বর্তমানে প্রতিটি মানুষই কিছুনা কিছু শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। যার জন্য দায়ী আমাদের অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও খাওয়া দাওয়া। যার কারণে দেখা দিচ্ছে মোটা হওয়া কিংবা শারীরিক নানান নানান সমস্যা। আর এসব থেকে রেহাই পেতে অনেকেই এক্সাসাইজের সাথে বেছে নিয়েছেন গ্রিন টি খাওয়ার অভ্যেস। এতে রয়েছে হাজারের ও বেশি উপকার। যেহেতু গ্রিন টি ইজিসিজির মতে পুষ্টিতে সমৃদ্ধ। তাই ওজন হ্রাসের পাশাপাশি এটি আমাদের উজ্জ্বল ত্বক ও চুল পেতেও সাহায্য করে, এছাড়াও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতেও সক্ষম।
তবে আপনি কি জানেন যে আপনি যদি এই চায়ের সঙ্গে আরও কয়েকটি উপাদান যোগ করেন তবে এটি আরও বেশি উপকারী হতে পারে। যদি আপনি এখনও অবধি না জেনে থাকেন, তবে আপনার এই গুরুত্বপূর্ণ পানীয়গুলি সম্পর্কে জানা উচিত। যেমন-
মধু-
যারা গ্রিন টি শুধু খেতে পারেন না এবং দিনে একাধিক বার পান করেন তারা চিনির পরিবর্তে গ্রিন টি তে দিন মধু। এটি প্রাকৃতিক চিনি হিসাবে কাজ করে। যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো। পাশাপাশি মধুতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এবং খনিজ যা আপনাকে সুস্থ রাখবে ও চকচকে উজ্জ্বল ত্বক ও চুল সরবরাহ করে।
লেবুর রস-
আমরা সকলেই জানি লেবু ভিটামিন সি এর একটি দুর্দান্ত উৎস। তাই করোনা কালে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে চিকিৎসকরা বার বার লেবুর রস খাওয়ারই পরামর্শ দিয়েছেন। তবে শুধু লেবু না খেয়ে গ্রিন টিতে মিশিয়ে পান করুন। উপকারীতা পাবেন দ্বিগুন হারে। গবেষকদের মতে, লেবুর রস গ্রিন টিতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলিকে বাড়িয়ে তোলে যা মানবদেহের জন্য বেশ উপকারী। তবে গরম চায়ে না মিশিয়ে কিছুটা ঠান্ডা করার পরে লেবুর রস যোগ করতে পারেন।
আদা-
সারাদিনের ক্লান্তি মেটাতেও অনেকেই শেষ বেলায় বেছে নেন গ্রিন টি। কারণ গ্রিন টি শুধুমাত্র ওজন হ্রাসে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তা নয় এটি স্ট্রেস দূর করতেও সাহায্য করে। তবে এতে যদি আদার রস মিশিয়ে নেওয়া যায় তবে উপকারিতা মিলবে দ্বিগুন হারে। কারণ আদা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্যও সমান উপকারী। আদা মিশ্রিত গ্রিন টি মিশিয়ে পান করা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে তোলে। এছাড়াও ক্যানসরের মতো মারাত্মক রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এবং শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় দূর করতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আদার রস সমৃদ্ধ গ্রিন টি ডায়াবেটিস, পিরিয়ড এবং হাঁপানির জন্য ভালো বলে বিবেচিত হয়।
গোলমরিচ বা দারুচিনি গুঁড়ো-
সারা দিনে একাধিক বার চা খেলে অনেক সময় খিদে নষ্ট হয়ে যায়। তাই গ্রিন টি খেলে তার সাথে মিশিয়ে নিন গোলমরিচ বা দারুচিনি গুঁড়ো।
একদিকে, গোলমরিচ যেমন আমাদের হজম ক্ষমতা ভাল রাখে এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। অন্যদিকে, দারুচিনি ওজন নিয়ন্ত্রণে বেশ সহায়ক। যে কারণে অনেকে পুদিনা এবং দারচিনি মিশ্রিত গ্রিন টি পান করার পরামর্শ দেন।
পুদিনা পাতা-
গ্রিন টি-তে পুদিনা পাতা দিয়ে খেলে অনেক দুরারোগ্য ব্যাধি দূর হয়। এছাড়া, এটি পান করলে পরিপাকতন্ত্র সুস্থ থাকে। তাই অনেকেই গ্রিন টির সাথে পুদিনা পাতা মিশিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেন। যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
তবে এই সব উপকারিতা পেতে সঠিক সময়ে সঠিক নিয়মে খেতে হবে গ্রিন টি। তাহলে জেনে নিন গ্রিন টি খাওয়ার সঠিক সময়-
চিকিৎসকদের মতে গ্রিন টি কেবল তখনই আপনার উপকার করবে যখন আপনি সঠিক সময়ে এটি গ্রহণ করবেন। অনেকেই রাতে খাওয়ার পরে কিংবা শুতে যাওয়ার কিছুক্ষন আগে গ্রিন টি পান করেন কিংবা সকালে খালি পেটে খেয়ে থাকেন। আজ থেকেই তা বন্ধ করুন। এছাড়াও আপনি যদি কোনও ধরণের ওষুধ খান তবে ওষুধ খাওয়ার সঙ্গে এটি পান করবেন না, কারণ এটি আপনার পক্ষে ক্ষতিকারক। ভুল সময়ে গ্রিন টি আপনার দেহে আয়রন এবং তামা জাতীয় পুষ্টির ঘাটতি তৈরি করতে পারে। তাই গ্রিন টির সঠিক উপকারিতা ভোগ করতে রাতের খাবারের দুই ঘন্টা আগে কিংবা খাওয়ার দুই ঘন্টা পরেও আপনি গ্রিন টি পান করতে পারেন।