গেমিং অ্যাপ বানিয়ে রাতারাতি কোটিপতি 'মধ্যবিত্ত' ব্যবসায়ী, কে এই আমির খান?

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

এলাকায় ছাপোষা মধ্যবিত্ত হিসেবেই বরাবর পরিচিত ছিলেন নাসির খান। গার্ডেনরিচের শাহি আস্তাবল গলিতে আর পাঁচটা সাধারণ ব্যবসাদারের মতোই বসবাস তাঁর। তিন ছেলের মধ্যে সবচেয়ে ছোট আমির খান। বাকি দুই ছেলের মধ্যে একজন বিদেশে চাকরিরত, অপরজন চ্যাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। সূত্রের খবর, একটি কল সেন্টারে কাজ করতে আমির। সেখান থেকে আচমকা এই উত্থান কী ভাবে? নেপথ্যে কি শুধুই গেমিং অ্যাপ? গর্ডেনরিচের ঘটনায় ED স্ক্যানারে ব্যবসায়ী আমির খানের লাইফস্টাইল। শনিবার সকাল সাড়ে আটটা। গার্ডেনরিচের শাহি আস্তবল গলিতে পরিবহণ ব্যবসায়ী নাসির খানের বাড়িতে রেড করে ED। তল্লাশি অভিযানে দোতলার একটি ঘরে খাটের তলা থেকে মেলে খাজানা! সকাল ১০টা থেকে শুরু হয় টাকা গোনার কাজ। আনা হয় আটটি টাকা গোনার মেশিন। ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টায় কাউন্টিংয়ের পর জানা যায়, আমিরের বাড়ি থেকে পাওয়া গিয়েছে মোট ১৭ কোটি ৩২ লাখ টাকা। যা দেখে চক্ষু চড়কগাছ সকলেরই। কী ভাবে একজন মধ্যবিত্ত ব্যবসায়ীর বাড়িতে এত নগদ টাকা এল? প্রশ্ন দানা বেঁধেছে সকলের মনেই। তাজ্জব প্রতিবেশিরাও। মধ্যবিত্ত ব্যবসায়ী পরিবারের বাড়িতে লুকনো ছিল এত কোটি টাকা! খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই অবাক হয়ে গিয়েছেন আমির খানের প্রতিবেশিরা। অনেকে আবার জানাচ্ছেন, লকডাউনের সময় থেকেই আমিরের চাল বদলে গিয়েছিল। হাতে টাকা এসেছিল, তা সহজেই অনুমান করা যাচ্ছিল। প্রতিবেশি সূত্রে খবর, নিউটাউনে একটি অফিস রয়েছে আমিরের। সেখান থেকেই এই গেমিং অ্যাপের যাবতীয় কাজকর্ম চলত। নিতান্তই সাদামাটা বাড়ির এই ছেলেটির মধ্যে পরিবর্তন লক্ষ্য করেছিল সকলেই। প্রতিবেশি সূত্রে খবর, সম্প্রতি একাধিক ফরেন ট্রিপ করেছিল আমির। নিউটাউনে রয়েছে তাঁর ডুপ্লে ফ্ল্যাট। কিনেছিল বিলাসবহুল গাড়িও। যদিও গর্ডেনরিচের শাহি আস্তবলের সরু গলিতে সেই গাড়ি ঢোকানোর কোনও পরিসরই ছিল না। অধিকাংশ সময়ই নিউটাউনের ফ্ল্যাট এবং অফিসে ফুড ডেলিভারি অ্যাপের মাধ্যমে খাবার আনাত আমির। ২০১৫ সাল থেকে এই গেমিং অ্যাপের ব্যবসা শুরু করলেও তা ফুলে ফেঁপে ওঠে ২০২০ সালে। যা আদতে ছিল মানুষকে প্রতারণা এক মস্ত ফাঁদ। টাকা জেতানোর লোভ দেখিয়ে বড় অঙ্কের টাকা ঢালতে বলা হত অ্যাপ ব্যবহারকারীদের। মোটা টাকা বিনিয়োগের পরই বিপত্তি। গায়েব হয়ে যেত সমস্ত ইনভেস্টমেন্ট। আর এই গোটা প্রক্রিয়ার জাল বিস্তার হয়েছিল আমিরের তৈরি মোবাইল গেমিং অ্যাপ ই-নাগেটসের মাধ্যমে। এমনটাই অভিযোগ
 উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। যা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে ED। এই সমস্ত তথ্যকে একসূত্রে বাঁধতে চাইছে ED। তবে আপাতত আমির খানের কোনও হদিশ মেলেনি। তাঁর ফোনও সুইচড অফ বলে সূত্রের খবর। তাঁর বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া এই খাজার নেপথ্য কাহিনি খুঁজে বের করতে মরিয়া কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

Journalist Name : Sumu Sarkar

Related News