গত দুবছরের করোনা কালে যেসব রোগের আধিপত্য সবচেয়ে বেড়েছে তার মধ্যে অন্যতম একটি ডায়াবেটিস। আর এর পেছনে থাকা অনিয়মিত জীবন যাপন খারাপ লাইফস্টাইলকেই দায়ী করছেন চিকিৎসা মহল। তাই বর্তমানে ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে বেশির ভাগই তরুণ প্রজন্ম। আর তারা বেশির ভাগ টাইপ-২ ডায়াবিটিসের শিকার। যার ফলে শরীরে ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষগুলো পর্যাপ্ত পরিমানে ইনসুলিন তৈরি করা বন্ধ করে দেয়। যা একজন মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। তাই সময় মতো সাবধান না হলে হারাতে হতে পারে দেহের নানান অঙ্গ। জেনে নিন শরীরে কোন কোন অংশ ডায়াবেটিসে বেশি আক্রান্ত হয়।
১. চোখের দৃষ্টিশক্তি কমে-
ডায়াবেটিস সাধারণত দু-ধরণের হয়। তার মধ্যে যারা টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তারা সঠিক সময়ে সাবধান না হলে দৃষ্টি শক্তি হারাতে পারেন। ডায়াবেটিস চোখের ছোট রক্তনালীর ক্ষতি করতে পারে। এছাড়াও এটি গ্লুকোমা, ছানি এবং ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির ঝুঁকি বাড়ায়। একটা সময় পর চোখ খুব দুর্বল হয়ে যায়।
২. স্নায়ুর ক্ষতি করে-
আপনি যদি টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন তবে তা আপনার স্নায়ুর ক্ষতি এবং ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথির ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয়। এছাড়াও এটি আপনার হাত এবং পায়ের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। যেমন- হাত পা ফোলা ভাব, কাঁপুনি, জ্বালাপোড়া ব্যাথা, অসাড়তার মতো সমস্যা দেখা দেয়।
৩. হার্টের ক্ষতি-
শরীরে ডায়াবেটিসের মাত্ৰা নিয়ন্ত্রণে না রাখলে তা উচ্চ রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয় যা হার্ট অ্যাটাক বা হৃদরোগের ঝুকি বাড়িয়ে তোলে। তাই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে রোজকার ডায়েটে রাখতে হবে সোডিয়াম যুক্ত খাবার।
৪. কিডনি খারাপ-
অতিরিক্ত ডায়াবেটিসের ফলে রক্তে শর্করার মাত্ৰা বেড়ে যাওয়ায় তা সরাসরি কিডনির ওপর প্রভাব ফেলে ও কিডনির কার্য ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। যার থেকে কিডনি অকেজো ও হতে পারে। তাই আগে থেকেই হন সাবধান। খাদ্যভ্যাসে রাখুন তিতো জাতীয় খাওয়ার।
৫. মাড়ি ও দাঁতের সমস্যা বাড়ায়-
যারা টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তারা সুগার নিয়ন্ত্রণে না রাখলে রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যার ফলে মুখের স্বাস্থ্যের অবনতি হয় এবং দাঁত ও মাড়িতে সংক্রমণের ঝুঁকি বারে।
৬. পায়ের আলসার-
অন্যান্য সমস্যার পাশাপাশি ডায়াবেটিসের কারণে শিরায় রক্ত সঞ্চালন খারাপ হওয়া পায়ে আলসারের মতো সমস্যা হতে পারে। এই পায়ের আলসার কখনও কখনও সংক্রমিত হতে পারে। পায়ের আলসার এড়াতে ডায়াবেটিস রোগীদের উচিত তাদের পা পরিষ্কার ও শুকনো রাখা।এছাড়াও পায়ের যত্নে আরামদায়ক এবং হালকা মোজা পরুন। পাশাপাশি পায়ে কোনো ধরনের ক্ষত হলে অবিলম্বে আপনার ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।