বাঁকিপুট কাঁথির কাছে একটি অনাবিষ্কৃত সমুদ্র সৈকত

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

বাকিপুটও একটি জনাকীর্ণ কুমারী সৈকত যা জুনপুট থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে।

বাঁকিপুট সমুদ্র সৈকত নতুন কোনও সি বিচ নয়। অনেক আগে থেকেই বাঁকিপুটে পর্যটকদের যাতায়াত ছিল। কিন্তু সেই অর্থে ভিড় হয় না বাঁকিপুটে। জনপুট নামের সমুদ্র সৈকতের খুব কাছেই অবস্থিত এই বাঁকিপুট। পূর্ব মেদিনীপুরের স্বল্প পরিচিত এই সমুদ্র সৈকত হতে পারে ছোট্ট উইকএন্ডে বন্ধু, পরিবার, কাছের মানুষের সঙ্গে বেড়াতে যাওয়ার আদর্শ জায়গা।

সারিবদ্ধ ঝাউবন, সেখানে পাখির ডাক আর শান্ত সমুদ্রতট। কান পাতলা সমুদ্রের ঢেউ আর ঝিঁঝিঁর ডাক ছাড়া সেরকম কিছু শোনা যায় না। আর বালুচর জুড়ে রয়েছে লাল কাঁকড়ার ভিড়। এসব নিয়েই বাঁকিপুট। বঙ্গোপসাগরের তীরে এমন নিরিবিলি সমুদ্রতট রয়েছে, বাঁকিপুট না গেলে তা বিশ্বাস করা কঠিন। বাঁকিপুটে একবার ঢুকে পড়লে আপনি শহুরে জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবেন। আর এই কারণেই বাঁকিপুট ‘ভার্জিন বিচ’। মোহনার খুব কাছেই বাঁকিপুট অবস্থিত। তাই জোয়ার এলেই ফুলে ফেঁপে ওঠে সমুদ্রে জল। ভাঁটা থাকলে বাঁকিপুট খুব একটা ভাল লাগবে না। তখন শুধুই কাদা আর বালি। তবে, ঝাউবনের সৌন্দর্য আপনার মন খারাপকে দূরে ঢেলে দেবে।


কলকাতা থেকে দিঘাগামী বেশিরভাগ ট্রেন বা বাস কন্টাই (কাঁথি) দিয়ে যায়। বেশ কয়েকটি লোকাল ট্রেন ছাড়া, সরাসরি বা বিরতি দিয়ে যাত্রা, শুধুমাত্র 4টি সংরক্ষিত ট্রেন, যথা, তাম্রলিপ্ত এক্সপ্রেস, দুরন্ত এক্সপ্রেস, কান্ডারী এক্সপ্রেস এবং পাহাড়িয়া এক্সপ্রেস (শুধুমাত্র শনিবার) কলকাতা থেকে প্রতিদিন চলে। অর্থনীতি, আরামদায়কতা এবং সময় বিবেচনা করে সবচেয়ে ভালো বিকল্প হল তাম্রলিপ্ত এক্সপ্রেস।

আশেপাশে কিছু দর্শনীয় স্থান রয়েছে যেমন দারিয়াপুর লাইট হাউস, কপালকুন্ডলা মন্দির ইত্যাদি। আপনি এই স্পটগুলো ঘুরে দেখতে পারেন।

অন্যান্য বিখ্যাত সমুদ্র সৈকত যেমন দিঘা, মন্দারমণি, শঙ্করপুর, তাজপুর, তালসারি, উদয়পুর, জুনপুট ইত্যাদি সবই কাছাকাছি, যদি আপনি সেগুলিকে ট্রিপে ক্লাব করার পরিকল্পনা থাকে, তাহলে করতে করেন।


বাঁকিপুটে রয়েছে প্রাচীন বাতিঘর। বাঁকিপুট থেকে প্রায় আধ কিলোমিটার হাঁটলেই পৌঁছে যাবেন ব্রিটিশ আমলে তৈরি দরিয়াপুরের ৯৬ ফুট বাতিঘর। বিকেলে সেই বাতিঘরে উঠে আপনি উপভোগ করতে পারবেন বাঁকিপুটের সৌন্দর্য। এছাড়া বাঁকিপুট থেকে ৫ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে বঙ্কিমচন্দ্রের স্মৃতি বিজড়িত কপালকুন্ডলা মন্দির। যেতে পারেন মোহনায়। রসুলপুর নদী যেখানে বঙ্গোপসাগরে মিশছে, সেখানে যেতে পারেন। এছাড়া রয়েছে পেটুয়াঘাটের মৎস্যবন্দরে।


কলকাতা থেকে ৪ নং জাতীয় সড়ক ধরে যেতে হবে বাঁকিপুট। দিঘা, কাঁথি পেরিয়ে বাঁকিপুট। কাঁথি থেকে বাঁকিপুট প্রায় ১৩ কিলোমিটারের পথ। ট্রেনে গেলে আপনাকে নামতে হবে কাঁথিতে৷ সেখান থেকে রিকশা বা টোটোয় চেপে পৌঁছে যান বাঁকিপুট। বাঁকিপুটে রাত কাটার জন্য ট্যুরিস্ট লজ, হোটেল পেয়ে যাবেন। সারাবছরই বাঁকিপুটের আবহাওয়ার থাকে মনোরম, তাই বছরের যেকোনও সময় পৌঁছে যাওয়া যায় নিরালা এই বাঁকিপুটে সৈকতে। 

Journalist Name : প্রিয়শ্রী

Related News