শীত এলেই সর্দি-কাশি বেড়ে যায়। কারও আবার ঠান্ডায় অ্যালার্জি থাকে। সে কারণে হঠাৎ হঠাৎ হাঁচি-কাশি শুরু হয়ে যায়।যেহেতু শীতের সময়ে বায়ুদূষণ বেড়ে যায়, নাকে ধুলোও যায় বেশি। তাই এ সময়ে হাঁচি-কাশির ব্যাপারে একটু সতর্ক থাকা জরুরি।
নাকের অভ্যন্তরে অবস্থিত চুল ঝাঁটার মতো কাজ করে। আমরা যখন নাক দিয়ে বাতাস গ্রহণ করি তখন নাকের চুলগুলো ধুলিকণা, ফুলের রেণু, ধাতব কণা ইত্যাদি পদার্থকে আটকে দেয় এবং সাথে ধরে রাখে।
নাকের চুল পার হয়ে যখন কোনো অস্বস্তিকর ধুলা, ফুলের রেণু, ঝালের গুঁড়া বা অন্য কোনো উপাদান নাকের ভেতরে প্রবেশ করে তখন আমাদের হাঁচি হয়। ঝাঁঝাঁলো বা কড়া গন্ধ থেকেও হাঁচি হতে পারে। আসলে আমাদের যে কোনো বস্তুই যদি নাকের ভেতরে উত্তেজনা বা সুড়সুড়ি সৃষ্টি করে তবেই আমাদের হাঁচি হয়। নিয়মিত কয়েকটি জিনিস অনুসরণেই কিছুটা মুক্তি পাওয়া যায়।
১) দারুচিনি-পানি
দারুচিনি যে কেবল রান্নার স্বাদ বাড়াতেই ব্যবহার করা হয় এমন নয়, ঠান্ডা লাগা প্রতিরোধেও এটি কাজ করে। দারুচিনি এমনিতেই প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উৎসও এই দারুচিনি। গরম পানিতে কয়েক টুকরো দারুচিনি ফেলে তা ফুটিয়ে পান করুন। সাইনাস ও মাইগ্রেনের সমস্যাও কমিয়ে আরাম দেয় এই পানীয়।
২) মরিচ চা
পিপারিন থাকায় গোল মরিচ শরীরের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ায়। শুধু তাই-ই নয়, গোল মরিচ অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টও। গলা বসে যাওয়া, নাক বন্ধ ইত্যাদি সমস্যা থেকে আরাম যেমন দেয়, তেমনই ঠান্ডার সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতারও জোগান দেয় এই গোল মরিচ। তরিতরকারিতে মরিচ দেওয়া ছাড়াও শীতে চায়ের সঙ্গে মিশিয়ে নিন এই গোল মরিচ। প্রতি দিন মরিচ চা খেলে শীতে সুস্থ থাকবে শরীর। ভাল ফল পেতে এতে কিছুটা মধু মেশাতে পারেন।
৩) আদা, লেবু ও মধু
আদা যে সর্দি-কাশির মতো অসুখে কাজে আসে, তা অনেকেরই জানা। আদায় থাকা জিঞ্জারল, জিঞ্জারন প্রভৃতি উপাদান অ্যান্টিইনফ্লেমটরি ও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। ঠান্ডা লাগা থেকে বাঁচতে খুবই কাজে আসে আদা। এক কাপ পানিতে আদা কুচি ফেলে তা ফুটিয়ে নিন। এতে যোগ করুন লেবুর রস ও মধু। লেবু ও মধু দুই-ই প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। নিয়ম করে খালি পেটে এই পানীয় খেলে শীতের অসুখের হাত থেকে তো বাঁচবেনই, এ ছাড়া শরীরে জমে থাকা টক্সিন দূর করতেও এটি অত্যন্ত কার্যকর।
৪) আমলকি
আমলকি খান নিয়মিতভাবে। কাঁচা আমলকি সারা বছর পাওয়া যায় না তাই শুকনো আমলকি ভিজিয়ে তার রস খেতে পারেন। আমলকি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। সর্দি-কাশির প্রবণতা কমায়। দিনে তিনবার আমলকির রস খান। উপকার মিলবে।