এমআই-১৭ হেলিকপ্টারের ব্ল্যাক বক্স মেলার পর থেকেই শুরু তদন্ত

banner

#New Delhi:

বুধবার সকালে ভারতীয় বায়ু সেনার চপারে তামিলনাড়ুর সুলুর সেনা ছাউনি থেকে সস্ত্রীক সিডিএস বিপিন রাওয়াত উড়ে যাচ্ছিলেন ওয়েলিংটন সেনা ছাউনি, সাথে ছিলেন আরও ১২ জন। বেলা ১২টা ৪০ নাগাদ তামিলনাড়ুর কুন্নুরে ভেঙ্গে পরে সিডিএস বিপিন রাওয়াতের কপ্টার এমআই-১৭। মারা যান ভারতের প্রথম চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াত। গতকাল শুক্রবার দিল্লিতে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদাই শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় সস্ত্রীক বিপিন রাওয়াতের। চোখের জলে প্রিয় জেনারেলকে  বিদায় জানাই দেশবাসী। দুর্ঘটনার প্রায় ২২ ঘণ্টা পরে অগ্নিদগ্ধ চপারের ব্ল্যাক বক্স খুঁজে পায় তদন্তকারী দল। যদিও প্রথমে তদন্তের পরিধি ছিল ৩০০ মিটার কিন্তু ব্ল্যাক বক্স না মেলায় পরে তদন্তের পরিধি ১ কিলোমিটার করা হয়, আর ঠিক তখনই মেলে চপারের ব্ল্যাক বক্স।


ঠিক কি কারণে ভেঙ্গে পড়েছিল চপার তা জানার জন্য দরকার নির্ভুল তদন্ত, যা ইতি মধ্যেই শুরু করে দিয়েছে বায়ু সেনার তদন্তকারী দল। বৃহস্পতিবার ব্ল্যাক বক্স পাওয়ার পরেই প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং বিবৃতি দিয়ে জানান, এই তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কমান্ডিং ইন চিফ এয়ার মার্শাল মানবেন্দ্র সিংহের কাঁধে। সুত্র মারফৎ জানা গেছে সুলুর থেকে এমআই-১৭ কপ্টার উড়ে যাওয়ার সময় তার উচ্চতা ছিল ৩ হাজার ফুট। যেহেতু অঞ্চলটি নীলগিরি পাহাড়ের কাছে এবং জঙ্গলে ভর্তি তাই কিছুটা বেশি উচ্চতাই উড়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল পাইলটকে। কোয়ম্বাত্তর বিমান বন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল পাইলটকে বলে তার কপ্টার আরও উচ্চতাই নিয়ে যেতে। কিন্তু উচ্চতাই পৌঁছোবার আগেই ঘটে যায় দুর্ঘটনা। অনেকে মনে প্রশ্ন তাহলে কি পাইলট গ্রাহ্য করেননি এটিসি এর পরামর্শ? নাকি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে উচ্চতাই পৌঁছাবার আগেই ঘটে যায় বিপত্তি? যদিও পুরো বিষয়টি তদন্ত না করে মুখ খুলতে নারাজ বায়ু সেনা। সাধারণত কোন ভিভিআইপি সাওয়ার হওয়ার আগে বিমানের পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়, আর তাতে গ্রিন সিগন্যাল পেলে তবেই বিমানকে নিরাপদ চিহ্নিত করা হয়। এক্ষেত্রেও তার ব্যাতিক্রম ঘটেনি, সিডিএস সাওয়ার হওয়ার আগে প্রায় ২৬ ঘণ্টা আকাশ পথে পাড়ি দিয়েছিল এই বিমান। কপ্টারের দুই পাইলটের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সাথে কথোপকথন এখন তদন্ত সাপেক্ষ, খুব তাড়াতাড়ি সেই সব নথি তুলে দেওয়া হবে তদন্তকারী দলের হাতে। বুধবার বেলা ১২টা ৭ মিনিট পর্যন্ত সুলুর বায়ু সেনা ঘাটির এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছিল সিডিএস বিপিন রাওয়াতের কপ্টারের। কিন্তু তার একমিনিট পর অর্থাৎ ১২টা ৮ মিনিট পর্যন্ত বিমানের যোগ ছিল কোয়ম্বাত্তর এটিসির সাথে। সুত্রের দাবি কিছু দূর আসার পর অন্য রাস্তা ধরে যেতে চান পাইলট যাতে সময় কিছুটা কম লাগে। তাতে উচ্চতা বাড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শও দেই এটিসি। আর পূর্ব নির্ধারিত পথ যেটি আগে থেকেই ঠিক করা ছিল সেটাতে গন্তব্যে পৌছাতে কিছুটা সময় বেশি লাগলেও তা অনেকটা কম ঝুঁকি পূর্ণ বলে দাবি করছেন অনেকেই। ঘুর পথ ছেড়ে সোজা পথে যাওয়ার জন্য নেতুপাল্লাম এটিসির সাথে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছিল পাইলটকে, সেই মতো যোগাযোগও করে তারা তখন কপ্টারের উচ্চতা ৪ হাজার ফুট। তারপরেই আর যোগাযোগ করা যায়নি। হইত ততক্ষণে বিপদ ঘটে গেছে, হইত দুই পাইলট প্রাণপণে চেষ্টা করেছিলেন সেনা সর্বাধিনায়ককে বাঁচানোর, কিন্তু পারেনি তারা শেষ পর্যন্ত মাটিতে আছড়ে পরে বায়ু সেনার কপ্টার।

.

Journalist Name : Sabyasachi Chatterjee

Related News