রাজ্যে ডেঙ্গির আক্রমণ বাড়ছে, ডেঙ্গির লক্ষণগুলি কি কি ?

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

বর্ষার শুরু হতেই ফের ডেঙ্গির দাপট! রাজ্যে ক্রমশ ভয়াবহ আকার নিচ্ছে ডেঙ্গি! জেলায় জেলায় বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। ইতিমধ্যে ডেঙ্গির প্রকোপে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।

এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গি হয়। ডেঙ্গিতে উচ্চ তাপমাত্রায় জ্বর, মাথাব্যথা, পেশী এবং জয়েন্টে ব্যথা হয়। ডেঙ্গি হলে শরীরে প্লেটলেটের মাত্রা দ্রুত কমতে থাকে। এটা হলে রোগীকে অবিলম্বে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে, অন্যথায় সময়মতো চিকিৎসা না পেয়ে রোগীর মৃত্যুও হতে পারে। 

রাজ্যের ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে গত বৃহস্পতিবার নবান্নে একদফা বৈঠকেও বসেছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী ও স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারাও। রাজ্যের ডেঙ্গি পরিস্থিতি মোকাবিলায় আট দফা রণকৌশলও স্থির করা হয়েছে নবান্নের তরফে।

ডেঙ্গি এবং ম্যালেরিয়া টেস্ট কখন করতে হবে, তা নিয়ে নির্দিষ্ট গাইডলাইন প্রকাশ করল রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। এই মর্মে নির্দেশিকা পাঠানো হল, রাজ্যের সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালগুলির প্রিন্সিপাল এবং সমস্ত জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের৷

ডেঙ্গি ভাইরাস মশা, বিশেষ করে এডিস ইজিপ্টি দ্বারা বাহিত হয়। এইসব মশা ভোরবেলা এবং মাঝ রাতের পর কমড়ায়। এক কামড়েই সংক্রমণ হতে পারে!

মেডিক্যাল রেকর্ডে দেখা গেছে 1779 সাল থেকে ডেঙ্গি জ্বরের অস্তিত্ব আছে। তবে, বিংশ শতাব্দীতেই রোগ ছড়ানো ও তার কারণ সম্পর্কে জানা যায়।


বিশেষ করে জমা জলেই ডেঙ্গির মশার আঁতুরঘর। তাই কোথাও জল জমতে দেওয়া যাবে না। ছাদ থেকে শুরু করে ঘরের আনাচে কানাচে, নর্দমা, বাড়ির চারিধার পরিষ্কার রাখতে নির্দেশ। তবে ঘরে মশারি টানানোর কথা প্রতিবারই এসময় মনে করিয়ে দেয় স্বাস্থ্য দফতর। এনিয়ে রাজপথে মশারি সহ নেমে সচেতনা অভিযান করতে অতীতে দেখা গিয়েছে পুরসভাগুলিকে। বাইশ সালে পুজোর আগে এবং পরে পড়ে থাকা বাঁশের ফাঁক ফোকরেও জল জমেও আতঙ্ক তৈরি করেছিল। যা মূলত ডেঙ্গির মশার বংশবৃদ্ধির জন্য উত্তম জায়গা। 

ডেঙ্গি জ্বর সঠিকভাবে চিকিৎসা করা গেলেও, চিকিৎসা না করালে প্রাণঘাতী হতে পারে। তাই, গোড়াতেই রোগ নির্ণয় করতে ডেঙ্গির উপসর্গ জানা গুরুত্বপূর্ণ। আসুন ডেঙ্গির উপসর্গগুলি দেখে নেওয়া যাক।

যারা ডেঙ্গিতে ভোগে তাদের সাধারণত প্রচন্ড জ্বর,মাথা ব্যাথা, বমি বমি করা, পেশী ও গেঁটে ব্যাথা, ত্বকে ফুসকুড়ি হওয়া। 

এইসব উপসর্গ মানেই যে ডেঙ্গি এমন কোন বিষয় না হলেও এইসব উপসর্গ আপনার দেখা দিলে পরীক্ষা করানো বাঞ্ছনীয়। তবে, এগুলি হল রোগের গোড়ার দিকের উপসর্গ। কিছু ব্যক্তি এগুলি উপেক্ষা করেন, ফলে ডেঙ্গি ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে, যেখানে উপসর্গগুলি হল:

১. রক্তপাত

২. রক্তে কম প্লেটলেট// অ্যানোফেলিস মশা

৩. রক্তের প্লাজমা লিকেজ

৪. কম রক্তচাপ।

মনে রাখতে হবে যে ডেঙ্গি হল ভয়ঙ্কর রোগ এবং গোড়ার দিকে উপসর্গ দেখা দিলে ডাক্তার দেখাতে হবে। রোগ নিরাময়ের থেকে সর্তক থাকা ভালো।

বর্তমানে ডেঙ্গুর পজিটিভিটি রেট ১.২%। নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা এবং হুগলি নিয়ে বেশি উদ্বিগ্ন নবান্ন। পাশাপাশি, বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলা, আলিপুরদুয়ার এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার কয়েকটি জায়গাতেও বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। নদিয়ায় এক সপ্তাহে আক্রান্ত ২৯৩ জন৷ উত্তর ২৪ পরগনা ১৪৩ জন এবং হুগলিতে ৪৩ জন৷ কলকাতায় ২৯ তম সপ্তাহে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৩০ জন।

* বাড়ীতে যেন জল/বৃষ্টির জল জমে না থাকে। বৃষ্টির জমা জলই ডেঙ্গুর আঁতুড়ঘর,

* বাড়ীর চারপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে,

* মশারী খাটিয়ে শুতে হবে,

* ফুল হাতা পোষাক পড়তে হবে, অর্থাৎ শরীরের অধিকাংশ অংশ যেন ঢাকা থাকে।

Journalist Name : প্রিয়শ্রী

Related News