তিনদশকের রোজনামচা, মেয়েকে বড় করতে পুুরুষ পরিচয়েই বাঁচছেন পেচিয়াম্মাল

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

সোরকালিঙ্গাপুরমের পেচিয়াম্মালের দাম্পত্য জীবনের স্থায়িত্ব মাত্র ১৫ দিনের ৷ ২০ বছর বয়সে তাঁর বিয়ে হয় তুতিকোরিনের মুদিভাইথানেন্থাল শিভা পিলাইয়ের সঙ্গে৷ কয়েকদিনের মাথাতেই স্বামী মারা যান ৷ তারপর থেকেই মেয়েকে নিয়ে একার সংসার ৷ যদিও এখন তিনি আর ‘পেচিয়াম্মাল’ নন, তাঁর নতুন পরিচয় ‘মুথু’। স্বামী না থাকায় বিভিন্নভাবে হেনস্থার শিকার হতে হয়েছিল পেচিয়াম্মালকে ৷ যৌন ঈঙ্গিতও এসেছে বহুবার ৷ সেসব থেকে বাঁচতে নিজেকেই বদলে ফেলেছেন তিনি ৷ তুতিকোরিনে ফিরে এসে আর মহিলাদের মতো সাজপোশাক নয়, পেচিয়াম্মাল থুড়ি মুথু এখন পরেন ভেস্টি শার্ট ৷ ছোট করে চুল কেটে তিনি এখন পুরোদস্তুর ‘মর্দ’ ৷ গত ৩০ বছর ধরে এভাবেই দিন গুজরান করছেন তিনি । তাঁকে দেখে মুথুর পেছনে লুকিয়ে থাকা পেরিয়াম্মালকে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর ৷ ফলে যৌন ঈঙ্গিত থেকে কুমন্তব্য, ইতি পড়েছে সমস্ত কিছুতেই ৷ বরং আশেপাশের লোকেরা তাঁকে ডাকে 'আন্নাছি' বলে ৷ স্থানীয় ভাষায় যার অর্থ বড় ভাই ৷ চা-পরোটার দোকানে কাজ করা মুথুকে তাঁর গ্রামে বলা হয় 'মুথু মাস্টার' ৷৫৭ বছরের মুথু মেয়ের বিয়েও দিয়েছেন ।তিনি বলেন, ‘‘মেয়ের বিয়ের জন্য ১০০দিনের কাজে চিত্রশিল্পী হিসেবে কাজ করছি । আমার বিবাহিত জীবন ১৫দিনের মধ্যে শেষ হয়ে গিয়েছিল ৷ তারপর মেয়ের জন্য, আত্মসম্মানের জন্য চেহারা পরিবর্তন করেছি । কিন্ত তা নিয়ে কখনই অনুশোচনা করিনি । স্বামীর মৃত্যুর শংসাপত্র পাইনি ৷ আধার কার্ডে নাম মুথু থাকায় বিধবা ভাতা বা বার্ধক্যজনিত ভাতা, কিছুই পাই না । এগুলো পেলে আমার খুব সুবিধা হবে ৷’’পেচিয়াম্মালের সংগ্রামে গর্বিত মেয়ে সানমুগা সুনথারি ৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি যখন ছোট ছিলাম তখনই বাবা মারা যান ৷ আমার কাছে মা-ই আমার বাবা ৷ মানুষ হিসেবেই মা নিজেকে সম্পূর্ণ বদলেছেন ৷ সমাজের মোকাবিলা করার জন্য মা যা করেছে, তা প্রশংসার যোগ্য ৷ মা'র পেনশনের একটা ব্যবস্থা হলে খুব সুবিধা হবে ৷’’

Journalist Name : SRIJITA MALLICK

Related News