শিশুদের শরীর ভালো রাখতে প্রয়োজন ব্যায়াম এবং খেলাধুলা

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

"জগৎ পারাবারের তীরে  ছেলেরা করে খেলা"- কবিগুরুর কবিতার এই লাইনটা যতটা সত্যি ততোটাই প্রাসঙ্গিক; শৈশব মানেই তো খেলাধুলো,প্রানচ্ছোলতা। আর তার সাথে দরকার সুষম যোগাভ্যাস বা ব্যায়ামের। যোগব্যায়াম বলতে তো ভারিক্কি সব আসন অনুশীলনের কথাই মাথায় আসে; শিশুরা এর বুঝবেই বা কতটুকু, আর অনুশীলন করতে পারবেই বা কতটা?। এমন ভাবার সুযোগ নেই একেবারেই। শেখার সঠিক পরিবেশ আর সঠিক দিকনির্দেশনা পেলে শিশুরাও পারে যোগব্যায়ামের অনুশীলন করতে।
হাসি-মজা-দুষ্টুমির ছলে শিশু যেকোনো কিছুই শিখতে পারে অনায়াসে। পড়তে হবে বলে পড়া, আর মনের ক্ষুধায় পড়া—এ দুয়ের মধ্যে ফারাক অনেকটা। লেখাপড়ার মতো একই কথা খাটে যেকোনো ধরনের দক্ষতা অর্জনের ক্ষেত্রে। যোগব্যায়ামও এর ব্যতিক্রম নয়। শারীরিক সুস্থতার জন্য ব্যায়াম দরকার। এমনকি শিশুদের জন্যও। আজকের দিনে শিশুদের জন্য বাইরে ছোটাছুটি, দৌড়ঝাঁপ করার সুযোগ কম। যোগব্যায়ামে হৃৎপিণ্ড সুস্থ থাকে। পেশি টানটান করার অনুশীলন হয়। মানসিক চাপ কমে। শিশুরা নানা ধরনের চাপে থাকতে পারে, যা তারা অনেক সময়ই প্রকাশ করতে পারে না। পরীক্ষার চাপ, চারপাশের অস্থিরতা, পারিবারিক অশান্তি, এমনকি নিজের শারীরিক সমস্যার কারণও হতে পারে তাঁদের মানসিক স্বাস্থের ক্ষেত্রে ভয়ঙ্কর। ক্ষেত্রবিশেষে শিশু আগ্রাসী হয়ে ওঠে। যোগব্যায়ামে ধ্যানের ধারণা দেওয়া হয়। ফলে শিশু চিন্তাকে একদিকে কেন্দ্রীভূত করতে শেখে, শিশুর মনোযোগ ও স্মৃতিশক্তি বাড়ে। মস্তিষ্ক স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারে।প্রতিটি শিশুই আলাদা, প্রত্যেকেই নিজ গুণে অতুলনীয়। ও এটাতে প্রথম হলো, তুমি পারলে না—এ ধরনের কোনো তুলনামূলক প্রতিযোগিতা নেই যোগব্যায়ামে। এতে শিশু নিজেকে নিজের মতো করেই গ্রহণ করতে শেখে। অসুস্থ প্রতিযোগিতার মানসিকতা দূর হয়। যোগব্যায়াম করলে শিশু মানসিকভাবে স্থির হয়, হতাশা দূর হয়।

৫ টি সহজ ও ঘরোয়া ব্যায়াম
হুলা হোপ
হুলা হোপ সাধারণ একটা খেলার নাম। কোমরে একটা চাকতি নিয়ে তা ঘোরানোই হুলা হোপ খেলা। ১৯৫০ সালের পর ছাত্রদের শিক্ষা এই খেলা গঠন করা হয়েছে। সাধারণত কয়েকবার খেলার পর এই খেলায় শিশুরা বেশ মজা পেতে শুরু করে। খেলা স্পট ব্যায়াম হিসাবে সক্রিয় এই খেলা। এই চাকতি ঘোরানো খেলা প্রতি ১০ মিনিটে ১০০ ক্যালোরি পোড়ানো সম্ভব। আপনার সন্তানের সাথে আপনিও কিন্তু অন্যত্র হুলা হোপ শব্দটি দেখতে পারেন। ভালো কাজ।

দড়ি লাফ(skipping)
শৈশবে দড়ি লাফ ব্যবস্থানি এমন ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে। আপনিও মানছেন। কিন্তু আপনি কি জানেন, শুধুমাত্র আধাঘন্টা দড়ি লাফ রিপোর্ট ৫০০ ক্যালোরি পর্যন্ত পোড়নো সম্ভব! এর সাথে যোগাযোগ সহনশীলতা, ভার্সাম্য, অগ্রগতি আছে। হৃৎপিন্ড আর ফুসফুসে সক্ষমতাও পাওয়ার দড়ি লাফ। বাজার থেকে দড়ি লাফর খেলার জন্য সুন্দর স্কিপিং ইউরোপের উন্নয়ন দিতে পারেন। বানাতে তৈরিও। পড়া একই পড়ুন খেলা। আপনারও কিছু ক্যালোরি পুড়ে গেছে।

