রোগের রামবাণ 'কালমেঘ',জানুন কালমেঘের গুণ

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

কালমেঘ দীর্ঘকাল ধরে চীন ও ভারতীয় আয়ুর্বেদিক চিকিত্‍সায় ব্যবহার হয়ে আসছে। আয়ুর্বেদিক ওষুধ হিসাবে আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এটি সবুজ চিরতা নামেও পরিচিত। কালমেঘ একটি ভেষজ উদ্ভিদ। কালমেঘ পাতার উপকার প্রচুর। এর অন্য প্রচলিত নাম আলুই।

সাধারণ সর্দি ও জ্বরে কালমেঘ ব্যবহার করা হয়। কারণ, এই ভেষজ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করে। এছাড়াও কালমেঘ পেট সংক্রান্ত অনেক রোগের চিকিত্‍সাতেও সক্ষম।

কালমেঘ উদ্ভিদ ভারতের উত্তরাঞ্চলের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গেও ভালো পরিমাণে পাওয়া যায়। এর স্বাদ তিক্ত। তা সত্ত্বেও, কালমেঘের বৈশিষ্ট্যের কারণে, এটি খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে এই ভেষজটিতে এতটাই তিক্ততা রয়েছে যে একে king of bitter-ও বলা হয়।

যে কোনও রকম জ্বর বা ক্রনিক ফিভার বা ভাইরাল ফিভার আমাদের শরীরকে খুব দুর্বল করে দেয়, এছাড়া এই সমস্ত রকম জ্বর আমাদের লিভারকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। কালমেঘ পাতার রস (Kalmegh Pata) শারীরিক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে। এছাড়া জ্বরের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত লিভারকেও ঠিক করতে সাহায্য করে। এছাড়া এই পাতা ডেঙ্গু বা ম্যালেরিয়া রোগের প্রতিরোধক (Kalmegh Pata Benefits) হিসেবেও কাজ করে। আরও অনেক গুণ রয়েছে কালমেঘের। জেনে নিন সেগুলি কী কী-

লিভারের সমস্যা নিরাময়ে- লিভারের সমস্যায় যাঁরা ভুক্তভোগী, তাঁদের জন্য অবর্থ ওষুধ কালমেঘ পাতার রস। এটিতে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং হেপাটোপ্রোটেক্টিভ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। লিভারের কোষের ক্ষয়ক্ষতি রোধে কালমেঘ পাতার রস কার্যকরূ। এটি দীর্ঘস্থায়ী হেপাটাইটিস বি ভাইরাল সংক্রমণের জন্যও কার্যকর হতে পারে। লিভার সম্পর্কিত যে কোনও সমস্যার সমাধানে প্রাকৃতিক ওষুধের কাজ করে এটি।


ইনফ্লুয়েঞ্জা মোকাবিলায় সাহায্য করে-সাধারণ জ্বরের প্রাকৃতিক প্রতিকারের কালমেঘ পাতার উপকারিতা রয়েছে। এছাড়াও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করতে, প্রদাহ কমাতে, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সুরক্ষা প্রদান করতে, পেটের সাথে সম্পর্কিত সমস্যার জন্য কালমেঘ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কালমেঘের ব্যবহারের ফলে পেটের গ্যাস, বদহজম, পেটের কৃমি ইত্যাদি দূর হয়।

ঠাণ্ডা লাগা থেকে বাঁচাতে-অনেকেরই বছরভর ঠাণ্ডা লাগার ধাত থাকে। গরমে ঘাম জমে সর্দি লেগে যায়। এই সমস্যার সমাধানেও কালমেঘ পাতার প্রচুর উপকারিতা রয়েছে। এর মধ্যে থাকা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং ইমিউনোমোডুলেটরি বৈশিষ্ট্য এক্ষেত্রে কাজে লাগে। নাক থেকে ক্রমাগত জল ঝরলে কালমেঘ পাতার রস খেলে উপকার পাওয়া যায়। হালকা জ্বর, গলা ব্যাথা, সর্দির সমস্যাতেও প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে কালমেঘ পাতার রস খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। বিশেষত শিশুদের ক্ষেত্রে এটি খুবই উপকারী। টনসিলের সমস্যা কারও কারও ক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী অস্বস্তির কারণ হয়ে যায়। খেতে পারেন না। গলায় ইনফেকশন হয়ে যায় অনেকের। এক্ষেত্রেও কালমেঘ পাতা উপকারী বন্ধুর (Health Benefits of Kalmegh Pata) ভূমিকা পালন করে।

প্রদাহজনিত রোগ সারাতে সাহায্য করে-কালমেঘ পাতার উপকারিতা (Kalmegh Pata Benefits) এতটাই যে এটি আলসারেটিভ কোলাইটিসের মতো জটিল রোগ সারিয়ে দিতে পারে। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী রোগ যা বৃহদন্ত্রের প্রদাহ সৃষ্টি করে। ইমিউন সিস্টেমের ভুল কাজ করার কারণে এটি ঘটে।

কালমেঘের কিছু অসুবিধা

যদি কালমেঘ সঠিক উপায়ে গ্রহণ করা হয় তবে এটি উপকারী, তবে এর অতিরিক্ত ব্যবহার কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে, যেমন. 

১.কালমেঘের নির্যাস অতিরিক্ত গ্রহণ করলে অলসতা হতে পারে।

২. কিছু লোকের মধ্যে কালমেঘের কারণে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া হতে পারে, ছোটখাটো ত্বকের ফুসকুড়ি থেকে শুরু করে উচ্চ মাত্রার কারণে অ্যানাফিল্যাক্সিস নামক একটি সম্ভাব্য অবস্থা পর্যন্ত হতে পারে।

৩. ​​এটি গ্রহণ করলে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া হতে পারে।

৪. এর থেকে গর্ভপাতের সম্ভাবনাও রয়েছে।

৫. এটি ডিম্বস্ফোটনকে বাধা দেয় এবং শুক্রাণুর সংখ্যা কমায়। গবেষণায় দেখা গেছে যে এটি প্রোজেস্টেরন উত্‍পাদনে বাধা দেয়।

আপনি যদি এই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলির মধ্যে কোনটি অনুভব করেন তবে দেরি না করে আপনার ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।

Journalist Name : Sampriti Gole

Related News