শীতকাল মানেই পিকনিক। শীতের রোদ গায়ে মেখে পিকনিক করতে পছন্দ করেননা এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া মুশকিল। শীতকালে কম বেশি সকলেই পিকনিক করেই থাকেন। শীত কখনো বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি বাঙালির উত্তেজনার কাছে। ভ্রমণ পিপাষু বাঙালি বনভোজনের সাথে সাথেই সেরে নিতে পারেন ছোট্ট একটা সফর ও। কলকাতার আশেপাশেই রয়েছে এমন একাধিক জায়গা, জেনে নিন সেরকমই কিছু জায়গার সন্ধান
বাবুর হাট
যত দিন যাচ্ছে কলকাতার খুব কাছে অবস্থিত বাবুর হাটের জনপ্রিয়তা ততই বাড়ছে। কারণটা আর কিছুই নয়, ইট, কাঠ, পাথরের শহরের থেকে দূরে দু দণ্ড শান্তির জন্য গ্রাম্য পরিবেশে ঘণ্টা কয়েক কাটানোর আদর্শ জায়গা এই বাবুর হাট। উত্তর ২৪ পরগনার এই পিকনিক স্পটটির দূরত্ব কলকাতা থেকে ৪৮ কিলোমিটার। খুব বেশ হলে দুই ঘণ্টা লাগবে সেখানে পৌঁছোতে। সবুজ ধানের খেত, পুকুর, গাছপালার মাঝে মন শান্ত হয়ে উঠবে। যে কোনও সাহায্যের গ্রামের লোকেরা সদা প্রস্তুত।স্থানীয় মানুষদের আন্তরিক ব্যবহারও আপানাকে মুগ্ধ করবে।
গাদিয়াড়া
হাওড়া জেলার অন্যতম জনপ্রিয় পিকনিক স্পট৷ কলকাতা থেকে দূরত্ব প্রায় ৮৫ কিমি৷ ধর্মতলা থেকে বাসে মাত্র দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা৷ সব থেকে বড় কথা, হুগলি নদীর তীরে বসে পিকনিক করার সুযোগ৷ রাজ্য সরকারের পর্যটন উন্নয়ন নিগমের রূপনারায়ণ ট্যুরিস্ট লজ রয়েছে থাকার জন্য৷
বাওয়ালি
পরিচালক বাজ চক্রবর্তী এবং অভিনেত্রী শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়ের ডেস্টিনেশন ম্যারেজের পর থেকে বাোয়ালি রাজবাড়ির অনেকের কাছের পরিচিতি পেয়েছে। এখন এটি বেশ জনপ্রিয় স্থান। দক্ষিণ ২৪ পরগনার নোদাখালিতে অবস্থিত এই রাজবাড়ির কলকাতা থেকে এর দূরত্ব মাত্র ৩৫ কিলোমিটার। রাজবাড়ির ভিতরে পিকনিক বা সময় কাটানোর বিভিন্ন প্যাকেজ আছে। এমনকি চাইলে সেখানে এক দুই রাত্রি থাকতেও পারেন। সমস্ত রকম ব্যবস্থাই আছে সেখানে। রাজবাড়ির অফিসে যোগাযোগ করলে তাঁরাই বিভিন্ন প্যাকেজ সম্পর্কে বলে দেবে। আয়োজনও তাঁরা করে দেবেন। সঙ্গীদের নিয়ে আপনি শুধু রাজার হালে আনন্দ করে যাবেন। উইকেন্ড কাটানোর জন্য এটি একটি সুন্দর স্থান। নিরিবিলিতে ভালোই লাগবে। তবে রাজবাড়ির ভিতরে কিছু নিয়ম রয়েছে। সেগুলি মেনে চলতে হবে। সেখানকার কর্মীরাই সে সম্পর্কে আপনাদের জানিয়ে দেবেন। আর হ্যাঁ, এখানকার খাবারের স্বাদ কিন্তু অসাধারণ। আমিষ নিরামিষ যাই খান না তার আয়োজন দেখেই মন ভরে যাবে।
মায়াপুর
জলঙ্গি আর গঙ্গার মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত মায়াপুর ইসকনের মন্দিরের জন্য বিখ্যাত৷ অসাধারণ সুন্দর এই মন্দিরটি দেখার সঙ্গে সঙ্গে পিকনিকের সুযোগ হাতছাড়া করা ঠিক হবে না৷ নদীর তীরে শীতকালে পিকনিক এক অপূর্ব অভিজ্ঞতা৷ বাড়ি ভাড়ার সুবিধা আছে, খরচ খুবই কম৷কলকাতা থেকে সোজা বাস যায় মায়াপুর৷ আবার কৃষ্ণনগর থেকে অটোয় মায়াপুর ঘাটে এসে নৌকায় নদী পার হলেই মায়াপুর৷
টাকি
ইছামতি নদীর ধারে অবস্থিত ছোট্টো শহর টাকি। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ছিমছাম শহর। আর বাঙালির প্রিয় পিকনিক স্পট। শরতে যান বা শীতে, টাকি সবসময়ই সুন্দর আর মনোরম। কলকাতা থেকে মাত্র ৬৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত টাকির ইছামতি নদীর ওপারেই রয়েছে বাংলাদেশ। নৌকা করে প্রতিবেশী দেশে খানিকটা কাছাকাছি ঘুরে আসতেই পারেন। কয়েকজন প্রতিবেশী রাষ্ট্রের নাগরিকের সঙ্গেও দেখা বা কথা হয়ে যেতে পারে। এখানে হোটেল রিসর্ট সবই আছে। প্রয়োজনে উইকেন্ড কাটানো যায় আরামসে।
পানিত্রাস
এই স্পটের সব থেকে বড় বৈশিষ্ট্য- এখানেই রয়েছে কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি৷ কাছেই রূপনারায়ণ৷ নদীর কাছে বিশাল মাঠ বা নদীর তীরে পিকনিক হয়৷ কাছেপিঠে অনেক গেস্ট হাউস রয়েছে৷ আগে থেকে বুক করে নিতে হবে৷ কোলাঘাটের আগের স্টেশন দেউলটি৷ এখান থেকে অটো বা গাড়িতে পানিত্রাস যেতে পারবেন৷ প্রসঙ্গত, কোলাঘাটও একটা ভাল পিকনিক স্পট৷ নদীর ধারে মন খুলে ঘোরা যায়৷