দিল্লির বায়ু দূষণের মাত্রা ক্রমশই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। যার কারণে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এনভি রামানা। দূষণ রোধে জরুরি পদক্ষেপ হিসেবে তাই কয়েক দিনের লকডাউনের প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। সারা বিশ্ব যখন করোনা মহামারীর কারণে লকডাউন দেখেছে রাজধানী দিল্লিতে তখন দূষণ রুখতে লকডাউন দেখতে হতে পারে।
শহরের বায়ু দূষণের মাত্রা বাড়ছে, সেই অর্থে দিল্লির এক পড়ুয়া সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করে। প্রধান বিচারপতি এনভি রমানার নেতৃত্বে এক বিশেষ বেঞ্চে মামলার শুনানিতে তিনি কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কাছে জানতে চেয়েছেন এতদিনে দিল্লির বায়ুদূষণ রোধে কি কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই শোচনীয় বাড়ির ভেতরে মুখোশ পড়ে থাকতে হচ্ছে। সরকারকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। অপরদিকে বায়ু দূষণ সূচক ৫০০ থেকে ২০০ কিভাবে করা যেতে পারে সেই প্রশ্নে লকডাউন করা যায় কিনা তা প্রশাসনের কাছে জানতে চেয়েছেন তিনি। তবে স্বল্পমেয়াদী স্তরে লকডাউন কাজে দিলেও দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা সমাধানে উপকৃত করবে না বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন,"সব স্কুল খুলে দেওয়া হচ্ছে, পড়ুয়ারা এর মাঝেই স্কুলে যাচ্ছে যা তাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর।" এ বিষয়ে তাই ১৫ই নভেম্বর থেকে এক সপ্তাহ দিল্লিতে ভার্চুয়াল মাধ্যমে স্কুল করার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সওয়াল জবাবের সময় এদিন আরো কিছু প্রশ্ন উঠে আসে। বাজি নিষিদ্ধ নির্দেশ জারি হলেও দিল্লিতে দিওয়ালিতে দেদার বাজি ফেটেছে। সে সময় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি সূর্যকান্ত।
কেন্দ্র
সরকারের পক্ষে তুষার মেহোতা পাঞ্জাব ও হরিয়ানার কৃষকদের
খড় পোড়ানোর বিষয়ে দৃষ্টিপাত করেন। যা বন্ধ হলে
দিল্লিতে দূষণ কিছুটা কমবে
বলে আশা করেন তিনি।
এই মন্তব্যে ক্ষুব্ধ বিচারপতিরা বলেন কৃষকদের নিশানা
করা ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে যেন
সবেতেই দোষ তাদেরই। বিশেষজ্ঞরা
বলেন দিল্লি দূষণের অন্যতম উপাদান কলকারখানা ও যানবাহনের ধোঁয়া।
দীর্ঘকালীন সময়ের জন্য বায়ু দূষণ কমাতে দূষণ সৃষ্টিকারী বিষয়গুলি শনাক্তকরণের প্রয়োজন বলে মনে করছেন পরিবেশবিদরা। এছাড়াও ঘর পোড়ানোর বিকল্প পথ খুঁজছে পুসা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা যা সেদিন শুনানিতে আদালতে বলেন রাহুল মেহেরা। আদালত জানতে চেয়েছে দূষণ নিয়ন্ত্রণে দিল্লি সরকার কি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চলেছে।
শীর্ষ
আদালত আরো বলে দূষণ
সমস্যা নিয়ে কোন রাজনীতি করা
যাবেনা । দূষণের কোন
রাজনৈতিক রঙ নেই। এটি
সকলের সমস্যা । প্রয়োজনে দিল্লির
পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলিতেও দূষণ বিরোধী পদক্ষেপ
গ্রহণের কথা জানান প্রধান
বিচারপতি। পরবর্তী শুনানির আগে দিল্লির দূষণের
হাল ধরার দিকে জোর
দিয়েছে শীর্ষ আদালতের এই বিশেষ বেঞ্চ।