Flash news
    No Flash News Today..!!
Monday, May 6, 2024

বাক্‌ স্বাধীনতার অধিকার আদায়ে তথ্যের অধিকার আইন কি প্রয়োজনীয়?

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী স্বীকৃত মৌলিক অধিকার গুলির মধ্যে একটি হলো মতামতের স্বাধীনতা ফ্রিডম অফ স্পিচ। কিন্তু স্বাধীনতার বহু পরেও ১৯২৩ সালে ইংরেজ আইন “সরকারি গোপনীয়তা আইন” সেই অধিকার কে খন্ডন করে ছিল। ফলস্বরূপ ২০০৫ সালের ১৫ ই জুন ভারতের সংসদে “তথ্যের অধিকার আইন” বা “Right to Information” আইনের বিল পাস হয় এবং অক্টোবর মাস থেকে তা সারা দেশে চালু হয়ে যায়। 

যে কোন ভারতীয় বিশেষ কিছু ক্ষেত্র বাদে (যা দেশের নিরাপত্তার সাথে জড়িত) যে কোন বিষয়ে জানার জন্য আবেদন করতে পারেন। আরেকটি এই অ্যাক্টের অধীনে যে প্রশ্নের উত্তর ৩০ দিনের মধ্যে দেওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্ত ক্ষেত্র অধিকারীর জীবন ওই তথ্যের উপর নির্ভর করলে তা ন্যূনতম ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেওয়ার নিয়ম। প্রতিদিন গড়ে অন্তত ৪৮০০ টি RTI এর আবেদন জমা হয় বছরের হিসাব করে তা দাঁড়ায় ১৭৫০০০০০ টি।

ভারতের সরকারিভাবে কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকার উভয়ই স্তরে আবেদন করা যায়। প্রতিটি সরকারি দপ্তরে প্রয়োজনীয় পাবলিক ইনফরমেশন অফিসার বা “PIO” থাকেন যিনি RTI আবেদনে কাজের দায়িত্বে থাকেন। কেন্দ্রীয় সরকারী তরফে এই পদ “CPIO” বা সেন্ট্রাল পাবলিক ইনফরমেশন অফিসার এবং রাজ্য সরকারি তরফে তা “SPIO” বা স্টেট পাবলিক ইনফরমেশন অফিসার নামে পরিচিত। সহজভাবে বলতে গেলে যে সমস্ত সরকারি ক্ষেত্রগুলি রাজ্য সরকার দ্বারা পরিচালিত হয় সেই বিষয়ে আবেদন করলে “SPIO” এর কাছে চিঠি লিখে আবেদন করতে হবে এবং একইভাবে কেন্দ্রীয় সরকার পরিচালিত ক্ষেত্র আবেদন করতে হবে “CPIO”-এর কাছে। যদিও এই আইন মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে না তবে এই আইন বাক স্বাধীনতার অধিকার রক্ষায় সাহায্য করে।



আর টি আই-এর জন্য আবেদন করতে হলে কোর্ট ফি দিতে হয় এবং পিছিয়ে পড়া শ্রেণি তা বিনামূল্যে করতে পারেন। কিন্তু কি প্রয়োজন এর? তথ্য জানার অধিকার আইন প্রয়োজন হয় নাগরিকদের কাছে সঠিক তথ্য প্রকাশ করতেও জালিয়াতি রুখতে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, কোন গ্রাম পঞ্চায়েত অঞ্চলে সড়ক বানানোর কাজে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে সরকারি তরফে। নির্ধারিত আর্থিক মূল্য দেওয়া হলেও সড়ক নির্মিত হয়নি। এই সূত্রে ওই অঞ্চলের সড়কের কাজ কবে শুরু হবে কারা সেই টেন্ডার নিয়েছে তা জানতে আরটিআই করা যেতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে এই সমস্ত বিষয়ে সরকারিভাবে কাজ শেষ হয়েছে তার নথি থাকলেও আদপে কিছুই হয়নি। মূলত সাংবাদিকরা তথ্যের অধিকার আইন মারফত জালিয়াতির সংবাদ প্রকাশ করে থাকে।

সর্বোপরি বলা যায় গণতান্ত্রিক দেশে তথ্যের সঠিক প্রকাশ নাগরিক ও সরকারের মধ্যে বিশ্বাসের সম্পর্ক মজবুত করে। আবার পরিসংখ্যান হিসেব স্বচ্ছতার বিচার করে। বাকস্বাধীনতা ও দেশের উন্নতির স্বার্থে তথ্যের অধিকার আইন কার্যতই শক্তিশালী। প্রথম আবেদনে সাড়া না পেলে বা ৩০ দিনের মধ্যে উত্তর না এলে আবেদনকারী ফাস্ট আপিল করতে পারে যার ফলস্বরুপ কর্মরত অফিসারকে উত্তর না দেওয়ার কারণ দর্শাতে হয় ক্ষেত্রবিশেষে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ এর আওতাভুক্ত করা যায়। বাক স্বাধীনতার অধিকার এর ভিত্তিতে নাগরিকদের সমস্যা তুলে ধরতে তথ্যের অধিকার আইন সাংবাদিকতা পেশায় বহুল প্রচলিত এক মাধ্যম রুপে গৃহীত।

Journalist Name : Satarupa Karmakar

Related News