রাজ্যের স্কুলগুলির গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি নিয়োগেও দুর্নীতি

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

এবার অনিয়মের অভিযোগ রাজ্যের স্কুলগুলিতে গ্রুপ-সি পদে  নিয়োগের ক্ষেত্রে। রীতিমতো সই জাল করে দেওয়া হয়েছে ভুয়ো নিয়োগ । গ্রুপ-সি নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে এমনই চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট জমা দিল অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জিত কুমার বাগের নেতৃত্বাধীন কমিটি। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, নিয়োগ সংক্রান্ত প্যানেলের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর নিয়ম বহির্ভূতভাবে মোট ৩৮১ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে ২২২ জনের নাম প্যানেল বা ওয়েটিং লিস্ট কোথাও ছিল না। স্কুল সার্ভিস কমিশনের সুপারিশেই তাঁরা নিয়োগ পেয়েছেন এবং সুপারিশের ওই চিঠিগুলিতে জাল বা স্ক্যান করা সই ছিল বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
গ্রুপ-ডি এবং গ্রুপ-সি'র নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগের ভিত্তিতে দায়ের হওয়া মামলায় এর আগেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চ। পাশাপাশি রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, এস.এস.সির উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান শান্তিপ্রসাদ সিনহা সহ বাকি সদস্যদের সিবিআই দপ্তরে হাজিরার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সকলেই ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন। বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চ সিবিআই তদন্ত সহ গোটা প্রক্রিয়ায় অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করে।

সেইসঙ্গে বাগ কমিটিকে গ্রুপ-সি নিয়োগ সংক্রান্ত রিপোর্ট চার সপ্তাহের মধ্যে পেশ করতে বলে। শুক্রবার ছিল মামলার শুনানি। রিপোর্টে বলা হয়েছে,প্যানেলের মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পর যে ৩৮১ জনকে ভুয়ো নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল,তাঁদের মধ্যে ২২২ জন লিখিত পরীক্ষায় বসেননি এবং কোনও পার্সোনালিটি টেস্টেও অংশ নেননি। এস.এস.সি অফিস থেকে সই স্ক্যান করে তাঁদের সুপারিশপত্র দেওয়া হয়েছিল।এছাড়াও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অনুমোদনের ভিত্তিতে গঠিত ওই উপদেষ্টা কমিটিকেও বেআইনি বলে জানিয়েছে কমিটি। যদিও মামলার শুনানিতে রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, "সিঙ্গল বেঞ্চ সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে ঠিকই,কিন্তু এক্ষেত্রে রাজ্য পুলিস বিভাগীয় বা ফৌজদারি তদন্ত করতে সক্ষম।" মামলাকারীর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যর পাল্টা দাবি "দেখেই বোঝা যাচ্ছে বড়সড় দুর্নীতি হয়েছে। ফলে সি.বি.আই বা অন্য কোনও নিরপেক্ষ সংস্থার তদন্তই এক্ষেত্রে বাঞ্ছনীয়।" শুক্রবার সন্ধেয় এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে পার্থবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "ওটা নিয়ে আমি কোনও কথা বলছি না। কারণ আমি তো ওই দফতরের মন্ত্রী নই।" যে দফতরের মন্ত্রী সে উত্তর দেবে'। পার্থবাবুকে বলা হয়,যে হেতু ওই সময়ে আপনি শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন, তাই আপনার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইছি। জবাবে বর্তমান শিল্পমন্ত্রী বলেন,"তাতে কী হয়েছে? পাঠান মোগলের টাইমেও তো অনেক ঘটনা ঘটেছে"।
পার্থবাবু অবশ্য এও বলেছেন, 'আমি বাগ কমিটির রিপোর্ট দেখেছি। তবে সম্পূর্ণটা দেখিনি, যখন দেখব তখন বলব। তা ছাড়া আমি এখন শিক্ষা দফতরে নেই,শিক্ষা দফতর কী ভাবে জিনিসটাকে দেখছে, না জেনে দুম করে বলাটা অন্যায় হবে"।

Journalist Name : SRIJITA MALLICK

Related News