দুর্নীতিমুক্ত, হাসিখুশি দেশ ফিনল্যান্ড

banner

#ফিনল্যান্ড:

ফিনল্যান্ড মানেই মন খুশির জায়গা। পশ্চিমে বোথনিয়া উপসাগার এবং এস্তেনিয়া জুড়ে বালটিক সাগর ও উপসাগর দ্বারা সংজ্ঞায়িত এই ফিনল্যান্ড দেশ। এই দেশের রাজধানী হল হেলসিঙ্কি আর বৃহত্তম ও প্রতিবেশী  শহর হল এসপু। এখানকার অর্থাৎ ফিনল্যান্ডের জনসংখ্যা প্রায় ৫.৫ মিলিয়ন, সাথে ৩৩৮,৪৫৫ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে। এখানকার জনগোষ্ঠী ফিনস নামে পরিচিত। এখানকার দক্ষিণ জলবায়ু আর্দ্র মহাদেশীয় ও উত্তরের জলবায়ু বোরিয়াল। এখানকার হ্রদের সংখ্যা প্রায় ১৮০,০০০টিরও বেশি, অর্থাৎ দুই লক্ষের কাছাকাছি, তাই এইদেশকে হ্রদের দেশও বলা হয়ে থাকে। হেলসিঙ্কিতে হ্রদের সংখ্যা এতটাই বেশি যে তার আরেক নাম “ব্লু সিটি”। ফিনল্যান্ডের রাষ্ট্রপতির হলেন সাউলি নিনিস্টো এবং প্রধানমন্ত্রী সানা মারিন।
১৯৫০ দশক পর্যন্ত ফিনল্যান্ড মূলত কৃষিপ্রধান দেশ ছিল এবং পরবর্তীকালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই দেশ দ্রুত শিল্পায়ন ও উন্নত অর্থনীতির বিকাশ ঘটায়। ফিনল্যান্ড প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে প্রথম স্থান অধিকার করে ও ভঙ্গুর রাষ্ট্র সুচকে ২০১১-১৬ সালের মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে স্থিতিশীল দেশ হিসেবে বিবেচিত হয়।
২০১৯ সালে চতুর্থবারের মতো আবারও বিশ্বের প্রথম সবচেয়ে সুখী স্থান হিসেবে গণিত হয়ছিল ফিনল্যান্ড। এই দেশে বলতে গেলে সব কিছুই বিনামুল্যেতে পাওয়া যায়। এই দেশের বসবাসকারীদের খাদ্য থেকে শুরু করে পড়াশোনা পর্যন্ত সমস্তকিছুর দায়িত্ব নেয় ফিনল্যান্ড সরকার। ফলে তাদের কোনোকিছুর জন্য চিন্তা করতে হয় না। আর তার একমাত্র কারণ হল এখানকার নিম্ন জনবসতি। এখানকার বসবাসকারীরা তাদের দেশের নিয়ম কানুন নিয়ে যথেষ্ট সচেতন। এখানে কেউ স্পিড লিমিটের উপর গাড়ি চালালে, সেই গাড়ি চালককে মোটা অঙ্কের ফাইন দিতেই হয়। আর এই ফাইন নির্ভর করে সেই গাড়ি চালকের আয়ের উপর। এছাড়া এখানকার মানুষেরা ভীষণ খেলাধুলাপ্রিয়, আর তার মধ্যে একটি জনপ্রিয় প্রতিযোগিতা হল এখানকার সব স্বামীকে তাদের স্ত্রীদের কাঁধের উপর নিয়ে দৌড়াতে হয় এবং প্রতিযোগিতা শেষে যে বিজয়ী হয় তাকে তার স্ত্রীয়ের ওজন সমান নেশা-জাতীয় পানীয় পুরস্কার দেওয়া হয়ে থাকে। আরও একটি খেলা হল মশা মারা, প্রতি রবিবার এখানকার মানুষেরা নিজেদের কলোনিতে মশা মারার প্রতিযোগিতা করে এবং যে বেশি মশা মারে তাকে “কিং অফ মস্কিউটো” হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়ে থাকে।

এখানকার মানুষেরা প্রচুর পরিমাণে কফিপ্রিয়। কাপেচিনো, লাটে থেকে শুরু করে প্রায় ৭০ রকমের কফি পাওয়া যায়। এখানে একজন মানুষ সারা বছরে ১২কিলো কফি শেষ করার ক্ষমতা রাখে। এর সাথে তারা মিষ্টিপ্রিয়ও বটে। সেলমিয়াকি নামে একধরনের চকলেট-ক্যান্ডি পাওয়া যায়, যা বিভিন্ন শুকনো ফলের সংমিশ্রণে তৈরি হয়। এখানকার মানুষেরা খুব সঙ্গীতপ্রিয়ও হয়ে থাকে, এখানকার প্রত্যেক বাড়িতে একজন করে সঙ্গীতজ্ঞ দেখতে পাওয়া যায়। এখানকার প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই সৌনা থাকে, সৌনা হল একটি ছোটো ঘর, যেখানে উচ্চ তাপমাত্রায় “বডি থেরাপি” চলে।
ফিনল্যান্ড হাসি-খুশির দেশ বলার পিছনে মূল কারণ হল এটি একটি দুর্নীতিমুক্ত দেশ। ফলে এখানে কখনও দ্বন্দ্ব-বিদ্বেশ চোখে পড়ে না। সবকিছুকে পিছনে ফেলে এখানকার মানুষেরা আনন্দ-খুশিকেই বেছে নিয়ে জীবনযাপন করে চলে।

Journalist Name : Swarnalye Paul

Tags:

Related News