ই-কমার্সের প্রযুক্তি কি পাল্টে দিচ্ছে ক্ষুদ্র ব্যবসার ধরন?

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

বর্তমান সময়ে আমরা এমন এক জগতে বাস করছি যেখানে ব্যবসা করার জন্য বাজারের মাঝে বা বড় শপিং কমপ্লেক্সে দোকানের প্রয়োজন পড়ে না। ই-কমার্স এর মাধ্যমে কেনাকাটা করা দোকানের তালিকা এত বেশি যে তা প্রায় অন্তহীন। ই-কমার্স এক নতুন ধারণা এবং ক্রমাগত বর্ধনশীল কৌশল উন্নয়নশীল আপডেট আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের ক্ষমতা সাধারণ মানুষের ক্ষমতাকেও ছাড়িয়ে যেতে সক্ষম। আর এখানেই প্রযুক্তি ব্যবসা কে এগিয়ে নিয়ে যেতে পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।


মূলত প্রযুক্তি ই-কমার্সের মেরুদন্ড। ইন্টারনেটের ব্যবহার বৃদ্ধি, স্মার্টফোনের ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং বাজার সচেতনতা বৃদ্ধি ভারতে ই-কমার্সের বৃদ্ধিকে আরও ত্বরান্বিত করেছে। গ্রাহকের পছন্দ-অপছন্দ জেনে সেই বিষয়গুলিকে সামনে আনতে সক্ষম এ আই যা ই-কমার্স স্টোরের সাফল্যের জন্য অপরিহার্য অঙ্গ হয়ে উঠেছে এবং এই ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ই-কমার্সের প্রতি ঝুঁকেছেন। গ্রাহকেরা এক ছাদের তলায় সবকিছু পাচ্ছেন আবার গ্রাহক টানতে আকর্ষণীয় মূল্য ছাড়, নতুন কালেকশন, কিছু কেনার আগে অন্য ব্র্যান্ডের সাথে তুলনার সুযোগ দেয় ই-কমার্স। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছে যা লাভজনক। আবার নিজের ব্যবসার বিজ্ঞাপন দেওয়া যতটা কঠিন ছিল এখন তা আর নেই। বিজ্ঞাপন তথা মার্কেটিং এর নতুন রূপ ফেসবুক অ্যাড, ইমেইল মার্কেটিং, ব্র্যান্ড প্রমোশন ইত্যাদি ব্যবসায়ীদের কাছে সহজলভ্য হয়ে উঠেছে।


উদাহরণস্বরূপ, ইন্টারনেট দ্রুত একটি জীবন্ত সত্তায় পরিণত হচ্ছে, লোকেদের দিকনির্দেশ দিচ্ছে, সরাসরি খুচরা জায়গায় ঝাঁপিয়ে পড়ার আগে অনলাইনে দোকানের তুলনা করছে, গ্রাহকদের পণ্যটি পরিষ্কারভাবে বুঝতে সাহায্য করার জন্য উচ্চ-মানের ভিজ্যুয়ালে জুম করার মতো বিকল্পগুলি প্রস্তাব করছে বাই বোতামে ক্লিক করার আগে। এটি একক জায়গায় সবকিছু আনতে সাহায্য করে। কোটি কোটি আন্তঃসংযুক্ত নেটওয়ার্ক, নির্ভরযোগ্য মোবাইল ইন্টারনেটের অভিজ্ঞতা, স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেটের মাধ্যমে ঘটছে সামাজিক বোঝাপড়া, মোবাইল নেটওয়ার্কে 4G সংযোগ চালু হওয়া, এই সমস্ত কারণগুলি ই-কমার্সের একটি বর্ধিত সংস্করণ “মোবাইল কমার্স”-এর জন্ম দেওয়ার জন্য দায়ী। সর্বব্যাপী তাড়াহুড়ো এবং দ্রুত গতির জীবনধারা মানুষকে একটি স্মার্ট উপায়ে সময় এবং শক্তিকে ভাগ করেছে যেমন মুদিখানার তালিকা তৈরি করে শুধু কথায় সবকিছু লিখে বা এমনকি তাদের জন্য অনলাইন অর্ডার দেওয়ার, ক্রেতার পছন্দের সাথে মানানসই সম্পূরক পণ্যের সুপারিশ করা এবং অন্যান্য সম্ভাবনার সিরিজ। সবকিছুই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা AI এর সাথে যুক্ত।  অদূর ভবিষ্যতে মানব এজেন্টদের কোনও হস্তক্ষেপ ছাড়াই এআই প্রযুক্তি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে। ই-কমার্সে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির কারণে, এ আই টুলের মাধ্যমে বিক্রেতারা তাদের অনলাইন গ্রাহকদের ২৪×৭ সহায়তা প্রদানের জন্য ক্রমশ চ্যাটবট, স্মার্ট লজিস্টিক, সুপারিশ ইঞ্জিন এবং ডিজিটাল সহকারীর দিকে ঝুঁকছে। ই-কমার্সে এ আই-এর মৌলিক ভূমিকা বুদ্ধিমান পণ্যের সুপারিশের উপর নির্ভর করে যা পূর্ববর্তী কেনাকাটা, অনুসন্ধান করা পণ্য এবং অনলাইন ব্রাউজিং এর কি ওয়ার্ড ব্যবহার করে গ্রাহক পছন্দকে প্রভাবিত করছে।