দৌড়নো
৭ বছরের নাতি থেকে শুরু করে ৭০ বছর দাদু; সবার জন্য রাস্তা এক ভালো থাকার জন্য জাদু। এমন এক ব্যায়াম যা ছোট থেকে সবার বড় ফিট থাকার জন্য দ্রুত। স্ট্যামিনা বাড়ানোর জন্য দৌড়ের কোন বিকল্প নেই সাথে আর সঙ্গে আছে পেশী গঠন।  সকাল সকাল পার্ক বা লেক দৌড়ানোর জন্য আদর্শ স্থান।

সাইক্লিং ও সাঁতার
সাইক্লিং ও সাঁতার এমন ব্যায়াম যার মাধ্যমে প্রতিটা অংশের ব্যায়াম হওয়া যায়। একই সাথে হৃৎপিন্ডের কার্যকারিতা বাড়ানো, ফুসফুসকে ঠিক রাখা ও সহনশক্তি বাড়াতে এই দুই ব্যায়াম আদর্শ।সাইক্লিং-এর জন্য শিশুকে পার্কে নিয়ে যেতে পারেন;সুইমিংপুল বা ছোট জলাশয়ে শেখাতে পারেন সাঁতারও।

পুশ আপ
 পুশ আপ আমাদের ভাসকুলার সিস্টেম সিস্টেম উন্নত করার জন্য প্রয়োজন। পাতা পেশী গড়ন ও ফল করতে পুশ আপ বেশ কার্যকর।  পুশ আপ মানুষের আত্মবিশ্বাস অনেক গুণে বাড়িয়ে  দেয়। এই ব্যায়াম আপনার সন্তানের সন্তানতা, শারীরিক গড়ন ও স্ট্যামিনা বাড়াতে সাহায্য করবে।


আগেকার সময়ে শিশুদের শৈশবের শুরুটা গড়ে উঠত এলাকার ও আশেপাশের পাড়ার সঙ্গীদের সাথে।
বিকেল হলেই যেন এলাকা মেতে উঠত হৈ-হুল্লোড়ে। কিন্তু বর্তমান সময়ে হারিয়ে গেছে সেই আনন্দময় শৈশব, সাথে হারিয়ে গেছে খেলাধুলাও। প্রযুক্তি নির্ভর যুগে এসেছে ডিজিটাল খেলাধুলা। তবে তা আর আগের মত শারীরিক সুস্থতার জন্য কার্যকরী নয়।
পড়ালেখা কিংবা কাজের চাপে খেলার সুযোগ পায়না এখনকার শিশুরা। যতটুকু অবসর সময় পাওয়া হয়, তা সবাই আলস্যে মোবাইল ব্যবহারের মধ্যে কাটাতে পছন্দ করে। খুব কম সংখ্যকই খেলাধুলার পাশাপাশি বই পড়তে বা সৃজনশীল কাজ করতে পছন্দ করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুদের খেলাধুলা করা বাধ্যতামূলক। খেলাধুলার ভেতরে যে আনন্দ থাকে তা শিশুমনের পরিপূর্ণ বিকাশে সহায়ক। খেলার জন্য বড় মাঠের প্রয়োজন নেই। ঘরের সামনে অল্প জায়গা হলেও খেলা যায় বা কিছু শারীরিক কার্যক্রম যেমন- হাঁটাহাঁটি, দৌড়াদৌড়ি, দড়িলাফ দেওয়া যায়। এসকল শরীরের ক্লান্তি, একঘেয়েমি, বিষণ্ণতা, মানসিক চাপ দূরে সরিয়ে মনকে শান্ত রাখতে সাহায্য করে।

খেলাধুলা শিশুদের জন্য কতটা প্রয়োজন?
১. খেলাধুলায় উপস্থিত বুদ্ধি বৃদ্ধি পায়।

২. শারীরিক বৃদ্ধি স্বাভাবিক রাখতে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

৩. পরিকল্পনা, দূরদর্শিতা ও পড়াশোনার প্রতি শিশুর আগ্রহ জাগিয়ে তুলতে কয়েকজন মিলে একসাথে খেলার পরিবেশ অনেকখানি সাহায্য করে। পাশাপাশি সৃজনশীলতা ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

৪. ক্রিকেট, ফুটবলের মতো ছুটাছুটি করার সুযোগ রয়েছে এমন খেলার মাধ্যমে শারীরিক কাঠামো মজবুত হয়। নানা ধরনের নৈপুণ্য, দক্ষতা আয়ত্তে আসে।

৫. খেলাধুলার মাধ্যমে শিশুরা পড়াশুনা, আচার-আচরন, বুধিমত্তাতে এগিয়ে থাকে।

৬. সকলের সাথে মিলেমিশে খেললে সামাজিক আচরণ, সম্পর্ক দৃঢ় হয়।

৭. কল্পনাশক্তি, রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা, চিন্তাশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।   

Journalist Name : SRIJITA MALLICK

Related News