প্রবল শীতে কাবু রাজধানী, হতে পারে তুষারপাত

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

বাংলায় শীতের দাপট কমলেও উত্তর ভারতে এখন শীতের মরশুম অব্যাহত। শীতল স্থান হিসাবে বিবেচিত সিমলা, মুসৌরির থেকেও এখন ঠান্ডা রাজধানী। মঙ্গলবার ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার সাক্ষী হয়েছে দিল্লি। ফলে এবার রাজধানীর তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নীচে নামা অস্বাভাবিক নয়। ফলে এবার দিল্লি তুষারপাতের সাক্ষী হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। যদিও আশার কথা শোনাননি আবহবিদরা। দিল্লি এবং আশপাশের এলাকায় বইতে পারে শৈত্যপ্রবাহের দাপট। যার জেরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে আসতে পারে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। দিল্লি এবং আশপাশের এলাকার বাসিন্দাদের তাই আগামী কয়েকদিন নির্দিষ্ট কয়েকটি সাবধানতা অবলম্বন করতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।চলতি সপ্তাহে সামান্য তাপমাত্রা বাড়লেও তা স্থায়ী হবে না। অর্থাৎ সপ্তাহান্তে ফের কমবে তাপমাত্রার পারদ। শুধু তাই নয়, এবছর শীতে পুরনো সব রেকর্ড ভাঙতে চলছে দিল্লি। আগামী সপ্তাহে তাপমাত্রা নামতে -৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এমনটাই জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া দফতর। রোববার এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশিকা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। তাতে বলা হয়েছে, ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত দিল্লির সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে অন্তত দুই-তিন ডিগ্রি কমতে পারে। এই কয়েকদিন রাজস্থান, পাঞ্জাব, হরিয়ানা এবং দিল্লিতে ‘প্রবল শৈত্যপ্রবাহ’ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। এমনকি আগামী পাঁচ দিন এই চার রাজ্যে রাতে ও সকালে ঘন কুয়াশার কারণে কমতে পারে দৃশ্যমানতা। দিল্লিবাসীকে সতর্ক থাকতে তাই খুব প্রয়োজন না পড়লে বাড়ির ভেতরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। আর এসময়ে কী ধরনের গরম পোশাক পরতে হবে, তাও স্পষ্ট করে জানিয়ে জারি করা হয়েছে নির্দেশিকা। ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, রবিবার সকালে দিল্লির সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তাপমাত্রা অনেকটা কমে যায়। আবহাওয়া ভবন সূত্রের খবর, এদিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা আরও নামতে পারে বলে আভাস দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। তবে ৯ জানুয়ারি থেকে শৈত্যপ্রবাহ পরিস্থিতি একটু কমবে বলে জানিয়েছে মৌসম ভবন। কারণ হিমালয় অঞ্চলে পিঠোপিঠি দু’টি পশ্চিমি ঝঞ্ঝা সৃষ্টি হতে পারে। প্রথম ঝঞ্ঝাটি সৃষ্টি হতে পারে ১৮ জানুয়ারির রাতে। দ্বিতীয় ঝঞ্ঝাটি তৈরি হতে পারে ২০ জানুয়ারির রাতে। ফলে এই দুই ঝঞ্ঝার প্রভাবে বৃহস্পতিবার থেকে উত্তর-পশ্চিম ভারতে শৈত্যপ্রবাহ কিছুটা বাধাপ্রাপ্ত হবে। দিল্লি ছাড়াও পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশের একাংশ, চণ্ডীগড় এবং রাজস্থানের কিছু এলাকায় শৈত্যপ্রবাহের ফলে তাপমাত্রা কমে যায়। হরিয়ানার হিসারে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা শূন্য দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। আর পাঞ্জাবের অমৃতসরে তাপমাত্রা ছিল ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শীতের পাশাপাশি বায়ুদূষণেও নাকাল দিল্লিবাসী। গত ১২ জানুয়ারি ভারতের রাজধানী ও এর আশপাশের এলাকার এয়ার কোয়ালিটি ইন্ডেক্স বা বায়ুমান ছিল ৩৭১, যা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি। বায়ুদূষণ ও ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন স্থানীয়রা। স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে নগরবাসীকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
 
ঘন কুয়াশার জেরে দিল্লিতে ব্যাহত হয়েছে উড়ান পরিষেবাও। দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ায় সকাল ও রাতের দিকে বেশ কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। কুয়াশা থাকলে একসঙ্গে বিমানের অবতরণ ও টেক অফ করানো হচ্ছে না। এর জেরে বেশ কিছু বিমান দেরিতে চলছে। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক উড়ানও রয়েছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। উল্লেখ্য, দিল্লির পাশাপাশি শৈত্যপ্রবাহের সতর্কতা দেওয়া হয়েছে হিমাচলপ্রদেশ, হরিয়ানা, পঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড ও জম্মু-কাশ্মীরে। গত কয়েকদিনে তুষারপাত হয়েছে কাশ্মীর ও বদ্রীনাথে। দিল্লির পাশাপাশি পারদ নেমেছে বাংলাতেও।

Journalist Name : Aparna Dutta

Related News