ভারতীয় ফুটবল জগতে ইন্দ্রপতন, মারা গেলেন প্রাক্তন ফুটবলার সুভাষ ভৌমিক

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

তারা খসা নিয়ে তুমি স্বপ্ন দেখো এমন
আমি শুধু চাইনা দেখতে তারকা দের এমন পতন
বছরের শুরু থেকেই একের পর এক কিংবদন্তিদের মারা যাওয়ার খবর বিব্রত করে চলেছে বাঙ্গালীদের, সমস্ত কিংবদন্তিদের মধ্যে একজন হলেন ভারতীয় ফুটবল জগতের অত্যন্ত পরিচিত প্রাক্তন ফুটবলার সুভাষ ভৌমিক।আজ ভোর ৩.৩০ নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সুভাষ। ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান এবং ভারতীয় দলের প্রাক্তন ফুটবলার এবং আশিয়ান কাপজয়ী কোচ সুভাষ ভৌমিক দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। সুগার এবং কিডনির অসুখে ভুগতে থাকা সুভাষকে প্রায় সাড়ে তিন মাস নিয়মিত ডায়ালিসিস করাতে হচ্ছিল। প্রায় বছর কুড়ি আগে বাইপাস সার্জারি হয়েছিল তাঁর। সপ্তাহ দুয়েক আগে বুকে সংক্রমণ নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন একবালপুরের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে।
সুভাষ ভৌমিকের ভবিষ্যৎ চিকিৎসার পরিকল্পনা নিয়ে একটি জরুরী সভা হয় শুক্রবার বিকেলে, রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের ঘরে। সভায় উপস্থিত ছিলেন ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়, বিকাশ পাঁজি, মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য, বিদেশ বসু, মানস ভট্টাচার্যের মতো প্রাক্তন ফুটবলাররা। এ ছাড়া ছিলেন আইএফএর সভাপতি অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়, মোহনবাগানের অর্থসচিব দেবাশিস দত্ত, মহমেডানের কার্যকরী প্রেসিডেন্ট কামারউদ্দিন, ইস্টবেঙ্গল শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার। একটি বেসরকারি হাসপাতালের ডিরেক্টর সহ মেডিকেল টিম এবং তাঁর ছেলে অর্জুন ভৌমিককেও ডাকা হয়েছিল। ওই জরুরী সভায় ঠিক হয়েছিল, আইএফএ সহ কলকাতা তিন প্রধান পাশে দাঁড়াবে সুভাষের। পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসও। ইতিমধ্যে প্রাক্তন ফুটবলার সুভাষ ভৌমিকের চিকিৎসার জন্য চল্লিশ হাজার টাকার ওষুধ ক্রীড়ামন্ত্রীর তরফ থেকে দেওয়া হয়েছিল।সুভাষ ভৌমিকের খেলোয়াড় হিসেবে তার সাফল্য এবং দলের কোচ হিসেবে সাফল্যের দিকে তাকালে দেখা যাবে উজ্জ্বল একটি দিক।
            
ক্লাবের জার্সি গায়ে সাফল্য
১৯৬৯ সালে সুভাষ ভৌমিক ইস্টবেঙ্গলে যোগ দেন। একটি মরসুম খেলেই পরের মরসুমে তিনি যোগ দেন বিপক্ষ ক্লাব মোহনবাগানে। ১৯৭৩ সালে আবার ইস্টবেঙ্গলে ফিরে আসেন তিনি। ১৯৭৬ সালে ফের মোহনবাগানে যোগ দেন সুভাষ ভৌমিক। ১৯৭৫ সালে কলকাতায় আইএফএ শিল্ডের ডার্বি ম্যাচে ইস্টবেঙ্গল বনাম মোহনবাগান ম্যাচে লাল হলুদ ৫-০ গোলে হারায় সবুজ মেরুণকে। সেই সময়ে ইস্টবেঙ্গলে অন্যতম সফল প্লেয়ার ছিলেন তিনি। ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত তিনি মোহনবাগানেই খেলেন। ১৯৭৯ সালে তিনি ফিরে আসেন লাল হলুদে। সেখানে খেলেই তিনি প্লেয়ার হিসাবে অবসর নেন।
দেশের হয়ে সাফল্য
শুধু মাত্রে ক্লাবের জার্সি গায়ে নয়, দেশের হয়েও সুভাষ ভৌমিকের কেরিয়ার ছিল সাফল্যে ভরা। দেশের হয়ে ৬৯টি ম্যাচে অন্তত ৫০টি গোল করেছেন তিনি। ১৯৭০ সালে ভারতীয় ফুটবল দল Asian Games- ব্রোঞ্জ পায়। সেই দলে ছিলেন সুভাষ ভৌমিকও। 

কোচ হিসেবে সুভাষ ভৌমিক
ফুটবলার হিসাবে অবসর নিলেও, কোচ হিসাবে ময়দানে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেন সুভাষ ভৌমিক।  ময়দানের অন্যতম একজন সফল কোচ হিসাবে তাঁকে মানা হয়। ১৯৯৯ থেকে ২০০০ এবং ২০০২ থেকে ২০০৫ সাল দুইবারে ইস্টবেঙ্গল তাঁর কোচিংয়ে বিজয়রথ ছুটিয়েছিল। আইএফএ শিল্ড, ডুরান্ড কাপ, কলকাতা লিগ, ন্যাশনাল ফুটবল লিগ জিতেছিল লালহলুদ। সবথেকে উল্লেখযোগ্য সাফল্য ২০০৩ সালে আশিয়াল কাপ জেতে ইস্টবেঙ্গল। সেই সময় কোচ ছিলেন সুভাষ ভৌমিক। ইস্টবেঙ্গল ছাড়াও তিনি কোচিং করিয়েছেন মহামেডান, সালগাওকার, মোহন বাগান, চার্চিল ব্রাদার্স এর মতো প্রথমসারির ক্লাবগুলিতে।কিন্তু সব শেষ করে দিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন সুভাষ। আর ফিরে আসবেন না ময়দানের ভোম্বলদা। 

Journalist Name : Tamojoy Shrimany

Tags:

Related News