বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। বর্ষবরণ থেকে শুরু করে দুর্গাপুজো , উৎসব বাঙালির জীবনের এক অংশ। তবে শুধু হুল্লোরেই নয় , খাওয়া দাওয়া তেও বাঙালি সেরার সেরা। যেকোনো অনুষ্ঠানে সাথে থাকে বিভিন্ন ধরনের বাঙালি খাবার।
এরমই আরো এক অনুষ্ঠান পৌষ সংক্রান্তি বা মকর সংক্রান্তি। বহু যুগ ধরে এই উৎসব পালন করা হচ্ছে। গ্রাম বাংলায় অত্যন্ত ধুমধামের সাথে এই উৎসব উজ্জাপন করা হয়। শহরতলির মানুষের মধ্যেও মকর সংক্রান্তি পালন করার চল দেখা যায়।
আভিজাত্যপূর্ণ বিশেষ কিছু খাবারের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। খাবারের তালিকায় সবার প্রথমেই থাকে সবথেকে শুভ জিনিস পায়েস। এর সাথে রয়েছে পাটিসাপটা , গোকুল পিঠে , চন্দ্রপুলি , সরা পিঠে , সেদ্ধ পুলি ও আরো অনেক। এক কথায় বলতে গেলে এ এক পিঠে উৎসব।
তবে শুধু খাওয়াদাওয়াই নয় , মকর সক্রান্তি দিনে পুণ্য লাভের আশায় গঙ্গাসাগরে লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থীদের ভিড় দেখা যায়। এছাড়াও, জয়দেব কেন্দুলিতেও দেখা যায় বহু পুণ্যার্থীদের সমাগম।
জয়দেব কেন্দুলির পাশেই রয়েছে অজয় নদী। সেই নদীতে পুণ্য স্নানের জন্য আগের রাত থেকে পুণ্যার্থীরা ভিড় দেখা যায়। এছাড়াও থাকে বাউল সহ অন্যান্য সংগীত শিল্পীরাও।
জয়দেব রাধা বিনোদ মন্দিরের সেবায়েত বেনীমাধব অধিকারী বলেন, গীতগোবিন্দের রচয়িতা কবি জয়দেবের বাড়িতে তৈরি হয়েছিলো রাধা বিনোদ মন্দির। মন্দির তৈরি করেছিলেন বর্ধমানের রাজা কীর্তি চাঁদ বাহাদুর। কবি জয়দেব কেন্দুলী থেকে কাটোয়ায় যেতেন গঙ্গাস্নান করতে। এরমই একদিন কবি জয়দেবকে গঙ্গা দেবী স্বপ্নে দেখা দিয়ে বলেন , তাকে আর কষ্ট করে কাটোয়া যেতে হবে না। কদম কুন্ডের ঘাটে মকর সংক্রান্তিতে তিনি নিজে কেন্দুলিতে আসবেন। এরপরই সেখানে তিনি গঙ্গা দেবীর দর্শন পান।
এই ঘটনার পর বহু পুণ্যার্থী মকর সংক্রান্তিতে জয়দেব কেন্দুলীর অজয়ের ঘাটে আসেন গঙ্গাস্নানের জন্য। তবে করোনার জন্য দু বছর ধরে ভক্তরা আসতে পারেননি পূণ্য লাভ করতে। কিন্তু পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতেই আবারো ভক্তদের সমাগম দেখা যায় এখানে।