্রয়োজন।তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতি নয়, ছাত্র সংগঠন চাই।

Journalist Name : জয়দেব বেরা

Related News