তবে ই-কমার্সে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলার আগে অনেক ব্যবসায়ীদের প্রশ্ন থাকে আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে। ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশে মোবাইল মানি এবং অন্যান্য আর্থিক পরিষেবা এর মাধ্যমে ইলেকট্রনিক পেমেন্ট সার্ভিস এর উদ্যোগ আন্তর্জাতিক বাজারের অনুমতি দেওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ইপিএস হল আর্থিক লেনদেনের এক দরজা বিশেষ যা ছোট ও বৃহৎ ব্যবসায়ীদের এক বা একাধিক প্রকার পরিমাণ গ্রহণ করতে সাহায্য করে। গুগোল পে, অ্যাপল পে, পেপাল এবং ভারতে ইউপিআই এর মত যোগাযোগহীন লেনদেনের সুবিধা শুরু হতে তা বাণিজ্য উদ্যোক্তাদের জন্য লাভজনক হয়ে উঠছে ধীরে ধীরে।


ডিজিটাল কাস্টমারদের সর্বদা পরিবর্তনশীল বাজার বা আকর্ষণীয় ছাড়ের ইচ্ছে থাকে। তাই ই-কমার্স সাইটগুলো পরিবর্তিত হতে থাকে। স্থানীয় বাজারে তা সম্ভব না কিন্তু ই-কমার্সের সম্ভব। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা তাই গুরুত্ব দিচ্ছেন মার্কেটিং-এর উপর। নতুন পণ্যের বিবরণ হে নতুনত্ব তা আনছেন বা বলা ভাল ব্যবসাদাররা আরো ক্রিয়েটিভ হচ্ছেন। আর তাদের সাহায্য করছে ইন্টারনেটের এক বৃহৎ ডেটাবেস। প্রযুক্তির মাধ্যমে ওই ডেটাবেসের বিভিন্ন কাস্টমারদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসের বিজ্ঞাপন, ফলে লাভবান হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা তাই এখন বেশিরভাগ মানুষ প্রযুক্তি জ্ঞান লাভের দিকে মনোযোগ দিচ্ছেন। প্রযুক্তি কখনোই বিকশিত হওয়া বন্ধ করবে না তাই আমাদের চারপাশে সবাই যখন পর্যাপ্ত প্রযুক্তি জ্ঞানে সমৃদ্ধ হবে তখনই বিশ্ব প্রযুক্তিগত বিপ্লবের দিকে আরো এক পা এগিয়ে যাবে।

Journalist Name : Satarupa Karmakar

Related News