লোকে বলে সময় হলেই নাকি সব জানা যায়। তো সময়কি তাহলে হয়েই গেল ? সেইদিক দিয়ে দেখতে গেলে যুদ্ধের দামামা তো বেজেই গেছে এবার শুধু সেনা সৈন্য নিয়ে রাজাদের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হবে। কে পাবে এই রাজ্য, রাজসিংহাসন, আর কার মাথায় উঠবে রাজমুকুট ? সেইসব প্রশ্ন-উত্তরের হাত ধরেই কলকাতা পৌর-নির্বাচনের বেলেঘাটা এলাকার ৩৫ নং ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী গিরিশ শুক্লার মুখোমুখি প্রভাতী সংবাদ –
সবেমাত্র নির্বাচনের নমিনেশন জমা দিয়ে নিজের মন্ডল ওয়ার্ডে ফিরেছেন। কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ছেড়ে জানালেন তিনি খুবই খুশি হয়েছেন পার্টি ওনাকে অনেক বড় একটা কাজের দায়িত্ব দিয়েছে, মানুষের সেবা করার থেকে বড় দায়িত্ব আর কিছুই থাকতে পারে না। জানালেন ২০১৩ সালে ওনার এই ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগদান। তারপর অনেক বাধা বিঘ্ন পেরিয়ে ২০১৬ যে মন্ডল ওয়ার্ডের সেক্রেটারি হন। তারপর ২০১৮ তে নিজের ভালো কাজের জন্য পার্টি থেকেই ওনাকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। নিজের কাজের গুণমানের ক্ষেত্রে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন গিরিশ শুক্লা। তার এই জনপ্রিয়তাই ২০২০ তে তাকে মন্ডল ওয়ার্ডের সভাপতির স্থান দেয়।
২০১৮ তে সাধায়ণ সম্পাদক হওয়ার পর থেকে দলের জন্য এবং জনগণের জন্য অনেক কাজ করেছেন। তার এই কাজ বিজেপিকে এক নতুন শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছিল। তিনি শাসকদলের ওপর অভিযোগের তির বাগিয়ে বলেন, “২০১৮ তে আমার জন্য যখন বিজেপি দলের নাম উজ্জ্বল হচ্ছে, দলীয় কর্মীরা আস্তে আস্তে বাড়ছে, ঠিক সেই সময় আমার ওপর আক্রমণ হয়। ২০১৮,২০১৯, পর পর ২বছর আমার বাড়ি-ঘর ভেঙে ফেলা হয়, ২০২০ তে বিধানসভার ফল ঘোষণার দিন বিধানসভাতে আমার ওপর আক্রমণ হয়, সেইদিনই দুপুরে আমার বাড়িতে হামলা করা হয়, আমার মাকে, আমার স্ত্রীকে, আমার মেয়েকে, এবং আমাকে, মারধর করে বাড়ি থেকে বার করে দেওয়া হয় এবং আবার আমার বাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়। ২০২১ সালে আমরা বিজেপির কয়েকজন কর্মী মিলে এবং মহিলা মোর্চা দলের সাধারণ সম্পাধিকা রিতা দি একটি পার্টি অফিস তৈরি করি, কিন্তু পরে শাসকদলের লোকজন এসে সব ভাঙচুর করে দেয় এবং সেই অফিসে দখল করে নেয়। সেই সময় তারা কোর্টের দ্বারস্থও হয়েছিলেন কিন্তু শাসকদলের রাজ্যে কেউ কোনো ব্যবস্থা নিতে চায় নি। ওই ব্যাপারটা ঠিক জলে থেকে কুমিরের সাথে যুদ্ধ করার মতো হয়ে যেতো। সকলেই পিছু হটেছিলেন সেই সময়।"
তিনি এটাও অভিযোগ করেন যে এই ৩৫ নং ওয়ার্ডের অনেকরকম সমস্যা আছে যেমন জল সবসময় জল ঠিক মতো পাওয়া যায় না, বিদ্যুৎ পরিষেবা ঠিক মতো নেই, রাস্তা-ঘাটে আবর্জনা পরে থাকে, তাতে মানুষজনের অসুবিধা হয়,জন-সেবা হয় না এখানে, এখানে জনগণের আরো বেশি ক্ষতি করে চলেছে শাসকদল। ভোটের সময় মানুষজনকে ঠিক মতো ভোট দিতে দেওয়া হয় না। এই নির্বাচনে ঠিক মতো ভোট হলে বেলেঘাটা এলাকার ৩৫ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী আশুতোষ দাস জিততে পারবেন না।
বিজেপি প্রার্থী গিরিশ শুক্লা জনগণের কাছে বারবার এই আবেদন জানান যে জনগণ যদি তাকে ভরসা করে বিশ্বাস করে একটি সুযোগ দেন, তিনি অবশ্যই তার সৎ ব্যবহার করবেন। শাসকদলের বিরুদ্ধে তিনি প্রতিবাদ করে রুখে দাঁড়াবেন। জন পরিষেবার দিকে বেশি করে নজর দেবেন। এলাকাবাসীকে খুশিতে ভরিয়ে রাখবেন।
নির্বাচনের ফল নিয়ে এই বিজেপি প্রার্থী কতটা আশাবাদী জানতে চাইলে, তিনি বলেন, “আমি শত ভাগ নিশ্চিত ভোটের দিন যদি কোনো হুমকি, গুলি-গালা না চালিয়ে, বোমাবাজি না করে, যদি সাধারণ মানুষকে ঠিক মতো ভোটটা দিতে দেওয়া হয় তাহলে ভারতীয় জনতা পার্টি পুরোপুরি জয়লাভ করবে। কিন্তু শাসকদল নিজেদের আসন ধরে রাখার জন্য ভোটের দিন তান্ডব করে, আর দোষ হয় বিরোধীদলের। আমি এই এলাকায় জন্মেছি, বড় হয়েছি, এখানকার মানুষ কি চায়, তাদের কি প্রয়োজনীয়তা সেটা আমি ভালো করেই জানি, কিন্তু আমাকে কোনো উন্নয়ন করার সুযোগটাই দেওয়া হচ্ছে না। এলাকার মানুষ শাসকদলের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে ভয় পায়। আমি ভোটে জিতলে এলাকার মানুষদের দুর্ভোগের দিন শেষ করবো। আমার যেইটুকু সামর্থ হবে তাই দিয়েই তাদের পাশে দাঁড়াবো, শুধু একটা সুযোগ চাই জনগণের থেকে।”
আজ বিজেপি প্রার্থী গিরিশ শুক্লার বক্তব্য শুনে এটাই বোঝা গেল উনি জনগণের সেবাতে নিজেকে যুক্ত করার জন্য কতটা আশাবাদী। শাসকদলের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য জনগণকে তিনি নিজের পাশে চাইছেন, আশ্বাস দিচ্ছেন ভোটে জিতলে জনপরিষেবা আরো উন্নত করবেন।